বাংলাদেশ বরিশাল

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : বরিশালে তিন খণ্ড হচ্ছে আ.লীগ,বিপাকে নেতাকর্মীরা

en 1
print news

বরিশাল অফিসবরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে বিভক্ত আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনে আরও তিন খণ্ড হলো। বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম ও সিটি মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত গ্রুপের তিনজন এবং সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ পক্ষের একজন লড়ছেন। একক প্রার্থী হওয়ায় সাদিক অনুসারীরা খুব একটা জটিলতায় না পড়লেও প্রতিমন্ত্রী-মেয়র গ্রুপের অনুসারীরা বিপাকে আছেন। বর্ষীয়ান নেতাদের মতে, এভাবে বিভক্তির ধারা চলতে থাকলে একপর্যায়ে দলের সাংগঠনিক শক্তি হুমকির মুখে পড়বে।

সিটি নির্বাচনে মেয়রের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ প্রথম দুই ভাগে বিভক্ত হয়। শেষ পর্যন্ত খোকন সেরনিয়াবাতের মনোনয়ন পাওয়া এবং সাদিক আব্দুল্লাহর না পাওয়ার মধ্য দিয়ে দল বিভক্ত হয়ে যায়। সাদিক বিরোধীরা খোকন সেরনিয়াবাতের কাছে ভিড় জমায়। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ থাকে সাদিক আব্দুল্লাহর হাতে। এছাড়া বরিশাল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণও অনেকটাই তার হাতে থাকে বাবা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপির সুবাদে।

এদিকে সদর আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামিমের সমর্থনে মেয়র খোকন গ্রুপ আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। স্থানীয় রাজনীতিতে সাদিকবিরোধী হিসাবে পরিচিত শামিম তার সঙ্গে জোট বাঁধেন। মাঝে সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া জাহিদ ফারুকের বিরুদ্ধে সাদিক আব্দুল্লাহর স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চাওয়া নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ আরও প্রকট হয়। গত বছরের জুনে সিটি নির্বাচনের পর থেকে মোটামুটি এভাবেই চলছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতি। সেই ধারায় এবার নতুন জটিলতা বেধেছে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে। সাদিক গ্রুপ অখণ্ড থাকলেও প্রতিমন্ত্রী-মেয়র গ্রুপ তিন খণ্ড হওয়ার মুখে।

৮ মে অনুষ্ঠেয় উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী হয়েছেন। তাদের চারজনই আওয়ামী দলের পদধারী নেতা। তারা হলেন-সাদিক আব্দুল্লাহ গ্রুপের মনিরুল ইসলাম ছবি, আর প্রতিমন্ত্রী ও মেয়র গ্রুপের অনুসারী মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন, বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান মধু ।

মনিরুল ইসলাম ছবি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হলেও তার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হালিম রেজা মোফাজ্জেল নেমেছেন খান মামুনের পক্ষে। এটুকু ছাড়া তিনি সাদিক পক্ষের পুরো সমর্থন পাচ্ছেন। ইউপি চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে তিনি ভোটযুদ্ধে নেমেছেন।

এদিকে সমর্থনের ব্যাপারে প্রকাশ্য কোনো ঘোষণা দেননি প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক অথবা মেয়র খোকন। তবু তাদের সমর্থন পাওয়ার দাবি নিয়ে চলছে তিনজনের প্রচার-প্রচারণা।  প্রতিমন্ত্রী ও মেয়র দুজনেরই নেপথ্য সমর্থন পাওয়ার কথা বলছেন মাহমুদুল হক খান মামুন।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে প্রতিমন্ত্রী-মেয়র গ্রুপের একাধিক নেতা বলেন, মেয়র খোকনের সমর্থন যে খান মামুনের দিকে তা তার কথাবার্তা আর নানা ইঙ্গিতে স্পষ্ট। তবে এক্ষেত্রে দারুণ কৌশলী জাহিদ ফারুক শামিম। তিনি যে কাকে সমর্থন দিচ্ছেন তা পরিষ্কার নয়। নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ পুনর্মিলনীর এক অনুষ্ঠানে  সবাইকে পছন্দের আর কাছের বলে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী। এ বিষয়ে কথা বলতে প্রতিমন্ত্রীর ফোনে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। তবে খান মামুন বলেন, তারা দুজনই আমার নেতা। তাদের অনুমতি নিয়ে নির্বাচনে নেমেছি। এটা ঠিক যে, খানিকটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল, কিন্তু তা মিটে গেছে। প্রতিমন্ত্রীর পছন্দ একমাত্র আমি।

সাদিক আব্দুল্লাহ পক্ষের প্রার্থী হিসাবে পরিচিত মনিরুল ইসলাম ছবি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান বানাবে সাধারণ ভোটাররা। আমি জনগণের সমর্থনে বিশ্বাসী। তারাই তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে।

পুরো বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের এক প্রবীণ নেতা বলেন, ‘স্বতন্ত্রের শিরোনামে সারা দেশে এমনিতেই বিভক্ত হয়ে আছে আওয়ামী লীগ। সেই দ্বন্দ্ব কাটতে না কাটতেই এখন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে খণ্ড-বিখণ্ড হচ্ছে দল। নেতাকর্মীরা এভাবে বিভক্তির শিকার হলে দলের ঐক্য আর সাংগঠনিক শক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *