রমজানের স্বাস্থ্যকর সেরা ৭টি পানীয়


ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক : রমজান শুধুমাত্র ধর্মীয় উপবাসের মাস নয়, এটি পরিবার ও প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানোর, আত্মশুদ্ধির এবং আধ্যাত্মিক উন্নতিরও একটি বিশেষ সুযোগ। তবে দীর্ঘ সময় ধরে রোজা রাখার ফলে শরীরে পানিশূন্যতা ও অপুষ্টির ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তাই সঠিক প্রস্তুতি ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে সুস্থ থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সেহরি ও ইফতারের সময় যথাযথ পুষ্টি ও পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ করা রোজাদারের জন্য অপরিহার্য। ইফতারের সময় শরীরকে পুনরুজ্জীবিত ও হাইড্রেটেড রাখার জন্য কিছু বিশেষ পানীয় রয়েছে, যা শরীরের জন্য উপকারী।
রমজানের জন্য সেরা সাতটি পানীয় নিচে তুলে ধরা হলো:
১. জাল্লাব
জাল্লাব সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয়। বিশেষ করে রমজান মাসে এটি বেশিরভাগ ঘরে ঘরে একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে। এই পানীয়টি খেজুর, আঙুরের মোলাসেস (গোল্ডেন সিরাপ) ও গোলাপজল দিয়ে তৈরি করা হয় এবং প্রচুর বরফ মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়, যা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এতে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে, কৃত্রিম চিনি থাকে না এবং এটি সহজেই হজমযোগ্য।
২. নারকেলের পানি
দীর্ঘ সময় ধরে রোজা রাখার পর যারা পানিশূন্যতা অনুভব করেন, তাদের জন্য নারিকেলের পানি একটি আদর্শ বিকল্প। এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ও কোনো কৃত্রিম সংযোজন ছাড়াই বিশুদ্ধভাবে পান করা যায়। নারিকেলের পানিতে প্রচুর পরিমাণে ইলেক্ট্রোলাইট, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে, যা শরীরের পানিশূন্যতা দূর করে। পাশাপাশি, এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না, ফলে সুস্থতার জন্য এটি একটি ভালো বিকল্প।
৩. আমার আল দিন
এই পানীয়টি মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় রমজানের পানীয়গুলোর মধ্যে একটি। এর মূল উপাদান হলো শুকনো এপ্রিকট বা এপ্রিকট পেস্ট।
আমার আল-দিন হজমের জন্য উপকারী, বিপাকক্রিয়াকে উন্নত করে এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে, যা শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে।
৪. খেজুর ও দুধ
খেজুর সাধারণত মাগরিবের আজানের পর রোজা ভাঙার জন্য প্রথম খাবার হিসেবে খাওয়া হয়। অনেকেই ঐতিহ্যগতভাবে খেজুরকে একদিন আগে দুধে ভিজিয়ে রাখেন, যা ইসলামের নবী মোহাম্মদ (সাঃ)-এর সুন্নাত হিসেবে বিবেচিত হয়।
অনেকে খেজুর আলাদাভাবে খেয়ে সঙ্গে দুধ পান করতেও পছন্দ করেন। এটি সহজ এবং পুষ্টিকর একটি উপায় যা শরীরে শক্তি যোগায়।
৫. খারুব বা ক্যারব জুস
খারুব, যা ক্যারব জুস নামেও পরিচিত, মূলত মিশরে জনপ্রিয় একটি পানীয়। এটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রমজানে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করা হয়।
খারুব পানীয় উচ্চমাত্রায় ফাইবার, প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এর ঘনত্ব অন্যান্য পানীয়ের তুলনায় বেশি হলেও এটি অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর।
৬. ফলের রস
ফলের রস সুস্বাদু, সহজে প্রস্তুত করা যায় এবং প্রায় সবার জন্য উপযোগী। পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন ফল ব্যবহার করে নিজস্ব স্বাদের পানীয় তৈরি করা যায়।
এটি ঠান্ডা পরিবেশন করলে গরমের মধ্যে রোজার জন্য আরামদায়ক হয়।
৭. পানি
সর্বোত্তম, সবচেয়ে কার্যকর ও সবচেয়ে সহজলভ্য পানীয় হলো পানি। রোজার সময় শরীরের পানির ভারসাম্য ঠিক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য পানীয় থাকা সত্ত্বেও, পানি রোজার সময় অপরিহার্য। ইফতার ও সেহরিতে যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করা নিশ্চিত করা উচিত, যাতে শরীর হাইড্রেটেড থাকে এবং সুস্থ থাকে।
রমজানে সুস্থ থাকার জন্য উপযুক্ত খাবার ও পানীয় গ্রহণ করা জরুরি। তাই সুস্থ থাকার জন্য সঠিক পুষ্টির পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করাও নিশ্চিত করা উচিত।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।