বাংলাদেশ ঢাকা

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ বাণিজ্যে জড়িত বহু রাঘব-বোয়াল

karigori board1 20240422213529
print news

ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ জালিয়াতির ঘটনায় একের পর এক বেরিয়ে আসছে অনেক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার নাম। এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত আছেন সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরাও। শিগগিরই এসব রাঘব-বোয়ালদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে ডিবি।

সনদ বাণিজ্যের ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে আলোচিত নাম হলো কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খানের স্ত্রী সেহেলা পারভীন (৫৪)। ইতোমধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে বোর্ড চেয়ারম্যান আলী আকবরকেও।

সোমবার (২২ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে রোববার ওএসডি করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে ডিবি অফিসে ডাকা হয়েছে। এতে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে গ্রেপ্তার করা হবে। এছাড়া এ ঘটনায় যাদের নাম এসেছে পর্যায়ক্রমে সবাইকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

সনদ বাণিজ্যের ঘটনায় রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় মামলা হয়েছে। এই মামলায় এখন পর্যন্ত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামান, তার ব্যক্তিগত সহকারী ফয়সাল, কুষ্টিয়া গড়াই সার্ভে ইন্সটিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার কলি, কামরাঙ্গীরচর হিলফুল ফুজুল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান ও ঢাকা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মো. মাকসুদুর রহমান ওরফে মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি লালবাগ বিভাগ।
আলী আকবর খান / ফাইল ছবি

ডিবি সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারদের পাশাপাশি জালিয়াতির সঙ্গে আরও বড় রাঘব-বোয়াল জড়িত আছেন। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালকসহ কমপক্ষে আরও ৩০ জন এই সনদ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে ডিবি। তাদের বিষয়ে তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। তাদের তালিকা করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।

এ বিষয়ে ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই দুর্নীতির খনির ভেতরে আমরা ধীরে ধীরে প্রবেশ করছি। এখানে আমাদের আরও কাজ বাকি রয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত আছেন তাদের তালিকা করা হচ্ছে। যারাই এর সঙ্গে জড়িত আছেন তাদের সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।

এখন পর্যন্ত যাদের নাম উঠে এসেছে

গ্রেপ্তার হওয়া ৬ জন ছাড়া সার্টিফিকেট জালিয়াতির সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আরও তিন কর্মকর্তার নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিবিএ নেতা আব্দুল বাছের, রেজিস্ট্রেশন শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রামার মামুনুর রশীদ ও বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাকারিয়া আব্বাস। তারা বিভিন্ন সময় বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামানকে শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট পরিবর্তন ও জাল সার্টিফিকেট তৈরি করার কথা বলতেন। তাদের দাবি অনুযায়ী শামসুজ্জামান সনদ তৈরি করে দিতেন এবং রেজাল্ট পরিবর্তন করে দিতেন। এজন্য তারা শামসুজ্জামানকে কোনো টাকা দিতেন না। একই বোর্ডের লোক হওয়ায় শামসুজ্জামান তাদের কাছে টাকা চাইতে সাহস পেতেন না।

তদন্ত সূত্রে আরও জানা যায়, বোর্ডের আরও অনেক কর্মকর্তা এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত আছেন। তাদের নাম জানার জন্য ডিবি তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

নাম উঠে আসছে দুদক কর্মকর্তাদেরও

সার্টিফিকেট দুর্নীতির সঙ্গে খোদ দুদক কর্মকর্তাদের নামও উঠে আসছে। দুদকের দুই উপ-পরিচালাক মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট জালিয়াতির মামলায় এই ঘটনার মূলহোতা শামসুজ্জামানকে অব্যাহতি দেন বলে জানতে পেরেছে ডিবি।

তদন্ত সূত্রে জানা যায়, শামসুজ্জামানের সার্টিফিকেট দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলা হয় দুদকে। দুদকের উপ-পরিচালক পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা মামলার তদন্তের জন্য শামসুজ্জামানকে ডাকেন। এরপর থেকে দুদকের ঐ কর্মকর্তাকে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন শামসুজ্জামান। কিন্তু ম্যানেজ করতে না পেরে দুদকের উপ-পরিচালক পদমর্যাদার আরেক কর্মকর্তার দারস্থ হন শামসুজ্জামান। সেই কর্মকর্তা শামসুজ্জামানকে তার বাড্ডার বাসায় ডেকে নেন। তিনি শামসুজ্জামানকে বলেন, এখন যে কর্মকর্তার কাছে মামলার তদন্তভার আছে তাকে ম্যানেজ করা যাবে না। তাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করতে হবে। এর জন্য তাকে ৩০ লাখ টাকা দিতে হবে। শামসুজ্জামান ৩০ লাখ টাকার ডলার কিনে তাকে দেন। টাকা দেওয়ার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়।

