বাংলাদেশ বেতার বরিশাল কেন্দ্রে ৫৪ জন নাট্যশিল্পী তালিকাভুক্তি বিষয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য


বাংলাদেশ বেতার বরিশাল কেন্দ্রে নাট্যশিল্পী তালিকাভুক্তি বিষয়ে ২৯ মে ২০২৫ তারিখ বিভিন্ন দৈনিকে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত সমালোচনায় মনে হচ্ছে উত্তীর্ণ ৫৪ জন সকলে অযোগ্য আর অনুত্তীর্ণ ৬৫ জন সকলেই যোগ্য! অধিকতর যোগ্যদের বাদ দিয়ে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও বিশেষ বিবেচনায় যেন অযোগ্যদের উত্তীর্ণ করা হয়েছে!! গুরুতর অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি হিসেবে গণ ও সামাজিক মাধ্যমে যা উল্লেখ করা হয়েছে তা হলো চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর কয়েকজনের নাম অংশগ্রহণকারীদের তালিকায় থাকা এবং তাদের দুজন, ইতোপূর্বে তালিকাভুক্ত আবৃত্তি- সংগীতশিল্পী, সংবাদপাঠক, ঘোষক, কর্মকর্তার স্ত্রী ও কর্মচারী অডিশনে উত্তীর্ণ করা। এ ধরনের সংবাদ ও সমালোচনায় সম্প্রচার ও অডিশন নীতিমালা, প্রকৃত সত্য ও কার্যপদ্ধতির কোনো প্রতিফলন নেই।
চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের কয়েকজনকে অডিশনে অংশগ্রহণ করতে দেয়ার কারণ হলো, তারা অভিযোগ করেন যে, তারা ১ বছর আগে আবেদন করেছেন, কিন্তু তালিকায় নাম নেই। এছাড়া তারা অনেকদিন ধরে কেন্দ্রের বিভিন্ন বিষয়ের শিল্পী। তাই তারা নতন করে আবেদন করেন এবং আবেদনকারীদের তালিকায় তাদের নাম উঠানো হয়। অডিশন ও অন্যান দাপ্তরিক কাজের চাপে সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করা যায়নি যদিও তা ২৮ তারিখ প্রকাশ করা হয়। সংশোধিত তালিকা বিলম্বে প্রকাশ ব্যতীত আবেদনসমূহ ডায়রীভুক্তকরণ,হাজিরাশীট, ভয়েস রেকর্ডকরণ ও পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়নে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেনি।
আরও পড়ুন:
বরিশাল বেতারে নাট্যশিল্পী তালিকাভুক্তিতে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি
নিয়মানুসারে বেতারের কর্মকর্তা, কর্মচারী, তাদের পোষ্য, বিভিন্ন বিষয়ের তালিকাভুক্ত শিল্পী নাটক অডিশনে অংশগ্রহণ করতে পারেন। তবে অডিশনে উত্তীর্ণ শিল্পী বা সম্পদব্যক্তি হিসেবে অংশগ্রহণের জন্য কর্মকর্তা- কর্মচারীরা কোনো সম্মানি পাবেন না। বেতার অনুষ্ঠানে দু’ভাবে অংশগ্রহণ করা যায়- (১) অডিশনের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত শিল্পী এবং (২) অডিশন ছাড়া সম্পদবক্তি হিসেবে। সম্পদবক্তি হিসেবে বিশব্বিদ্যালয়ের উপাচার্য কেন্দ্রর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেন কিন্তু সংবাদ পাঠ, সংগীতসহ সব ধরনের পারফরমিং আর্টে তাঁকে অডিশনে উত্তীর্ণ হতে হবে।
বাংলাদেশ বেতার বরিশাল কেন্দ্রে বিভিন্ন পারফরমিং আর্টে অডিশন দেয়ার জন্য যেকোনো সময় আবেদন করা যায়। বেতার কর্তৃপক্ষ অডিশন আয়োজনের আগে ঘোষণা দিয়ে আবেদন আহবান করে থাকেন।
২৬ ও ২৭ মে নাটক অডিশনে যে পদ্ধতিটি ব্যবহার করা হয়েছ তা স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বেশ কার্যকর। প্রতিজন প্রতিযোগীকে একটি করে কোড নম্বর দেয়া হয়েছে। একটা স্টুডিওর এক কোনায় রেখে অডিশন নেয়ায় আঞ্চলিক পরিচালকসহ ৭ জন বিচারক পরীক্ষার্থীকে দেখতে পারেননি। টক ব্যাকের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীর সাথে কথোপকথন হয় এবং পান্ডুলিপি পড়াসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়। বিচারকমন্ডলী পরীক্ষার্থীকে দেখতে পাননি, নামও জানতে পারেননি। অডিশন শেষে তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রকাশ করে দেয়া হয়েছে। যে কর্মকর্তার স্ত্রী পরীক্ষার্থী ছিলেন সে কর্মকর্তা বিচারক পানেলে এবং অডিশনের কোনো কার্যক্রমে সমৃক্ত ছিলেন না। কর্মকর্তার পোষ্য ( স্ত্রী) হবার আগেই তিনি তালিকাভুক্ত আাবৃত্তিশিল্পী,ঘোষক ও সংবাদপাঠক। এভাবে অডিশনটিকে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ,পক্ষপাতমুক্তভাবে ও পেশাদারিত্বে সম্প্নন করা সম্ভব হয়েছে।
উত্তীর্ণ – অনুত্তীর্ণ যে কেউ নিজেকে সেরা মনে করতে পারেন। অনুত্তীর্ণ হলে তো সংক্ষুব্ধ হওয়া স্বাভাবিক। সবার ভয়েস রেকর্ড যেহেতু কেন্দ্রে সংরক্ষিত আছে সেহেতু সংক্ষুব্ধ প্রার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার রেকর্ডকৃত ভয়েস পুনর্মূলায়ন করার জন্য সদর দপ্তরে পাঠানো যেতে পারে । সংশ্লিষ্ট সকল অভিযোগ প্রতিকারে বাংলাদেশ বেতার শতভাগ প্রচেষ্টা নিয়ে থাকে।
পরবর্তীতে নাটকের অডিশন আয়োজন করা হবে। বরিশাল বিভাগের যেকোনো নারী, পুরুষ ও শিশু এক/ একাধিক পারফরমিং আর্টে অডিশনের জন্য যেকোনো সময় আবেদন করতে পারেন।
১২ জুন ১৯৯৯ সালে এ কেন্দ্রের যাত্রা শুরুর পর দীর্ঘ ২৬ বছর পর এই প্রথম ৫৪ জন নাট্যশিল্পী তালিকাভুক্ত করার কাজটিকে বিতর্কিত না করার মাধ্যমে বাংলাদেশ বেতার বরিশাল এবং এ অঞ্চলের নাট্যপ্রতিভাদের কল্যাণ ও পৃষ্ঠপোশকতায় সহযোগিতার হাত প্রসারিত করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ থাকল।
কর্তৃপক্ষ,বাংলাদেশ বেতার ,বরিশাল