ঝালকাঠির গাবখান সেতু টোলমুক্ত’র দাবী জোড়ালো হয়ে উঠছে


মামুনুর রশীদ নোমানী,বরিশাল অফিস : ঝালকাঠির গাবখান নদীর ওপরে বাংলাদেশ -চীন মৈত্রী সেতু।যেটি গাবখান সেতুটি নামে পরিচিত। ২০০২ সালে সেতুটি সাধারন মানুষের চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়।বরিশাল খুলনা মহাসড়কের ঝালকাঠিতে নির্মিত এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। বাংলাদেশে যে কয়টি সেতু রয়েছে তার মধ্যে সবচরয়ে বেশি উঁচু এই গাবখান সেতুটি।যার স্ট্যান্ডার্ড হাইট ওয়াটার লেভেল থেকে ৬০ ফুট উঁচু।৯১৮ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু দিয়ে ২০০২ সাল থেকে চলাচল শুরু হয়ে ২৪ বছর যাবৎ টোল দিয়ে পারাপার হচ্ছে যানবাহন ও সাধান মানুষ।
গত ১৭ এপ্রিল গাবখান সেতুর ঝালকাঠি প্রান্তের টোল প্লাজায় একটি ট্রাক প্রাইভেট কার ও অটোকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মুত্যু বরন করেন তরতাজা ১৪টি প্রান।সবচেয়ে দুঃখের ভিতর আরেক দুঃখের সংবাদ হলো নিহত ১৪ জনের ভিতর একই পরিবারের ৬ জন সদস্যের মৃত্যুতে সকলকে নাড়া দিয়েছে।
১৪ জনের মৃত্যুর পর আলোচনা সভা,সভা-সেমিনার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গাবখান সেতু টোলমুক্ত’র দাবী জোড়ালো হয়ে উঠে।
এ এম আবু রাসেল নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন,
২০০২ সাল থেকে গাবখান ব্রীজ থেকে দীর্ঘ ২৪ বছর ধারাবাহিকভাবে টোল নিচ্ছে সরকার।বিভিন্ন সময়ে সরকার টেন্ডারের মাধ্যমে টোল আদায় ভিন্ন ভিন্ন কন্ট্রাক্টারের হাতে ছেড়ে দিয়েছে,বরাবরের মত এবার পেয়েছে এক ঠিকাদার।
বরিশাল থেকে ঝালকাঠি আর ঝালকাঠি থেকে রাজাপুর একই সুতোয় গাথা।রাজাপুরের মানুষের সাথে ঝালকাঠির সাথে প্রশাসনিক থেকে শুরু করে পারিবারিক সম্পর্ক।উল্লেখযোগ্য নেছারাবাদ হুজুরের বাড়ি,অনেকেই শুক্রবার নিয়মিত নামাজ পড়তে যায়,যা নিয়মিত যোগাযোগ বা নিয়মিত এসে যেয়ে যারা চাকরি করেন।দীর্ঘ ২৪ বছর টোল উঠানোর পর আমার কাছে মনে হয় না,দুই চাকার বাহনের জন্য টোলের প্রয়োজন আছে।
যারা ইতিপুর্বে ইজারাদার ছিলো তারা কারো সাথে দুর্ব্যবহার করেনি।বর্তমানে যারা টোলের ইজারা নিয়েছে তাদের ব্যবহার খুবই খারাপ। তারা যেন টোলের কন্ট্রাকের নামে ব্রীজ কিনে নিয়েছে।
এছাড়া ঝালকাঠি পরিবার নামক ফেসবুক গ্রুপে এমডি নয়ন লিখেছেন,এই মুহুর্তে গাবখান সেতুর টোল উঠায়ে দেয়া হোক। ২৪ বছর ধরে টোল দিচ্ছি। সেতুর টোল দেয়া না লাগলে গাড়ির এতো জটলা থাকতোনা। এতো প্রানহানি হতো না।
তার এই পোস্টে ৩৭ জন একাত্মতা প্রকাশ করে কমেন্ট করেছে। সকলের একই কমেন্ট একই দাবী টোল মুক্ত করা হোক গাবখান সেতুর টোল।
এভাবে একই ভাষায় এ্যাড রাকিবুল হাসান রাকিব তার ফেসবুক ওয়ালে দাবী করেছেন এই মুহুর্তে গাবখান সেতুর টোল উঠায়ে দেয়া হোক। ২৪ বছর ধরে টোল দিচ্ছি। সেতুর টোল দেয়া না লাগলে গাড়ির এতো জটলা থাকতোনা। এতো প্রানহানি হতো না।তার পোস্টে সহমত জানিয়ে ৪৪ জন কমেন্ট করেছেন। পোস্টি শেয়ার করেছেন ৩৮ জন।
এদিকে সেতুর উপর দুর্ঘটনা এড়াতে এবং চলাচলকারীদের সুবিধার্থে ৬২টি লাইট পোস্ট স্থাপন করা হয়। বর্তমানে লাইট পোস্টের অধিকাংশই অকেজো। দীর্ঘদিন ধরে এই পরিস্থিতি চললেও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের।
ঝালকাঠি সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সেতুটির দৈর্ঘ্য ৯১৮ মিটার, দীর্ঘতম স্প্যান রয়েছে ১১৬. ২০ মিটার (যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ), নিম্নতম স্প্যান রয়েছে ৩০ মিটার, ২৪ টি পিলার ও ২ টি এ্যাবাটমেন্ট রয়েছে। ক্যারেজওয়ে রয়েছে ৭.৫০ মিটার। প্রতি পার্শ্বে সাইড ওয়াক রয়েছে ১.২৫ মিটার। ১.৫০ মিটার ব্যাসের কাস্ট ইন সিটু বোর্ডের পাইল (অবস্থান ভেদে ২ টি থেকে ৯টি পর্যন্ত) ভিত্তি রয়েছে। ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স রয়েছে ১৮ মিটার। হরাইজন্টোল নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স রয়েছে ৭৬.২২ মিটার। ৮১ কোটি ৯৫ লাখ ৮২ হাজার টাকা ব্যয়ে এ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ১৯৯৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতু নির্মাণের ভিত্তি ফলক উম্মোচন করে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।২০০২ সালে সেতুটি সাধারন মানুষের চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়