অর্ধশত কোটি টাকার রেলস্টেশন টিকটকারদের দখলে


ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা :বিলাসবহুল নান্দনিক রেলস্টেশন তবে মাত্র একটি ট্রেন থামে। কাজে আসছে না অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে বানানো বিলাসবহুল রেলস্টেশন।জানা গেছে, মাসে ব্যয় ৫ লাখ টাকা হলেও সেখানে আয় মাত্র কয়েক হাজার টাকা। ব্যাপক যাত্রী চাহিদা থাকলেও সারা দিনে ট্রেন থামে মাত্র একটি, তাও আবার লোকাল। এটি গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্ক রেলস্টেশন।ছয় বছর আগে উদ্বোধন হয় তবে লোকবল সংকটে এবং অবহেলা-অযত্নে নষ্ট হচ্ছে আধুনিক এ রেলস্টেশনটি। রেলওয়ে বলছে, কারিগরি জটিলতার কারণে স্টেশনটিতে সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। চরম পরিকল্পনাহীনতা বলে মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের।নান্দনিকতা আর আধুনিকতায় এটি দেশের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন রেলস্টেশন। এর নির্মাণ ব্যয় ৫০ কোটি টাকারও বেশি।প্রতিদিন গাজীপুর-সাভারের শিল্পাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গের ১০ থেকে ২০ হাজার যাত্রী পরিবহনের উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু হয় এ স্টেশনের। অথচ সুনসান নীরবতায় পড়ে আছে বিলাসবহুল এ স্টেশনটি।আধুনিক টিকিট কাউন্টার, সিগন্যাল পদ্ধতি, উন্নত মানের বিশ্রামাগার। সব কিছু থাকলেও লোকবল নেই বললেই চলে। কাগজে-কলমে এখানে কর্মরত আছেন ১০ জন স্টাফ; কিন্তু সকাল ৯টার পর আর থাকেন না কেউই।বিশাল এই স্টেশনে স্টপেজ একটি মাত্র লোকাল ট্রেনের, যার জন্য বরাদ্দ করা টিকিটের সংখ্যা মাত্র ২০টি। বিলাসী এ স্টেশনের মাসিক খরচ অন্তত ৫ লাখ টাকা হলেও রেলকর্মীরা বলছেন, এখান থেকে আয় হয় মাত্র কয়েক হাজার টাকা।সেবা না থাকায় টিন দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ভিআইপি বিশ্রামাগার, দেখভালের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে উন্নত কাচের দেয়াল, রঙিন ছাদসহ বিভিন্ন মূল্যবান স্থাপনা। স্থানীয়রা বলছেন, বিপুল যাত্রী চাহিদা থাকলেও ট্রেনের অভাবে স্টেশনটি পরিণত হয়েছে বিনোদন কেন্দ্রে। চলে গেছে টিকটকারদের দখলে।রেলওয়ে বলছে, কারিগরি জটিলতার কারণে স্টেশনটি থেকে পূর্ণসেবা দেয়া সম্ভব নয়। যাত্রীসেবা দিতে গেলে ব্যাহত হবে ট্রেন চলাচল।রেলের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, আন্তঃনগর ট্রেনের বিরতি দেয়া মানে স্টপেজ বাড়ানো। আমরা এখান থেকে সরে আসার চেষ্টা করছি। না হলে ট্রেনের সময় লাগে অনেক বেশি, অপারেশনেও সমস্যা তৈরি হয়।যদিও একমত হতে পারছেন না যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান। বুয়েটের এই শিক্ষক একে রেলের চরম পরিকল্পনাহীনতা বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এটা অনেকটা বিক্ষিপ্তিভাবে হয়েছে এবং অপরিকল্পিত উন্নয়নের একটা চূড়ান্ত উদাহরণ এ হাইটেক পার্ক রেলস্টেশন।
মূল ভবন নির্মাণে ৫০ কোটি টাকা খরচ হলেও, বিভিন্ন অবকাঠামো মিলিয়ে প্রকল্পের ব্যয় প্রায় শতকোটি টাকা। ২০১৬ সালে শুরু হয়ে নান্দনিক এ স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১৮ সালে।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়