ধর্ম

অভয়নগরে সাড়ে পাঁচশ বছরের প্রাচীন স্থাপত্য

JESSOR opy 67e1f713e0ce8
print news

ইত্তেহাদ  নিউজ ডেস্ক : যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া বাজার থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শুভরাড়া গ্রাম। এ গ্রামে ভৈরব নদের তীরে প্রায় সাড়ে ৫শ বছর আগে নির্মিত হয় এক গম্বুজ ও চার মিনারবিশিষ্ট খানজাহান আলী (রহ.) মসজিদ। মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন মুসলিম ধর্মপ্রচারক খানজাহান আলী (রহ.)। কালের বিবর্তনে আজও টিকে আছে প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন মসজিদটি। এলাকার মুসল্লিরা নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন এ মসজিদে। রোজার সময় তারাবির নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। বর্তমানে মুসল্লির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় জায়গা সংকুলান হয় না। ত্রিপল টাঙিয়ে নামাজ আদায় করেন এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় মসজিদটি সৌন্দর্য হারাচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, সংস্কারের পাশাপাশি জায়গা সম্প্রসারণ করা জরুরি। মসজিদটি বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে রয়েছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৫ শতকের শেষদিকে খানজাহান আলী (রহ.) তার অনুসারী ও সৈন্যবাহিনী নিয়ে যশোরের বারবাজার এলাকা থেকে ভৈরব নদের তীর ধরে পূর্বদিকে এগিয়ে যান। চলতি পথে তিনি রাস্তা নির্মাণ, দিঘি খনন ও ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে মসজিদ স্থাপন করেন। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক সতীশচন্দ্র মিত্রের যশোর ও খুলনার ইতিহাস গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে ‘খলিফাতাবাদ’ অধ্যায়ে খানজাহান আলী (রহ.) কর্তৃক নির্মিত মসজিদের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। লেখকের বর্ণনা অনুযায়ী, খানজাহান আলী (রহ.) নড়াইল জেলার দিকে না গিয়ে ভৈরব নদের কূল ধরে অভয়নগরের শুভরাড়া গ্রামে পৌঁছান। খ্রিষ্টীয় ১৪৪৫ থেকে ১৪৫৯ সালের মধ্যে কোনো একসময় তিনি মসজিদটি নির্মাণ করেন। এছাড়া পার্শ্ববর্তী বাশুয়াড়ি গ্রামে মাত্র এক রাতের মধ্যে একটি দিঘিও খনন করেন।

শুভরাড়া গ্রামের গাছগাছালি ও বাঁশবাগানের মাঝে লাল পোড়া মাটির রঙের মসজিদের মাঝামাঝি একটি গম্বুজ ও চার কোণে চারটি মিনার রয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের লেখা অনুযায়ী, বর্গাকার মসজিদটির অভ্যন্তরীণ পরিমাপ ৫.১৩ বর্গমিটার। এর চার কোনায় ৪টি অষ্টমকোনাকৃতি টারেট রয়েছে। মসজিদের ভেতরের আয়তন ১৬ ফুট ১০ ইঞ্চি বাই ১৬ ফুট ১০ ইঞ্চি। উচ্চতা ২৫ ফুট। বাইরের মাপ এক মিনারের মধ্যবিন্দু থেকে অন্য মিনারের মধ্যবিন্দু পর্যন্ত ২৮ ফুট ৬ ইঞ্চি। মসজিদের উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণে ৩টি দরজা আছে। পূর্বদিকে সদর দরজা ও এর খিলান ১১ ফুট উঁচু এবং ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি প্রস্থের। বিশেষ পদ্ধতিতে নির্মিত মসজিদে ছোট-বড় সব ধরনের ইট রয়েছে।

এলাকার প্রবীণ লোকজন জানান, প্রায় ১০০ বছর আগে মসজিদের ছাদ ভেঙে পড়ে। পরে এলাকাবাসীর উদ্যোগে গোলপাতার ছাউনি দিয়ে নিয়মিত নামাজ আদায় করা হতো। পরে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মসজিদটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। পরবর্তী সময়ে আবারও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে এ মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ দেখতে আসছেন।

শুভরাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রাচীন এ মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা বাড়ছে। সেই তুলনায় আয়তন বাড়েনি। ঐতিহ্যবাহী মসজিদটির মূল নকশা ঠিক রেখে সংস্কার ও জায়গা সম্প্রাসরণ করা দরকার।

 

সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায় ।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.