সংবাদ আন্তর্জাতিক

ব্রিটেনে স্বাগত নন হাসিনা, অস্বস্তিতে বোনঝি টিউলিপ

hasina al
print news

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্কদেশ ছেড়ে পালানোর পর আপাতত ভারতে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোনা যাচ্ছিল, ভবিষ্যতে ভারত থেকে ব্রিটেনে পাড়ি দেবেন তিনি। বোন রেহানার বাড়ি রয়েছে লন্ডনে। ভবিষ্যতে সেখানেই পাকাপাকি ভাবে থাকবেন। কিন্তু ব্রিটেনে আশ্রয় দিতে রাজি নয় এ দেশের রাজনৈতিক মহলের একাংশ। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লেবার এমপি রূপা হক স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, ব্রিটেন সরকারের উচিত নয় হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া। বিদেশমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির মুখেও একই সুর।

সম্প্রতি একটি ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রূপা হকের মন্তব্যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। তাঁর সতীর্থ, আর এক বাংলাদেশি লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে হাসিনার বোন রেহানার কন্যা। মাসিকে নিয়ে এ হেন মন্তব্যে অসন্তুষ্ট টিউলিপ। বাংলাদেশ ছেড়ে পালানোর সময়ে হাসিনার সঙ্গেই ছিলেন তাঁর বোন শেখ রেহানা। দু’জনে এখনও একসঙ্গে আছেন। রেহানা সম্ভবত শীঘ্রই তাঁর লন্ডনের বাড়িতে ফিরবেন। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, দিদি হাসিনাকে অনুমতি দেবে না কিয়ের স্টার্মারের সরকার।

সূত্রের খবর, ব্রিটেনে আশ্রয় চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন হাসিনা। কিন্তু বিদেশ দফতর থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি। ব্রিটেনের শাসক দল লেবার পার্টি হাসিনাকে আশ্রয় দিতে চায় না। তাদের বক্তব্য, হাসিনাকে আশ্রয় দিলে দেশে উত্তেজনা ছড়াবে।

ব্রিটেনে কমপক্ষে ৭০ হাজার বাংলাদেশির বাস। তাঁদের অধিকাংশই হাসিনা-বিরোধী। অনেকে আবার হাসিনার প্রতিপক্ষ খালেদা জিয়ার সমর্থক। খালেদা জিয়ার ছেলে তারিক রহমান দেশ ছেড়ে ব্রিটেনে নির্বাসনে রয়েছেন। হাসিনার পদত্যাগের দিন রীতিমতো উৎসব হয়েছে লন্ডনের ‘ইস্ট এন্ড’-এর ব্রিক লেনে। টাওয়ার হ্যামলেটের আশপাশের অঞ্চলেও লোকে ‘হাসিনা-মুক্ত স্বাধীন দেশ’ উদ্‌যাপন করেছেন। এ অবস্থায় ব্রিটিশ সরকার চায় না হাসিনাকে দেশে এনে জনমানসে ক্ষোভ বাড়াতে।

রূপা সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাঁর ফোনের ইনবক্স সবসময়েই বাংলাদেশিদের মেসেজে ভরে রয়েছে। সকলেই দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। হাসিনার পদত্যাগের দিন রূপা নিজের এক্স হ্যান্ডলে লিখেছিলেন, ‘ওরা চলে গিয়েছে! যারা সমালোচনা গ্রহণ করতে পারে না, যারা নির্বাচন করতে দেয় না, টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়, এমন স্বৈরাচারী শাসকেরা চলে গিয়েছে। ভারতে লুকিয়ে রয়েছে। এই আতঙ্কের একনায়কতন্ত্র শেষ হয়েছে, আমি খুব খুশি।’

শুধু রূপা হক নন, বিদেশমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিও হাসিনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। তিনি বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘গত কয়েক সপ্তাহে যা ঘটেছে, তার পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ রাষ্ট্রপুঞ্জ-পরিচালিত তদন্ত বাংলাদেশের মানুষের প্রাপ্য। বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্র পাক।’’

এ অবস্থায় অস্বস্তিতে হাসিনার বোনঝি টিউলিপ। তিনি হ্যাম্পস্টেড কেন্দ্রের প্রতিনিধি। এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের বেশির ভাগই শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ। টিউলিপ বেশ জনপ্রিয় নিজের কেন্দ্রে। জনপ্রিয়তার জন্য স্টার্মারের মন্ত্রিসভাতেও জায়গা পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও হাসিনার সঙ্গে পারিবারিক যোগ নিয়ে বেশ চাপে তিনি। একটি সংবাদপত্রে লেখা হয়েছে, টিউলিপ উত্তর লন্ডনে ২০ লক্ষ পাউন্ড মূল্যের যে পাঁচ-কামরার বাড়িতে থাকেন, সেটির মালিক আব্দুল করিম নামে এক ধনকুবের। করিম হলেন হাসিনা-ঘনিষ্ঠ ও আওয়ামী লীগের সদস্য। টিউলিপের দাবি, তিনি বাজারদর অনুযায়ী ভাড়া দিয়ে থাকেন। তাঁর বাসস্থানের কথা পার্লামেন্ট জানে। কিন্তু তাতে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করা যায়নি। তা ছাড়া, বাংলাদেশে আন্দোলন চলাকালীন টিউলিপ একটি কথাও বলেননি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও ভাল সম্পর্ক নয় টিউলিপের। গত বছর তিনি যখন ওয়েস্টমিনস্টারে এসেছিলেন, রূপা হক ও আর এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুশানারা আলি তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু টিউলিপকে সেই ছবিতে দেখা যায়নি।

 

সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *