ছাগলকাণ্ডের মতিউর পরামর্শ দিতেন সৎ থাকার: ঘুষ নিতেন না কোটির নিচে


ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : দীর্ঘ সময় ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন ছাগলকাণ্ডের আলোচিত মতিউর রহমান। সে সময় নানা পরামর্শ দিতেন তিনি। তিনি তার অফিসের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সেবা গ্রহীতাদের বলতেন-‘ শুনুন আপনারা সৎ থাকবেন। সততার চেয়ে বড় শক্তি আর কিছুই নেই। আপনারা সৎ থাকলে আমায় পাশে পাবেন। আর অসৎ উপায়ে এগুলে আমায় পাবেন না। আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হলে সৎ হতে হবে, যার বিকল্প নেই। আর আমি যদি কখনো এর বিপরীত কোনো প্রমাণ পাই তাহলে কঠিন ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’
ঠিক এভাবেই পরামর্শ আর সময়ে সময়ে শাসাতেন ভাইরাল হওয়া মতিউর। অন্যকে সৎ থাকার পরামর্শ দিলেও নিজে ও তার পরিবারের নামে গড়েছেন শত কোটির অবৈধ সম্পত্তি।
কেবল ঢাকায় তার রয়েছে ১০টির বেশি ফ্ল্যাট। আর ঢাকার বাইরে গাজীপুর, সাভার, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও নরসিংদীতেও রয়েছে অঢেল সম্পত্তি। যেখানে ডুপ্লেক্স বাড়ির পাশাপাশি, পার্ক, রিসোর্টও রয়েছে। এ ছাড়া পড়ে থাকা জমির পরিমাণও কম নয়।অন্যদিকে মতিউর নিজের নামে অধিকাংশ সম্পত্তি না করে তা স্ত্রী আর সন্তানদের নামে করেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রয়ে স্ত্রী-সন্তানদের নামে লাখ লাখ শেয়ার। এ ছাড়া রয়েছে নামি ব্রান্ডের দামী ৪ গাড়ি। শালক থেকে ছোট ভাই বাদ যাননি শ্বাশুড়িও। সবাইকেই বানিয়েছেন বিত্তশালী। যার মূল কারিগর ছাগলকাণ্ডের মতিউর।
কোটির নিচে ঘুষ নিতেন না মতিউর………..
সততার ফেরিওয়ালা ছিলেন সদ্য অব্যাহতি পাওয়া রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান। যিনি ছাগলকাণ্ডে এসেছেন আলোচনায়, হয়েছেন সমালোচিত। প্রকাশ পেয়েছে তার নানা অনিয়ম আর অবৈধ সম্পদের পাহাড়ের চিত্র। আর সেখান থেকেই প্রশ্ন উঠেছে সরকারি কর্মকর্তা হয়ে এত সম্পদ কিভাবে হলো মতিউর রহমানের।
সেই সূত্রে তার সঙ্গে কাজ করা একাধিক কর্মকর্তা ও তার সংশ্লিষ্ট এক আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, মতিউর সব বিষয়ে উৎকোচ বা ঘুষ নিতেন না। কেবল বড় অর্থ সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি থেকে গ্রহণ করতেন ঘুষ। যা সর্বনিম্ন এক কোটি টাকা। এর নিচে তিনি ঘুষ নিতেন না বলেও জানায় সূত্র।
সূত্র বলছে, কমিশনার থাকা অবস্থা থেকেই তাকে (মতিউরকে) তিনি ভালো করে চেনেন। এ সময়ে মতিউর বড় বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করতেন। এবং তার টার্গেট কখনো মিস হতো না বলেও জানায় সেই সূত্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, মতিউর রহমান ব্যবসায়ীদের পেছনে লেগে থাকতেন। যতক্ষণ পর্যন্ত তার কাছে টাকা না পৌঁছায় ততক্ষণ পর্যন্ত মুক্তি মিলত না। আর টাকা না পেলে সব শেষ করে দিতেন তিনি।
মতিউর সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, তিনি অন্যকে সততার কথা বললেও নিজে ছিলেন পুরোদমে ভণ্ড। কথা ও কাজ বিপরীতমুখী। এভাবে ব্যবসায়ীদের রাজস্ব আদায়ের নামে হয়রানি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে নিজের করে নিয়েছেন রাজস্ব বোর্ড থেকে অব্যাহতি পাওয়া কর্মকর্তা মতিউর রহমান।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়