নতুন তদন্ত কর্মকর্তা হন দুদকের উপ-পরিচালক পদ মর্যাদার আরেকজন। তিনি প্রায় ১০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে শামসুজ্জামানকে দুদকের মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।

যেভাবে সংগ্রহ হতো সার্টিফিকেটের আসল কাগজ

ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান অভিযুক্ত শামসুজ্জামান জানান, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদের কাগজ প্রতি বান্ডিলে ৫০০টি করে থাকে। বান্ডিল করা এসব কাগজ শামসুজ্জামান শিক্ষা বোর্ডের অফিস থেকে সংগ্রহ করতেন। তবে তার কাছে জাল সার্টিফিকেট তৈরির এত চাহিদা থাকত যে বোর্ড অফিসের কাগজ পর্যাপ্ত হতো না। কাগজের জোগান ঠিক রাখতে রাজধানীর পুরান ঢাকা ও রংপুরের একটি প্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদেরকে আসলে কাগজের নমুনা দেখানোর পর তারা হুবহু সার্টিফিকেটের কাগজ তৈরি করে দিতেন শামসুজ্জামানকে।

শামসুজ্জামান প্রতিদিন অফিস শেষ করে বাসায় গিয়ে এসব কাগজ দিয়ে জাল সার্টিফিকেট তৈরি করতেন। সার্টিফিকেট প্রিন্ট করার কাজ করতেন তার ব্যক্তিগত সহকারী ফয়সাল। রাজধানীর পীরেরবাগ এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেওয়া হয়েছিল সার্টিফিকেট প্রিন্ট করার জন্য। সেখানে এসব জাল সার্টিফিকেট প্রিন্ট করতেন ফয়সাল। তারপর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েব সাইটে গিয়ে এসব জাল সার্টিফিকেট আপলোড করে দিতেন শামসুজ্জামান। আপলোড করার পর এসব সার্টিফিকেট বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে ভেরিফাই করা যেত।

যেভাবে জাল সার্টিফিকেট তৈরির কলাকৌশল শেখেন শামসুজ্জামান

জিজ্ঞাসাবাদে শামসুজ্জামান জানান, তিনি ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত জাল সার্টিফিকেট তৈরি করা শেখেন। মোহাম্মদ শামসুল আলম নামে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এক সিস্টেম অ্যানালিস্টের কাছ থেকে এই জালিয়াতি শেখেন তিনি। শামসুল আলম বিভিন্ন সময় ডিপ্লোমা পরীক্ষার সার্টিফিকেট জালিয়াতি করতেন। তিনিও শিক্ষার্থীদের কাছে জাল সার্টিফিকেট বিক্রি করতেন। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পরীক্ষায় যেসব শিক্ষার্থীরা পাস করতে পারত না তাদের নম্বর বাড়িয়ে দিয়ে পাস করিয়ে দিতেন শামসুল হোক। তার কাছ থেকে শিখে শামসুজ্জামান এসএসসি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পরীক্ষার্থীদের জাল সার্টিফিকেট বানানোসহ পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার কাজ করতেন।

কত টাকায় বিক্রি হতো জাল সার্টিফিকেট?

ডিবি সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা প্রথমে দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করত। দালালরা শামসুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করত। সনদ প্রতি ৩০ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতেন শামসুজ্জামান। এ ব্যাপারে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালকেরাও যোগাযোগ করতেন তার সঙ্গে। পরিচালকরা সার্টিফিকেট প্রতি ৩০-৫০ হাজার টাকা দিতেন। তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আরও মোটা অঙ্কের টাকা নিতেন। প্রায় ৩০ জনের মতো দালাল ও প্রতিষ্ঠান পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে শামসুজ্জামানের। নরসিংদী, ময়মনসিংহ, খুলনা, দিনাজপুর, গাজীপুর, ঢাকা ও কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার দালালরা ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা তার কাছ থেকে সার্টিফিকেট বানিয়ে নিতেন।

সনদ বাণিজ্য চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত শনিবার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনকে রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে গ্রেফতার করে ডিবি। সেহেলা পারভীন দুই দিনের রিমান্ডে আছেন। স্ত্রীকে গ্রেফতারের পর আলী আকবরকে প্রথমে ওএসডি ও পরে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সোমবার কারিগরি বোর্ডের আইটিসিসির পরিচালক মো. মামুন উল হককে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

