বরিশালে যে কারনে আওয়ামীলীগ নেতাদের ভরাডুবি


মামুনুর রশীদ নোমানী,বরিশাল : বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।বিভাগীয় সদর হওয়ায় এ নির্বাচনটির গুরুত্বই আলাদা।সকলের নজর ছিল নির্বাচনের ফলাফলের দিকে।বিরোধীদল ও সরকারি দলের শরীকদের কোন প্রার্থী না থাকলেও চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের পদধারী চার নেতা প্রার্থী হয়েছিলেন। আওয়ামীলীগের এ চার প্রার্থীকে হারিয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হলেন প্রচার বিমুখ একজন প্রবীন শিক্ষক। ৮ এপ্রিল রাতে ভোটের ফলাফলের আগে বরিশাল সদরের লোকজন ছাড়া কেউ চিনতেন না তাকে। ফলাফলে বিজয়ী হওয়ায় একটি নাম এখন সবার মুখে মুখে। তিনি হলেন, আব্দুল মালেক হাওলাদার। বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ত্রিশ বছর শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত ছিলেন। অবসর নেয়ার পরে সমাজসেবা করে যাচ্ছেন। তবে তিনি সব সময়ই ছিলেন প্রচার বিমুখ শিক্ষক এ নেতা ।এছাড়া তার আরেকটি পরিচয় তিনি সমাজসেবক সালাহ উদ্দিন রিপনের চাচা।
তিনি প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন বরিশাল মহানগর যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন,আওয়ামীলীগ নেতা ও বিএম কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মাহবুবুর রহমান মধু,বরিশাল সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মনিরুল ইসলাম ছবি ও বরিশাল মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য এস এম জাকির হোসেনের সাথে।
যে কারনে আওয়ামীলীগ নেতাদের ভরাডুবি:
বরিশাল আওয়ামীলীগ এখন চার ভাগে বিভক্ত। একাধিক গ্রুপ।দ্বন্ধ-কোন্দল চরমে। আওয়ামীলীগের ভোট চারভাগে বিভক্ত হওয়ায় ভরাডুবি ঘটে পদধারী চার আওয়ামীলীগ নেতারই।
সুত্র জানায়,বরিশাল সিটি কর্পোরেশ নির্বাচনের সময় আওয়ামীলীগ ছিল দু ভাগে বিভক্ত। সম্প্রতি মেয়র ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সমর্থকরা আবার দু ভাগে বিভক্ত হয়।নিরপেক্ষ আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীরা পরে বিপাকে।বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ গ্রুপ সমর্থন দেয় মনিরুল ইসলাম ছবিকে।মেয়র খোকন সেরনিয়াত সমর্থন দেয় মাহমুদুল হক খান মামুনকে। পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী প্রকাশ্যে কাউকে সমর্থন না দিলেও মাহবুবুর রহমান মধু ও এস এস জাকির পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর আশির্বাদের কথা জানান দিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন।
বরিশালে আওয়ামীলীগের কোন্দলের কারনে ১৯ হাজার ৮০৭ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন আব্দুল মালেক হাওলাদার। অপরদিকে এস এম জাকির ১৭ হাজার ৪১৪ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হোন।১৪ হাজার ১৪১ ভোট পেয়ে মাহমুদুল হক খান মামুন হোন তৃতীয়।অপর দিকে ১১ হাজার ২৭০ ভোট পেয়ে চতুর্থ হোন মাহবুবুর রহমান মধু।পঞ্চম হোন মনিরুল ইসলাম ছবি ৭ হাজার ৮৬৮ ভোট পেয়ে।
আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ খান মামুন ও মধু এ দুজনের মধ্যে সমঝোতা করে একজন প্রার্থী হলে সেই বিজয়ী হতো। কারন খান মামুন ও মধু এ দুজনে ভোট পেয়েছেন ২৫ হাজার ৪১১ ভোট। কোন্দল আর দ্বন্ধেই হেরে গেছে আওয়ামীলীগের চার প্রার্থী।
উল্লেখ্য,বরিশাল সদর উপজেলায় মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ৭০ হাজার ৫০০টি। বাতিল ভোটের সংখ্যা ৩ হাজার ৯৩২টি। মোট ৭৪ হাজার ৪৩২টি ভোটগ্রহণ হয়েছে। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৯৫ হাজার ২৯৯। রিটার্নিং কর্মকর্তা ওহিদুজ্জামান মুন্সি বলেন, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করেছি। অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ হয়েছে।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়