উইলস’র সহকারি প্রধান শিক্ষক নাসিরের চলছে ক্লাস রুটিন বাণিজ্য


ঢাকা প্রতিনিধি : সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে মনগড়া নিয়মে ক্লাস রুটিন তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজের সহকারি প্রধান শিক্ষক নাসিরের বিরুদ্ধে। এ অনিয়ম থেকে প্রতিকার পাওয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল( ভারপ্রাপ্ত) আ ন ম সামসুল আলম খান’র কাছে অভিযোগ দিয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক । এসব শিক্ষক থানা শিক্ষা অফিসারের সাথে ফোনে অভিযোগ দেন প্রতিকারের জন্য। তিনি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, সহকারি প্রধান শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিন নিজের পছন্দের লোক দিয়ে ক্লাস রুটিন করান যাতে তারা সুবিধা মত ক্লাস নিতে পারে এবং কোচিং বানিজ্য করতে পারে। বাংলা বিষয়ের নতুন কারিকুলামের ট্রেনিং পেলেও সেই শিক্ষককে বাংলা ক্লাস দেন ২য় ও ৩য় শ্রেণিতে। অথচ এই শিক্ষককে ৮ম ও ৯ম শ্রেণির ট্রেনিং করেছে। গণিতে ট্রেনিং করা শিক্ষককে ডিজিটাল ক্লাস আর বিজ্ঞানের শিক্ষককে দেন গণিত ক্লাস। এতে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায় করে ট্রেনিং কাজে আসছে না। একদিকে শিক্ষক তার জ্ঞান শিক্ষার্থীদের মাঝে দিতে পারেন না অন্য দিকে শিক্ষার্থীরা হচ্ছে বঞ্চিত। শুধু ক্লাস রুটিন নয় প্রশ্নপত্র তৈরি করেন তার পছন্দের শিক্ষক দিয়ে। এই জন্য প্রতিটি পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হয় শিক্ষার্থীদের। সর্বশেষ এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ভুল গণিত প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হয়।
কোন শিক্ষক নাসিরের মতের বিরুদ্ধে কথা বললেই তার ওপর চালানো হয় মানসিক নির্যাতন। কোন কোন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ক্লাসের খড়গ পরে তার উপর। কোন শিক্ষক অভিযোগ দিলেও ব্যবস্থা নেয় না ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ । অভিযোগ সত্য না মিথ্যা তাও প্রমান করার চেষ্টা করেন না অধ্যক্ষ ।অভিযোগ পেয়ে সঠিক তদন্ত করতে শুধু ব্যর্থই হননা তারা।প্রিন্সিপালের সাথে যোগসাজশ করে অভিযোগকারী শিক্ষককে চাকরি হারানোর ভয়ভীতি দেখানো হয়। অনেকের অভিযোগ সহকারি প্রধান শিক্ষক নাসিরের স্বেচ্ছাচারীতার কারনেই মান সম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে নাসিরের মনের অমিল হওয়া শিক্ষকদের সাথে এরকম আচরন করা হয় যা কল্পনাতীত।
প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত শিক্ষকদের গুরুত্ব নেই তার কাছে। মনগড়া নিয়মেই ক্লাস পরিচালনা করেছেন তিনি। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার জানান,বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত আ ন ম সামসুল আলম খানের এর মোবাইলে যোগাযোগ করলেও তার ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে একাধিক শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে সহকারি প্রধান শিক্ষক নাসিরের বিভিন্ন অপকর্মের বিষয়। ভুক্তভুগি শিক্ষকরা আমাদের প্রতিনিধির কাছে হোযাটএ্যাপসে তাদের অভিযোগ পাঠান রুটিন সহ। ক্লাস রুটিন নিয়ে একাধিক শিক্ষক নাসিরের কাছে অভিযোগ করলে তিনি বলেন এটা বিশ্ববিদ্যালয় না যে গণিতের শিক্ষক গণিত ক্লাস করবেন, বাংলার শিক্ষক বাংলা ক্লাস নিবেন। আমি যে ভাবে দিবো সেই ভাবে ক্লাস নিবেন। শিক্ষকরা আরো অভিযোগ করেন রুটিনে গণিত, ইংরেজির ক্লাস পেতে হলে তাকে মাসিক মাসোয়ারা দিতে হয়। টাকা ধার চাইলে টাকা দিতে হবে । এক শিক্ষক বলেন নাসির উদ্দিন দেড় লক্ষ টাকা চাইলে তিনি দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তার ওপর আজও চলে মানষিক নির্যাতন। তিনি শিক্ষকদের কর্মচারি ভাবেন।
স্কুলের ক্যান্টিনের নির্বাচনে সভাপতি পদে এক শিক্ষিকার কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হওয়ার পর তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। ছুটি একজন শিক্ষকের অধিকার । এই ছুটি দিতেও তিনি শিক্ষকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। আরেক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এই স্কুলে খালি হাতে আসলেও নাসির আজ কোটিপতি । শিক্ষার্থীেরকে পিটানো, দুর্নীতি, কোচিং বাণিজ্য, শিক্ষার্থী নির্যাতনের আসামি সহ বিভিন্ন সময় পত্রিকার শিরোনাম হয়েছেন এই নাসির উদ্দিন। যে মামলায় আসামি সেই মামলার বাদি শফিকুর রহমান জানান নাসির এর মানষিক নির্যাতনে আমার সন্তান মানষিক সমস্যায় ভুগছেন। এই মামলায় নাসিরের বিচার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ ব্যাপারে সহকারি প্রধান শিক্ষক নাসির বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তবে তার নামে একজন অভিভাবক মামলা করেছিল তা স্বিকার করে বলেন আমার নামেই নয় এ রকম দশটি মামলা রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়