এ ঘটনায় গ্রেফতার মাকসুদুর রহমান মামুন ও সরদার গোলাম মোস্তফা ওরফে মোস্তাফিজুর রহমান সোমবার আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদের আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ বাণিজ্যের অভিযোগে গত ১ এপ্রিল রাজধানীর মধ্যপীরেরবাগ থেকে প্রথমে শামসুজ্জামান ও তার ব্যক্তিগত সহকারী ফয়সালকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে কুষ্টিয়া গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের সানজিদা আক্তার ওরফে কলির নাম বেরিয়ে এলে ৫ এপ্রিল তাকেও গ্রেফতার করা হয়। তিনজনের জবানবন্দি ও তাদের ব্যবহৃত বিভিন্ন ডিভাইস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিলফুল ফুজুল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ সরদার গোলাম মোস্তফা ওরফে মোস্তাফিজুর রহমানকে গত বৃহস্পতিবার মিরপুর থেকে এবং ঢাকা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের (মেডিকেল) পরিচালক মাকসুদুর রহমান ওরফে মামুনকে গত শুক্রবার যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয়। সর্বশেষ শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্যবিদায়ি চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনকে। রোববার সেহেলাকে ঢাকার আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন ডিবির পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম। শুনানি শেষে আদালত দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সানজিদার খপ্পরে বেপথে সেহেলা পারভীন :

দুই দিনের রিমান্ডের প্রথম দিন রোববার সেহেলা পারভীন ডিবিকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তার দেওয়া তথ্য মতে কুষ্টিয়া গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের সানজিদা আক্তার ওরফে কলির খপ্পরে পড়ে বেপথে গেছেন সেহেলা পারভীন। বিয়ে সংক্রান্ত এ সমস্যার জেরে বছরখানেক আগে সানজিদার সঙ্গে পরিচয় হয় সেহেলা পারভীনের। পরিচয়ের পর থেকেই বুটিকসহ বিভিন্ন ব্যবসা করার টোপ দেন সানজিদা। পর্যায়ক্রমে তাদের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। চলতি মাসের ১৩ এপ্রিল সেহেলা পারভীনের একমাত্র মেয়ের বিয়ের খরচ মেটাতে সানজিদার কাছে তিন লাখ টাকা ধার চান তিনি। এই সুযোগে সানজিদা একেএম শামসুজ্জামানকে পাঠান সেহেলা পারভীনের কাছে। একেএম শামসুজ্জামান তিন লাখ টাকা দিয়ে তার চাকরির পদোন্নতি ও বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তে মুক্তি পেতে সেহেলা পারভীনের সহযোগিতা চান। সহায়তার আশ্বাসও দেন সেহেলা পারভীন।

ছয় ধরনের অনিয়ম :

সনদ বাণিজ্য ছাড়াও সনদের নাম, ঠিকানা বা বিভিন্ন ভুল সংশোধনে নিয়মতান্ত্রিক আবেদন না করে এ চক্রের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে শর্টকাটে কাজ হতো। টাকার বিনিময়ে তারিখ পরিবর্তন করে বয়স কমানো, জেলা কোটায় চাকরির সুবিধা পেতে সনদের স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করা হয়েছে। পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট পরিবর্তন করে পাশের সনদ দেওয়া হতো। রেজাল্ট খারাপ হলে সনদ পরিবর্তন করে ভালো রেজাল্ট করিয়ে দেওয়া হতো। এছাড়া যারা কখনোই কারিগরি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হননি তাদেরও রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর বানিয়ে সনদ দেওয়া হতো।

ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে শামসুজ্জামান জানিয়েছেন, দুদকের উপপরিচালক আলী আকবর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাকে নোটিশ দিয়েছিলেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদও করেন। এর পর মামলা হলে রেহাই পেতে তিনি পূর্বপরিচিত দুদকের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় আবু বকর তার কাছে ৬০ লাখ টাকা দাবি করেন। শামসুজ্জামান টাকা দিলে বদলে যায় তদন্ত কর্মকর্তা। সহকর্মী আবু ফজলের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল আবু বকরের। সেই সূত্রে তার কাছে যান শামসুজ্জামান। আবু বকরকেই ৬০ লাখ টাকার সমপরিমাণ ডলার দেন তিনি। এরপর আবু বকর ফাইল দেখিয়ে বলেছিলেন, আপনার মামলায় গোলাম মাওলা তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ পেয়েছেন।

দুদক কর্মকর্তা গোলাম মাওলা বিভিন্ন সময় তথ্য চেয়ে শামসুজ্জামানকে সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় ডাকতেন। বিভিন্ন সময় তিনি ৩, ৫ ও ১০ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। শামসুজ্জামান ও গোলাম মাওলাকে বাড্ডার বাসায় ডেকে নিয়ে প্রায়ই কথা বলতেন আবু বকর। গোলাম মাওলা শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেন। আবু বকর গত ২৯ জানুয়ারি অবসরে গেছেন।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *