ঘুষ ছাড়া কাজ করেন না ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা


ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আলমগীর আলম। ভূমি-সংক্রান্ত বিষয়ে টাকা ছাড়া করেন না কোনো কাজ। সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ তাকে ঘুষ দিয়েই কাজ হাসিল করতে হয় এমন অভিযোগ উঠেছে আলমগীর আলমের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, তিনি ঘুষ নিয়েও সঠিক সময়ে কাজ না করে হয়রানি করছেন বলে এক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন।
এদিকে আলমগীরের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ রয়েছে একাধিক। গত ২৪ জুন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের খেরুদিয়া গ্রামের আবদুর রহমান বকাউলের স্ত্রী আমেনা বেগম লাকী সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ায় লিখিত অভিযোগ করেন। গত বৃহস্পতিবার বিকালে ওই ইউনিয়নে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হয়। সেবা গ্রহীতার অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় অভিযুক্ত কর্মকর্তার সঙ্গে। তবে এসব অভিযোগ সঠিক নয় বলে জানান অভিযুক্ত আলমগীর।
অভিযোগে আমেনা বেগম উল্লেখ করেন, তার স্বামীর নামীয় ৯ শতক জমি খাজনা দাখিল অনলাইন করার জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান। কিন্তু ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আলমগীর আলম তাকে কাজটি করে না দিয়ে টালবাহানা করেন। তিনি এই কাজের জন্য ওই কর্মকর্তাকে ২ হাজার ৫০০ টাকা দিলেও সেবা পাননি।
পরবর্তীতে গেলে আলমগীর আলম ও তার অফিসের ঝাড়ুদার তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এসব কারণে তিনি প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেন। আমেনা বেগম বলেন, এই কর্মকর্তার কাছে সেবার জন্য গেলে সবাইকে তিনি হয়রানি করেন।
তিনি প্রকাশ্যে বলেন, সরকার যে কয় টাকা বেতন দেয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। টাকা না দিলে আমি কোনো কাজ করব না। আমি নিজে একজন ভুক্তভোগী এবং যারা তার কাছে গিয়ে হয়রানির শিকার হন সবার দাবি তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এই বিষয়ে অভিযুক্ত ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর আলম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সত্যতা যাচাই করছে। অভিযোগের আলোকে আমি ও আমেনা বেগম লাকী বক্তব্য দিয়েছি। আপাতত এই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তিনি আরও বলেন, সেবা নিতে আসা আমেনা বেগম লাকী যেসব অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়।
উনি যখন আমার কাছে সেবা নিতে এসেছেন আমরা তখন অফিসের নিজস্ব কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আর ওনার কাগজপত্র ও মোবাইল নম্বর নিয়ে সমস্যা ছিল। সে জন্য কাজটি করতে দেরী হয়েছে। তবে আমি ওনার কাজ সম্পন্ন করেছি।
অভিযোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসক আমলে নেওয়ার পর উভয় পক্ষকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। অভিযোগকারী আমেনা বেগম লাকী ও অভিযুক্ত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আলমগীর আলমের সঙ্গে সরাসরি নিজ দফতরে কথা বলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, অভিযোগকারী আমেনা বেগম লাকী বলেছেন তাকে হয়রানি ও নাম জারির জন্য অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়েছে। আর আলমগীর আলম তা অস্বীকার করেছেন। মূল সত্যটা বেরিয়ে না আসায় এই বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমি তাদের বক্তব্যের বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানাব। এরপর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়