বাংলাদেশ বরিশাল

সাবেক ওসি খায়ের কেনেন শ্বশুরের নামে কোটি টাকার সম্পত্তি

news 1725012259707
print news

ইত্তেহাদ নিউজ,পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর মহিপুর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মো. আবুল খায়ের। ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ১ জুন পর্যন্ত মহিপুর থানার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এ সময় নানান ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ঝামেলা এড়াতে নিজের নামের পরিবর্তে শ্বশুরের নামে কেনেন প্রায় ৪ কোটি টাকার সম্পত্তি।

কুয়াকাটা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কম্পিউটার সেন্টার এলাকার ৬০ শতাংশ জায়গায় সীমানাপ্রাচীর করা। সামনে সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে রেজিস্ট্রি বায়না সূত্রে এই জমির মালিক মো. এনায়েত করিম। এনায়েত করিম সাবেক ওসি খায়েরের শ্বশুর। সাইনবোর্ডে আরও লেখা রয়েছে জেএল নম্বর ৫৭, কুয়াকাটা মৌজা, বিএসখতিয়ান নম্বর ১২৮৪, বিএস দাগ ১২২৯। সাইনবোর্ডে জমির পরিমাণ উল্লেখ না থাকলেও বায়না রেজিস্ট্রি দলিল অনুযায়ী জমির পরিমাণ ৬০ শতাংশ, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা।

জমির এক অংশের মালিক হালিম মোল্লা জানান, এই সম্পত্তিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সময় কোনো অর্থ পরিশোধ করেননি খায়ের। তার জমির পাশের জমির মালিককে জেল হাজতে পাঠিয়ে জমি দখল করে সেই জমিও সীমানাপ্রচীর দিয়ে আটকে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী হালিম মোল্লা বলেন, দেড় বছর আগেও পশ্চিম কুয়াকাটা এলাকায় সড়ক লাগোয়া ৭ শতাংশ জমির বাড়িতে বসবাস করতেন তিনি এবং তার পরিবার। ২০২৩ সালের কোনো এক রাতে তৎকালীন মহিপুর থানার ওসি খন্দকার মো. আবুল খায়ের হালিম মোল্লাকে একটি মামলায় স্বাক্ষী দেওয়ার কথা বলে তার ছেলেসহ থানায় নিয়ে আসেন। পরের দিন সকালে তাদের একটি মামলায় হাজতে পাঠান। সাত দিন হাজত বাস শেষ করে বাড়ি ফিরে দেখেন কোনো অর্থ পরিশোধ না করে তার বাড়ির ওই সম্পত্তির চার পাশে উচ্চ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে জমি দখলে নেয় ওসি। পরবর্তীতে সেখানে একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করে সেখানে ওই জমির মালিক হিসেবে ওসি খায়েরের শ্বশুর মো. এনায়েত করিম নাম লিখে দেন। হালিম মোল্লা তার বাড়িতে পরিবারসহ প্রবেশ করতে চাইলে মামলা দেওয়ার হুমকি দেন ওসি খায়ের।

স্থানীয় বাসিন্দা শুকুর মাঝি জানান, ওসি খায়ের তার শ্বশুরকে উপহার দেওয়া সম্পত্তিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সময় কোনো অর্থ পরিশোধ না করে হালিম মোল্লা নামের জমির মালিককে জেল হাজতে পাঠন। সাবেক মন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ে চলতেন তিনি। কেউ কিছু বলার সাহস পেতো না তাকে।

সাবেক এই কর্মকর্তা মহিপুর থানায় কর্মরত অবস্থায় প্রকাশ্যে কুয়াকাটায় ট্যুরিজম সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ারও অভিযোগ করেছেন অনেক ভুক্তভোগী। দাবিকৃত অর্থ না দিলে চলতো মামলা দেওয়ার হুমকি।

কুয়াকাটা ফিশ ফ্রাই মার্কেটের সভাপতি মো. কাওসার বলেন, ওসি খায়ের সাহেব একজন অসৎ মানুষ ছিলেন। মহিপুর থানায় কর্মরত থাকাকালীন সময়ে তিনি মাঝে মাঝেই মেহমান নিয়ে আমার এখানে এসে মাছ খেতেন। টাকা দিতেন না কখনোই। আমি তার কাছে একবার টাকা চাওয়ায় তিনি আমাকে হুমকি দেন, আমি বিএনপির একজন কর্মী, এটা জানার পরে তিনি আমাকে মামলা দেওয়ার ভয় দেখান। একবার তিনি আমাকে থানায় ডেকে নিয়ে টাকা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি আমার দোকানের বৈদ্যুতিক লাইন কেটে দেওয়ার ব্যাবস্থা করেন। পরে টাকা দিয়ে সংযোগ আবারও চালু করি।

সাবেক এই ওসির দুর্নীতির সরজমিন তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এলাকাবাসী এবং ভুক্তভোগীদের।এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে সাবেক ওসি খায়েরের ব্যাক্তিগত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। বর্তমানে ঝালকাঠি সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি।

পটুয়াখালী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আহমাদ মাঈনুল হাসান বলেন, সাবেক ওসি মহিপুর খন্দকার মো. আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশের কাছে কোনো ধরনের অভিযোগ নেই। কেউ যদি অভিযোগ দেয়, তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *