রাজনীতি

৭ জানুয়ারি আমাদেরও নির্বাচনে যেতে হয়েছে চাপে পড়ে : জিএম কাদের

image 799272 1714232057
print news

ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা :জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, আমি আগেই বুঝেছিলাম বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না। তিন বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। তাই দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। তবে ভোট ভালো হয়নি। তিনি আরও বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিষ্কার বুঝেছি, তিনটি বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে এবং নির্বাচন সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তারা নয়, আরও বেশ কয়েকটি বিদেশি শক্তি আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত ছিল। অনেকটা চাপে পড়ে, অনেকটা বাস্তবতা মেনে নিয়ে আমাদেরও নির্বাচনে যেতে হয়েছে।

শনিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে জিএম কাদের এ দাবি করেন। গত বছরের ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত দলের বর্ধিত সভায় জাতীয় পার্টির নেতারা নির্বাচন বর্জনের পক্ষে মতামত দেন। তবে শেষ পর্র্যন্ত আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে ভোটে অংশ নেয় দলটি। মাত্র ১১টি আসনে জয়ী হয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে সংসদের প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসে জাতীয় পার্টি। দলের তৃণমূলের নেতাদের মতামত উপেক্ষা করে কেন নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তা বর্ধিত সভায় জানিয়েছেন জিএম কাদের। এ সময় তিনি নির্বাচনের আগের পরিস্থিতিও ব্যাখ্যা করেন।

জিএম কাদের বলেন, নির্বাচন বন্ধ করে কোনো দেশে সরকার পরিবর্তন সম্ভব নয়। জাতীয় পার্টি নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করছে। নির্বাচনের আগে বর্ধিত সভায় নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত দেওয়া হয়েছিল। ভোটে না গেলে ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখা যাবে কিনা সন্দেহ ছিল, তাই নির্বাচনে গিয়েছি। আপনারা আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। ভোটের আগ মুহূর্তে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তখন সুষ্ঠুভাবে পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেছি। মনে হয়েছে বিভিন্ন বিদেশি শক্তি বিভিন্নভাবে নানা দিকে নিচ্ছিলেন। আর বিএনপির আন্দোলন নিয়ে পরিষ্কার ধারণা ছিল তারা সফল হবে না। আন্দোলন চলাকালে তৃতীয় শক্তি এসে সরকার পরিবর্তন করে, এমন ইতিহাস বাংলাদেশে নেই। ফলে বিএনপির ১ কিংবা ১০ লাখ বা ১ কোটি লোক নিয়ে রাস্তায় নামলেও বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না, তা বুঝতে পেরেছিলাম। তিনি বলেন, বিএনপি ও জামায়াত আন্দোলনে পরাস্ত হয়ে জাতীয় পার্টিকে দোষ দিচ্ছে। তবে এটা ঠিক নির্বাচন ভালো হয়নি। সরকার জাতীয় পার্টিকে গৃহপালিত দল হিসাবে দেখতে চায়, যা কখনও সম্ভব নয়। জাতীয় পার্টি কখনোই অনুগত বিরোধী দল হবে না। গৃহপালিত বিরোধী দল হবে না।

জাতীয় পার্টি ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিলেও চাপের মুখে তা পালটাতে বাধ্য হন দাবি করে জিএম কাদের বলেন, কোন্দল করে দল ভেঙে দেওয়া হবে-এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়। তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে সবাইকে (দলের প্রার্থী) জানিয়ে দিলাম নির্বাচনে যাব না। কিন্তু ১৭ ডিসেম্বর সকালে আমার ওপরে প্রত্যক্ষভাবে ও পরোক্ষভাবে চাপ আসল। প্রত্যক্ষভাবে সেটা বলব না, কিন্তু পরোক্ষভাবে হলো, আমাদের দলের ভেতরে কোন্দল তৈরি করে দল ভেঙে দেওয়া হবে। আর তখন আমার মতো ওয়েল ইনফর্মড নেতা দেশে কমই ছিল। আমি জেনে গিয়েছিলাম, কিছু শক্তিশালী দেশ এই সরকারকে জয়ী করতে চায়। তাই আমি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পরে সরকার আমাদের সঙ্গে নেগোসিয়েশনে গেল।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ২৬ জনের তালিকা দেওয়া হলো। কিন্তু আওয়ামী লীগ যেখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থী দিল সেখানে স্বতন্ত্র পাওয়ারফুল প্রার্থীও রেখে দিল। শুধু কয়েকটি আসনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, সরকার যাকে পাশ করাতে চায়, তাকে পাশ করানো হয়েছে। আমি যেই আসনে নির্বাচন করেছি, সেখানেও আমাকে হারানোর জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। আমাকে ধ্বংস করা মানে জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করা। জাতীয় পার্টি না গেলে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না বলে আওয়ামী লীগ তাদের চেয়েছে বলেও মনে করেন বিরোধীদলীয় নেতা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমাদের ব্যবহার করে একদলীয় রাজত্বের চিন্তা করেছে। তারা চেয়েছে অনুগত বিরোধী দল। তারা আমাদের গলায় পচা, গলা, মরা আবর্জনা ঢুকিয়ে দিয়ে অনুগত বিরোধী দল বানানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তা আমরা হইনি।

দলের কিছু নেতা জাতীয় পার্টির ছবি না দিয়ে আওয়ামী লীগের ছবি দিয়ে পোস্টার করে জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, এটা পার্টি মানবে না। যারা গৃহপালিত বিরোধী দল হতে চায়, চলে যান। আমরা হব না। গৃহপালিত হলে রাজনৈতিক মাঠে হারিয়ে যাবেন, আমি ছাড় দেব না। নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসনে স্ত্রী শেরীফা কাদেরকে প্রার্থী করা নিয়ে জাতীয় পার্টিতে যে বিরোধ তৈরি হয়েছে তা নিয়েও কথা বলেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, উত্তরা আমাদের এক শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল। আমি দীর্ঘদিন এ এলাকায় রাজনীতি করেছি। ১০টি আসনের চেয়ে উত্তরার এই আসন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি চেয়েছি দলের শক্তিশালী অবস্থানের জন্য আমার স্ত্রী এখান থেকে নির্বাচন করুক। দলে মনোনয়ন বাণিজ্য হয়নি দাবি করে জিএম কাদের বলেন, আমাকে কমপক্ষে ১০০ জন নেতাকর্মী দিন-রাত ফোন দিয়ে বলে, ‘টাকা দেন, টাকা দেন’। অথচ তারা নির্বাচনে নাই, রাজনীতির মাঠেও নাই। তারা বলেছে আমি নাকি দল বিক্রি করে দিয়েছি, আমি নাকি মনোনয়ন বাণিজ্য করেছি। কোনো মনোনয়ন বাণিজ্য করিনি। কারও কাছ থেকে এক টাকা নেইনি।

আওয়ামী লীগ প্রজাতন্ত্রের জায়গায় রাজতন্ত্র কায়েম করছে বলেও মন্তব্য করে জিএম কাদের বলেন, জনগণ ভোট দিতে চায় না, এটা হচ্ছে বিরাজনীতিকরণ। এসব করে আওয়ামী লীগ বর্তমানে রাজনৈতিক দলের চরিত্র হারিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে কথা বলে যাচ্ছি, কিন্তু আমাদের স্পেস দেওয়া হচ্ছে না। ক্ষমতা সব এককেন্দ্রিক। উনার (প্রধানমন্ত্রী) ইচ্ছায় ভোট হয়। কেউ ভোট করলে উনার অনুমতি নিয়ে করতে হবে। এভাবে চললে দেশে কোনো দলই টিকবে না। এখন এমন অবস্থা করা হয়েছে যে, রাজনীতি করলে হয় ফুলের মালা না হয় ফাঁসির দড়ি গলায় নিতে হবে।

আন্দোলন করতে নেমে বিএনপি কিছু ভুল করেছে দাবি করে জিএম কাদের বলেন, আমি জানতাম বিএনপির আন্দোলনে সরকার পতন সম্ভব না। ১০ লাখ নয়, ১ কোটি মানুষও রাস্তায় নামলে নির্বাচন বন্ধ হবে না। ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে সমাবেশের দিন পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন বিএনপি কিছু ভুল করে ফেলল। তারা ফাঁদে পড়ে গেল। নেতৃস্থানীয় লোকজন গ্রেফতার হলেন, আন্দোলন বাধাগ্রস্ত হলো। বিএনপি আন্দোলনে পরাস্ত হয়েছে। কিন্তু তারা একটা দায় আমার ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। তারা বলে, আমি না গেলে নাকি নির্বাচন হতো না। বিএনপি-জামায়াতের নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য আমার ওপরে দোষ দেয়।

প্রখর খরতাপ উপেক্ষা করে জাতীয় পার্টির জেলা-উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায় থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা বর্ধিত সভায় যোগ দেন। এছাড়াও দলের বিভিন্ন অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন বর্ধিত সভায়। চেয়ারম্যান, মহাসচিব, কো-চেয়ারম্যানরা ছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সংসদ-সদস্যরা। ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, উপদেষ্টা, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা ছিলেন সামনের সারিতে। ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাড়ে ৩ মাসের মাথায় এসে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৃহত্তর কলেবরের এই সভায় মাঠের নেতারা তাদের মান-অভিমানের কথা তুলে ধরেন। অনেকে এ সময় ব্যর্থতা কাটিয়ে আগামী দিনে জাতীয় পার্টির করণীয় সম্পর্কেও মতামত দেন। পবিত্র কুরআন থেকে তেলায়াতের মাধ্যমে সভা শুরু হয়। এরপর শোক প্রস্তাব গ্রহণ শেষে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি স্বাগত বক্তব্য দেন।

স্বাগত বক্তব্যে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, যারা দল ছেড়ে চলে গেছেন তারা ভুল করেছেন। তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। নির্বাচনে কাক্সিক্ষত ফল পাওয়া যায়নি, এজন্য অনেক সমস্যা জড়িত। যেমন শাসক দলের দৌরাত্ম্য, প্রশাসনের নিরপেক্ষতার অভাব। বলা যায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র যারা ছিলেন তাদের পক্ষে প্রশাসন কাজ করেছে। নিরপেক্ষতার অভাবে লাঙলের প্রার্থীরা পাশ করেনি।

মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, গত নির্বাচনে আমাদের নিজেদের কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমরা প্রত্যাশিত ফলাফল পাইনি। আমাদের নেতাকর্মীদের ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকার পরও প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে জয়ী হতে পারিনি। কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে অল্পের জন্য পরাজয় থেকে রক্ষা পাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাকেও লড়াই করে জয়ী হতে হয়েছে। আমাদের ত্যাগী কিছু নেতাকর্মী আমাদের ভুল বুঝে চলে গেছেন। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই দেশে এরশাদের প্রতিনিধিত্ব করে একমাত্র জিএম কাদের-অন্য কেউ এরশাদের প্রতিনিধিত্ব করে না। তাই যারা চলে গেছেন তারা ভুল করেছেন।

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি বলেছেন, পল্লীবন্ধুর জাতীয় পার্টি জিএম কাদেরের নেতৃত্বে আজ ঐক্যবদ্ধ। জাতীয় পার্টি করতে হলে তার নেতৃত্ব মেনেই করতে হবে। আগামীতে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে সরকার গঠন করে আমরা পল্লীবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব।

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেন, নিজের শক্তি না থাকলে কখনও অন্যের ওপর নির্ভর করে ভালো কিছু করা যায় না। ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি-সব ক্ষেত্রে এটা খুব জরুরি বিষয়। একথা সত্য যে, নানা জটিলতা ও মীরজাফরদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে আমাদের দল ৯০ সালের পর থেকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছে না। বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরে এ পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়েছে। আমরা এক ধরনের আরোপিত বা শৃঙ্খলিত সময় পার করছি। আমরা কেউ এ সংস্কৃতি থেকে বের হতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, সঙ্গত কারণে রাজনীতিও এখন পদে পদে নিয়ন্ত্রিত ও শৃঙ্খলিত হয়ে পড়েছে। সরকার ও প্রশাসনের নগ্ন হস্তক্ষেপ ছিল গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। আমাদের দলের জনপ্রিয় নেতাদের মধ্যে যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, তাদের অনেকে আশাহত হয়েছেন। আবার কেউ মনোনয়ন পেয়েছেন, কেউ আবার পাননি। অনেকে মনোনয়ন পেয়েও নির্বাচনের মাঠে শক্তভাবে দাঁড়াতে পারেননি। শক্তি এবং সামর্থ্য থাকলেও প্রশাসনের গোপন ষড়যন্ত্রের কারণে সব ভেস্তে গেছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হবে আশ্বাস দিয়ে অনেকটা জোর করে আমাদের দলকে নির্বাচনে নেওয়া হয়েছিল।

অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, আপনারা সবাই জানেন আমিও ঢাকা-১ আসন থেকে নির্বাচন করেছি। কিন্তু কি হয়েছে-তা দেশের মানুষ যমুনা টেলিভিশনের মাধ্যমে লাইভ দেখেছে। কোনো টেলিভিশন চ্যানেল সাহস না করলেও যমুনা টেলিভিশন সাহসী ভূমিকা পালন করেছে। ভোটের দিন সকাল থেকেই যখন সব কেন্দ্রে ভোট কারচুপি হচ্ছিল তখন নির্বাচন কশিসনসহ প্রশাসনের সব পর্যায়ে আমি নিজে যোগাযোগ করি, কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। ওই সময় আমাদের পার্টির চেয়ারম্যান প্রতিবাদ করলেও কোনো লাভ হয়নি। ফলে অসহায়ের মতো চরম কষ্ট মেনে নিতে হয়েছে। তিনি বলেন, আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে বলতে পারি, জাতীয় পার্টির যেকটি আসনে নিশ্চিত জয়ের সম্ভাবনা ছিল তার মধ্যে আমার আসনটি অন্যতম। অথচ আমাকেই এরকম ভোট ডাকাতি মেনে নিতে হয়েছে।

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান বলেন, আমি মনে করি আজ এ বিষয়গুলো যথযথভাবে রিভিউ করতে হবে। আমরা নির্বাচনের আগে জনগণকে কি ধরনের প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলাম? নির্বাচনে আমরা কি ভূমিকা রেখেছি? কিভাবে আমরা এখন জনগণের আস্থা অর্জন করব? তিনি বলেন, বিশেষ করে শুধু সংসদে বিরোধী দল হয়ে থাকলে চলবে না। সাধারণ মানুষের মন জয় করতে হবে। আমি মনে করি-রাজনীতি কখনও হারাবে না। যে কোনো কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও রাজনীতি টিকে থাকবে। জনগণের বিপ্লব ও সংগ্রাম কখনো বিফলে যায় না। সেই জনগণকে নিয়েই আমাদের রাজপথে থাকতে হবে।

অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, আমাদের সুযোগ্য চেয়ারম্যানের কৌশলী ভূমিকার কারণে সংসদে তার বিরোধীদলীয় নেতা হওয়ার বিষয়টি শেষ পর্র্যন্ত আটকানো যায়নি। এক্ষেত্রে আমাদের দল অবশ্যই লাভবান হয়েছে। তা না হলে ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হয়ে যেত। এ সময় দলের মাঠ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি জানি আপনাদের অনেকের মনে কষ্ট আছে, অভিমান আছে, ক্ষোভ আছে। এতকিছুর পরেও সবচেয়ে বড় সত্য হলো আমরা সবাই জাতীয় পার্টিকে ভালোবাসি, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ভালোবাসি। তার দেখানো পথেই আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাব। অতীতের সব ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে জাতীয় পার্টিকে সুসংগঠিত করব। পার্টির চেয়ারম্যান আমাদের যে দিকনির্দেশনা দেবেন, আমরা তা পালন করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করব। অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, আমি যা বলতে চেয়েছিলাম তার অনেক কিছুই আপনারা ইতোমধ্যে বলে ফেলেছেন। বিশেষ করে আমাদের জেলার নেতারা তাদের কষ্টের কথা তুলে ধরে আমাদের আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন-অতীতে আমরা কোথায় ভুল করেছি। আমাদের প্রিয় চেয়ারম্যান অনেক বিচক্ষণ এবং সুবিবেচক। তিনি নিশ্চয়ই এসব বিষয়ে তার মূল্যবান বক্তব্য দেবেন।

প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এমপি, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল, উপদেষ্টা আশরাফুজ্জামান আশু এমপি ছাড়াও বিভিন্ন জেলার নেতা বক্তব্য রাখেন। এদের মধ্যে রয়েছেন-আমিনুল ইসলাম ঝন্টু, আহসান আদেলুর রহমান, আহমেদ শফি রুবেল, এসএম ইয়াসির, মহসিন উল ইসলাম হাবুল, সামসুউদ্দিন রিন্টু, এয়ার আহমেদ সেলিম, সাব্বির আহমেদ, ডা. আব্দুল হাই, সালাউদ্দিন আহমেদ মুক্তি, শফিকুল ইসলাম মধু, জাহিদ হাসান, আলহাজ আবদুর রাজ্জাক, মোজাম্মেল হক, মো. নজরুল ইসলাম, মো. নাসির উদ্দিন, মো. জাফর উল্লাহ, কামরুজ্জামান মণ্ডল, নূরুল আমিন ভুট্টো, আমির হোসেন ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট খন্দকার হাবিবুর রহমান বাচ্চু, ওমর ফারুক, আলাউদ্দিন, মোস্তফা জামান লিটন প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন-পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, এসএম আব্দুল মান্নান, এটিইউ তাজ রহমান, আবদুর রশীদ সরকার, নাসরিন জাহান রতনা, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, নাজমা আক্তার, সৈয়দ দিদার বখত, একেএম সেলিম ওসমান এমপি, মেজর অব. রানা মোহাম্মদ সোহেল, এমরান হোসেন মিয়া, শেরিফা কাদের, একেএম মোস্তাফিজুর রহমান এমপি, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ এমপি প্রমুখ।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *