নরসিংদীতে সংঘর্ষ: এমপির নাতিসহ আ.লীগের ৬ নেতা নিহত


ইত্তেহাদ নিউজ,নরসিংদী : নরসিংদীতে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ছয় নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে আন্দোলনকারীরা। রোববার দুপুরে সদর উপজেলার মাধবদী বড় মসজিদের সিঁড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-নরসিংদী-১ সদর আসনের এমপি নজরুল ইসলাম হিরুর (বীরপ্রতীক) নাতি ও সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া (৪৩), চরদিগলদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন (৪০), তার বডিগার্ড কামাল হোসেন (৩৮), নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই মৎসজীবী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন (৩৮), মহিসাসুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জলিল, চরদিগলদী ইউনিয়নের সজিব এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১ জন।
জানা যায়, নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে কয়েক হাজার আন্দোলনকারী লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল বের করে। একই সময় মাধবদী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হাইস্কুল মাঠ থেকে একটি মিছিল বের করে। একপর্যায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পালটাধাওয়া শুরু হয়। একপক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ্য করে গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় ৬ আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে আরও লোকজন এসে আওয়ামী লীগ নেতাদের ধাওয়া দেয়। দৌড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মাধবদী বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম দিকের বড় মসজিদে আশ্রয় নেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ছয় নেতাকে মসজিদের সিঁড়িতে ফেলে পিটিয়ে হত্যা করে।
নরসিংদী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাধবদী হাইস্কুল প্রাঙ্গণ থেকে আমরা একটি মিছিল বের করি। ওই সময় মাধবদী পৌর বিএনপি সভাপতি আমানউল্লাহর নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা অতর্কিত আমাদের মিছিলে হামলা করে। তারা আমাদের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করলে আমারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ি। আমাদের কিছু লোক মাধবদী বাজার বড় মসজিদের ভেতরে আশ্রয় নেন। বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা সেখানে গিয়ে মসজিদের ভেতরে ঢুকে আমার আপন ছোট ভাই দেলোয়ার, সদর আসনের এমপির নাতি মনির, ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনসহ ৬ জনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের তো মারামারির প্রস্তুতি ছিল না। তাই তারা আমাদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটালে আমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই। মসজিদের ভেতরে ঢুকে এত বড় নৃশংস ঘটনা ঘটাতে একবারও তাদের বুক কাঁপেনি। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ছয় নেতা নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। স্বজনরা লাশ বাড়িতে নিয়ে গেছেন। আমরা তাদের অনুরোধ করেছিলাম লাশগুলো ময়নাতন্তের জন্য থানায় দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা বাড়িতে নিয়ে যান। বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।’
এদিকে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ আন্দোলনকারীদের মধ্যে সুমন মিয়া, সোহেব ও আল আমিনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর মীর জাহাঙ্গীর নামে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনারপর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর জেলখানা মোড়ে আন্দোলনকারীরা জমায়েত হয়। এরপর তারা মহাসড়ক দখল করে বিক্ষোভ করে। এতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়