ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলা তরুণী রহস্যজনক নিখোঁজ!


খুলনা অফিস : চারদিন ধরে বাড়ি ছাড়া খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলা তরুণী ও তার মা। তারা কোথায় আছে, বলতে পারছেন না কেউ। পুলিশও তাদের খুঁজে বের করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তবে মানবাধিকারকর্মীরা তরুণী নিখোঁজ হওয়াকে রহস্যজনক বলে মনে করেন। গত রোববার রাতে সোনাডাঙ্গা থানা থেকে মাইক্রোবাসে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন তরুণী। এরপর সোমবার, মঙ্গলবার বুধবার ও বৃহস্পতিবার ডুমুরিয়ার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তরুণী ও তার মাকে পাওয়া যায়নি। পরিবারের সব সদস্যের মোবাইল ফোন বন্ধ। তরুণী ও তার মা নানাবাড়িতে থাকেন। বুধবার সেই বাড়ি গেলে তরুণীর এক মামাতো ভাই বলেন, তারা এখনো ওই দুজনের খোঁজ জানেন না। পুলিশ বলছে, পরিবারের লোকজন তরুণীকে উদ্ধার বা ধর্ষণের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ করতে চান না।
এর আগে শনিবার রাতে ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গাজী এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন ওই নারী। কলেজে পড়ার সময় থেকেই তার প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক কলেজে পড়া অবস্থা থেকেই। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল তার। ঘটনার দিন রাতে চেয়ারম্যান এজাজ শাহপুরের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নিয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। একপর্যায়ে তরুণী চে
য়ারম্যানকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তাকে তাড়িয়ে দেয়। শনিবার রাত সোয়া ১১টায় ওই নারী নিজেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি হন।
রোববার বিকাল সাড়ে ৫টায় তাকে ছাড়পত্র দেয়া হলে হাসপাতালের ওসিসির সামনে থেকে ফিল্মিস্টাইলে তরুণী ও তার মাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা গাজী তৌহিদু্জ্জামান তৌহিদকে। তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের ভাই। এ ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হলে তৎপর হয় পুলিশ। আইনশৃংখলা বাহিনীসহ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তুলে নেয়ার পর ওই তরুণী ও তার মাকে কেশবপুর উপজেলার তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত সাড়ে ১০টায় সেই মাইক্রোবাসে করে থানায় উপস্থিত হন তরুণী ও তার মা। থানায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে কথা বলেন। জিজ্ঞাসাবাদের পর গণমাধ্যমের কাছে দেয়া বক্তব্য অস্বীকার করে বলে ধর্ষণের শিকার হননি। তাকে তার ভাই ও আরেক ব্যক্তি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নিয়ে ভর্তি করেছিলেন।
এ ব্যাপারে মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার জেলা সম্বনয়কারী এডভোকেট মমিনুল ইসলাম বলেন, ধর্ষিতা তরুণী সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের কাছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দিয়েছে। যার অডিও ভিডিও ফুটেজ আছে। এখন প্রভাবশালী মহলের চাপের মুখে অস্বীকার করছে কিনা। ব্যাপারটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত হলে সবকিছুই পরিষ্কার হয়ে যাবে। জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে ওই তরুণীর বাড়িতে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের আত্মীয়স্বজন কোনো অভিযোগ করতে চান না। তরুণী ও তার মাকে উদ্ধার করে দিতে হবে বা তারা নিখোঁজ রয়েছেন সে ব্যাপারেও কেউ কিছু বলছেন না। এ কারণে পুলিশের পক্ষ থেকে আর বেশি খোঁজ নেয়া হয়নি।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news