বীর নিবাস : পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা অথবা তাঁদের পরিবারকে


ইত্তেহাদ অনলাইন ডেস্ক : অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ ও প্রয়াত যুদ্ধবীরদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বীর নিবাস নামের প্রকল্পের আওতায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ৩০ হাজার পাকা বাড়ি নির্মাণ করছে। প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় হচ্ছে বীর নিবাস। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৫৫৭টি বীর নিবাস নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। আরও ১০ হাজার ৭২৯টির কাজ চলছে।অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা বলতে যাঁদের ৮ শতাংশের বেশি জমি নেই এবং সংসারে আয় করার মতো সক্ষম সন্তান নেই, তাঁদের বোঝাবে। সচ্ছলেরা কোনোভাবেই বীর নিবাস পাবেন না।দেশে তালিকাভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৩৩ হাজার। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসে ২০ হাজার টাকা ভাতা পান। দুই ঈদে ১০ হাজার করে ২০ হাজার টাকা উৎসব ভাতা, ৫ হাজার টাকা বিজয় দিবসের ভাতা এবং ২ হাজার টাকা বাংলা নববর্ষ ভাতা পান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বছরে একজন সব মিলিয়ে ভাতা পান ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।সব বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেলেও সরকার বাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছে অসচ্ছলদের। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২১ সালের মার্চে ৪ হাজার ১২৩ কোটি টাকা ব্যয়ের বীর নিবাস প্রকল্প অনুমোদন পায়। মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবরে। কিন্তু সময়মতো কাজ এগোয়নি। তাই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে; কিন্তু মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পযর্ন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। বীর নিবাস পাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পাকা বাড়িগুলো একতলা। দেয়াল ইট ও সিমেন্টের। ছাদ পাকা। প্রতিটি বীর নিবাসের আয়তন ৭৩২ বর্গফুট। একেকটিতে দুটি শয়নকক্ষ, একটি বসার কক্ষ (ড্রইংরুম), একটি খাওয়ার কক্ষ (ডাইনিং), একটি রান্নাঘর, একটি বারান্দা ও দুটি শৌচাগার রয়েছে।প্রতিটি বাড়িতে থাকছে একটি উঠান, একটি নলকূপ এবং গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালনের জন্য আলাদা জায়গা ও ছাউনি। প্রথম ধাপে একেকটি বাড়ি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ১৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। দ্বিতীয় ধাপে ধরা হয়েছে প্রায় ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা।সরকারের একটি কমিটি অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাছাই করে। কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। নিয়ম অনুযায়ী, অসচ্ছল বীরাঙ্গনারা সরাসরি পাকা বাড়ি বরাদ্দ পাবেন। অসচ্ছল যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা অগ্রাধিকার পাবেন। অগ্রাধিকার তালিকায় আরও রয়েছে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার অসচ্ছল স্ত্রী ও সন্তানেরা।
কষ্টের দিন, এখন স্বাচ্ছন্দ্য
যেসব জেলায় বীর নিবাসে বীর মুক্তিযোদ্ধারা থাকতে শুরু করেছেন, তার একটি বরিশাল । বরিশাল জেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে হিজলায় ২২,বাকেরগঞ্জে ১০৪,উজিরপুরে ১২৩,বানারীপাড়ায় ৬০ জন,মেহেন্দিগঞ্জে ৭৫, বরিশাল সদরে ১৭১সহ জেলায় মোট ৫৫৫ বীর নিবাস নির্মাদের অনুমোদন প্রদান করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিজেদের জমিতে পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দিয়েছে সরকার।
কাজ পুরোটা না করলে ‘টাকা নয়
বীর নিবাস করতে সরকার টাকা দিয়েছে। জমি দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। ফলে যাঁর যাঁর বাড়িতেই তাঁরা পাকা ঘর পেয়েছেন। টুকটাক সমস্যা সমাধান হলেই তাঁরা খুশি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেন, ‘বীর নিবাসের কাজে কোনো ধরনের ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের একজন প্রকৌশলী ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন উপসহকারী প্রকৌশলী পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দেবেন। তবেই বিল হবে। কাজ শতভাগ না করলে কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শতভাগ টাকা পাবে না।
জীর্ণশীর্ণ ভাঙা ঘরে বসবাসরত অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার একসময় পাকা ঘরের স্বপ্ন দেখতেও সাহস পেতনা। তাদের মনে স্বপ্নের বীজ অঙ্কুরিত ও প্রস্ফুটিত করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর মহানুভবতায় সরকার জীর্ণশীর্ণ ভাঙা ঘরে বসবাসরত সেই অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ‘বীর নিবাস’ নির্মাণ শুরু করেছে ।
অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ ও প্রয়াত যুদ্ধ বীরদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ‘বীর নিবাস’ নামের এই আবাসন প্রকল্প। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পের আওতায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্য বাড়ি নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি নিবাসের আয়তন ৭৩২ বর্গফুট। একতলার এই বাড়িতে দুটি শয়নকক্ষ বেড রুম) , একটি বসার কক্ষ (ড্রয়িংরুম), একটি খাওয়ার কক্ষ (ডাইনিং),একটি রান্নাঘর (কিচেন) , একটি প্রশস্ত বারান্দা ও দুটি শৌচাগার থাকছে। প্রতিটি বাড়িতে থাকছে একটি উঠান, একটি নলকূপ, গবাদি পশু-হাঁস-মুরগি পালনের জন্য পৃথক শেড। বরিশাল জেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে হিজলায় ২২,বাকেরগঞ্জে ১০৪,উজিরপুরে ১২৩,বানারীপাড়ায় ৬০ জন,মেহেন্দিগঞ্জে ৭৫, বরিশাল সদরে ১৭১সহ জেলায় মোট ৫৫৫ বীর নিবাস নির্মাদের অনুমোদন প্রদান করা হয়।
এদিকে উপকার ভোগী অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের স্বজনরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতায় তারা জীর্ণশীর্ণ ভাঙা ঘর থেকে একটি পাকা ঘরে ওঠার স্বপ্ন দেখছেন । তবে তাদের অপেক্ষার প্রহর যেন দীর্ঘ না হয় । বিশেষ করে অশীতিপর বৃদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ও মৃত মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রীরা জীবদ্দশায় যেন স্বপ্নের পাকা ঘরে বসবাস করে যেতে পারেন সেই দাবি তাদের । তা না হলে আফসোস নিয়ে কবরে যেতে হবে জানিয়ে বলেন, মরণের পরে পাকা ঘর করে দিলে তাতে কি লাভ হবে তাদের ?
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news