বাংলাদেশ রাজশাহী

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বিয়ে করে আলোচনায়

image 788920 1711385245
print news

বগুড়া প্রতিনিধি :  বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন ফটিকের বিরুদ্ধে কয়েকটি বিয়ে ও দাম্পত্য কলহের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করতে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ফজলুল হকের সভাপতিত্বে পরিষদের সভায় বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) আসনের সংসদ সদস্য খান মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাঁধন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাত আরা তিথি, তালোড়া পৌর মেয়র আব্দুল জলিল খন্দকার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আহম্মেদুর রহমান বিপ্লব, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাজেদুল আলম, উপজেলা প্রকৌশলী রুবেল হোসেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুসহাক আলী, ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহম্মেদসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগে জানা যায়, দুপচাঁচিয়া উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন ফটিক বগুড়ার কাহালু উপজেলার নারহট্ট আয়রা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তিনি ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো কাহালু পিলকুঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শিউলী খাতুনকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে একটি ছেলে জন্মগ্রহণ করে। শিউলি খাতুন জানান, মোফাজ্জল হোসেন কাহালুতে চাকরি করার সময় তার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বিয়ে হয়। পরে গোপনে সারিয়াকান্দি উপজেলার মেয়ে কাহালু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকাকে বিয়ে করেন। এ নিয়ে তার সংসারে অশান্তি নেমে আসে। এক পর্যায়ে ২০০৮ সালে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পারিবারিক সমঝোতা হলে ২০১০ সালে তাদের আবারো বিয়ে হয়। বিয়ের পরও ওই সহকারী শিক্ষিকার সঙ্গে তার (মোফাজ্জল) যোগাযোগ অব্যাহত ও পরকীয়ার সম্পর্ক চলতে থাকায় ২০২০ সালে আবারও তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। এসব বিষয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ ও আদালতে মামলা করলেও ন্যায় বিচার পাননি। এদিকে মোফাজ্জল হোসেন দুপচাঁচিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসে বদলি হয়ে আসার পর ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর তালোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হালিমা খাতুন এ্যামিলিকে বিয়ে করেন। দুই বছর সংসার করাকালে তিনি স্থানীয় মাটিহাঁস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাজমুল নুসরাত ফারহানার সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। হালিমা খাতুন এ্যামিলি জানান, পরকীয়ার বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাকে ১০ লাখ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্প চুরির অপবাদ দেওয়া হয়; যা কাহালু থানা পর্যন্ত গড়ায়। পরবর্তীতে চুরির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ হয়। এর জের ধরে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তাকে তালাক দেওয়া হয়। এ্যামিলি আরও জানান, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল নারী লিপ্সু ব্যক্তি। তিনি সিরাজগঞ্জে বেলকুচি উপজেলায় কর্মরত থাকাকালে প্রতিমা সরকার নামে এক সহকারী শিক্ষিকাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এছাড়াও তিনি নিজ বাড়ি কাহালুর আয়রা গ্রামে কাজের মেয়ে সামিয়ার সঙ্গেও দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এদিকে নাজমুল নুসরাত ফারহানার সঙ্গে পরকীয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তিনি সর্বশেষ বুধবার রাতে দুপচাঁচিয়ার সরদারপাড়া কাজী অফিসে ৪০ লাখ মোহরানায় তাকে (ফারহানা) বিয়ে করেন। কাজী আব্দুল হাই ছিদ্দিকী জানান, এ বিয়ের আগে শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন আগের দুই স্ত্রী শিউলি খাতুন ও হালিমা খাতুনকে তালাক দেওয়ার কাগজপত্র দেখিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকা জানান, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেনের একাধিক সহকারী শিক্ষিকাকে বিয়ের ঘটনা অন্যদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন জানান, নাজমুল নুসরাত ফারহানা ও তিনি প্রাপ্তবয়স্ক। উভয়ের সম্মতিতে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিয়ে করেছেন। পারিবারিক বিভিন্ন কলহের কারণে ইতোপূর্বে দুই স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি জানান, তাদের কারণে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দুপচাঁচিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ফজলুল হক জানান, একজন মানুষের একাধিক বিয়ে করার অধিকার রয়েছে; কিন্তু মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষা কর্মকর্তা হয়ে বারবার বিয়ে ও এসব নিয়ে অশান্তি সৃষ্টি হওয়ায় সোমবার মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করতে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা বলা হয়েছে। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহম্মেদ জানান, উপজেলা পরিষদে সভার সিদ্ধান্তের বিষয়টি তিনি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করবেন। তিনি যে নির্দেশনা দিবেন, সে মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *