সংবাদ এশিয়া

ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে উত্তেজনা, আতঙ্কে মানুষ

Pakistan
print news

অনলাইন ডেস্ক : কাশ্মীরের পাহাড়ঘেরা প্রান্তরজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে যুদ্ধের আশঙ্কা। পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে। প্রতিশোধের হুমকি, সেনা মোতায়েন, গোলাবর্ষণের সম্ভাবনা সব মিলিয়ে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোয় এখন যেন এক অঘোষিত যুদ্ধ পরিস্থিতি। সীমান্তের দুই পারেই মানুষ রাত কাটাচ্ছেন আতঙ্কে। জেগে থাকছেন অনিশ্চয়তার মধ্যে। যুদ্ধাতঙ্কে চুরান্ডা থেকে চকোঠি, সাইন্থ থেকে ত্রেওয়া-প্রতিটি সীমান্তবর্তী গ্রামের ঘরে ঘরেই এখন গড়ে উঠছে বাঙ্কার। জরুরি রসদ মজুত করছেন সেখানেই। প্রতিদিনের জীবনযাপন চালিয়ে যাচ্ছেন ভয় আর দুশ্চিন্তার ছায়ায়। রয়টার্স।

যুদ্ধ এখনো শুরু হয়নি। কিন্তু তার আগেই যুদ্ধের প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছেন সীমান্তের দুই পাশের বাসিন্দারা। উরি সেক্টরের কাছাকাছি ভারতীয় গ্রাম চুরান্ডার মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ায় নিজ বাড়িতেই বাঙ্কার তৈরি করছেন তারা। গ্রামটিতে ১,৫০০ জন মানুষের জন্য মাত্র ছয়টি বাঙ্কার রয়েছে।

স্থানীয় যুবক আবদুল আজিজ বলেছেন, ‘যুদ্ধ শুরু হলে আমরা কোথায় যাব? এই গ্রাম সবথেকে বেশি বিপদে।’ এজন্য বাড়িতেই বাঙ্কার তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের চাকোঠি গ্রামেও একই দৃশ্য। গ্রামবাসীরা নিজেদের বাড়িতেই বাঙ্কার বানিয়ে নিচ্ছেন। ফয়জান আনায়াত নামে এক যুবক জানিয়েছেন, ‘গোলাগুলির শব্দ শোনা গেলেই সবাই বাঙ্কারে ঢুকে পড়েন।’

অন্যদিকে, ৭৩ বছর বয়সী মোহাম্মদ নাজির বলেছেন, ‘আমরা কিছুতেই ভয় পাই না। আমাদের প্রতিটি সন্তান যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।’ জম্মু অঞ্চলের সীমান্তবর্তী সাইন্থ গ্রামে বেশিরভাগ পরিবার নিরাপদ স্থানে সরে গেছে। ওই গ্রামের স্কুল শিক্ষক বিক্রম সিংহ বলেছেন, ‘১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধের সময়ও আমাদের গ্রামে গোলাবর্ষণ হয়েছিল। তখনও আমরা ভয় পেয়েছিলাম, এখনো ভয় পাচ্ছি।’ জম্মুর আরেকটি সীমান্তবর্তী গ্রাম ত্রেওয়াতেও ব্যাপক তৎপরতা দেখা গেছে।

গ্রামটির বাসিন্দারা বলেছেন, যদিও এখনো পরিস্থিতি শান্ত। তবুও আমরা বাঙ্কার পরিষ্কার করছি এবং জরুরি প্রস্তুতি নিচ্ছি। গ্রামের বাসিন্দা বলবীর কউর বলেছেন, ‘বহুবার মর্টার শেল পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, তাই এখন থেকেই আমরা প্রস্তুত হচ্ছি।’

উলে­খ্য, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত তিন হাজার ৩২৩ কিলোমিটার বিস্তৃত। এর মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরের ৭৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৩৪ কিলোমিটার প্রশস্ত রয়েছে সীমান্ত। যাকে সবচেয়ে বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়। ১৯৪৯ সালে জাতিসংঘের তরফে একে ‘সিজফায়ার লাইন’ বা যুদ্ধবিরতি রেখা হিসাবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু দুই দেশই সিমলা চুক্তির অধীনে একে নিয়ন্ত্রণ রেখা বা এলওসি নাম দেয়।

জম্মু, সাম্বা, কাঠুয়া সংলগ্ন সীমান্তকে ভারত ‘ইন্টারন্যাশানাল বর্ডার’ বলে আখ্যা দেয় আর পাকিস্তান সেটাকে ‘ওয়ার্কিং বাউন্ডারি’ বলে। সাম্বা, কাঠুয়া, জম্মু, আরএস পুরা, রাজৌরি এবং জম্মুর পুঞ্চে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে অবস্থিত বসতি অঞ্চলে ১৯ হাজারেরও বেশি পাকা ভ‚গর্ভস্থ বাঙ্কার নির্মাণ করে ভারত সরকার। এখন উত্তেজনা এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে যে এখানকার মানুষ সমস্ত কাজ ছেড়ে এখন বাঙ্কার পরিষ্কার করছেন।

 

সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায় ।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.