অস্ত্র হাতে পুরানো রূপে আওয়ামী লীগ,বিস্মিত ছাত্র-জনতা


অনলাইন ডেস্ক : আবারও অস্ত্র হাতে আওয়ামী যুগের পুরানো রূপ। জুলাইয়ে যেভাবে গুলি করে, রাম দা দিয়ে কুপিয়ে রাজপথে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে হত্যা করল সেইরূপে গোপালগঞ্জে নামল ওই দলটি। দুই হাজার ছাত্র-জনতার রক্তে ভেজা বাংলাদেশে আওয়ামী অস্ত্রযুগের দৃশ্য দেখে শুধু ছাত্র-জনতা নয়, দেশের বিশেষজ্ঞ মহলও বিস্মিত। পূর্ব ঘোষিত একটি সমাবেশকে নিরাপত্তা দিতে না পারায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
এক বছরেও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি বলেও দাবি তোলা হচ্ছে। পুলিশ, ইউএনওর গাড়ি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ওপর হামলা এবং গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ভাঙচুর পুরানো হিংস্রতাকে সামনে এনে দিয়েছে। দেশের নাগরিক সমাজ বলছে একটি ঘটনায় এখন প্রায় স্পষ্ট সবার আগে প্রয়োজন জুলাই গণহত্যার বিচার, সংস্কার এবং সব দলমত মানুষের ঐক্য।
একটি বিশেষ মতামতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন বলেন, গোপালগঞ্জে যেটা ঘটেছে সেটা খুবই কঠিন বিষয়। সেই রাজনৈতিক দলের অস্ত্র প্রদর্শন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অভ্যুত্থানের নেতাদের ওপর হামলা এটা খুবই দুঃখজনক। এগুলো দেখে আমরা খুবই কষ্ট পাচ্ছি। দেশটা সংস্কার ছাড়াই এভাবে যদি চলতে থাকে তা হলে আমরা ভুল পথেই এগোচ্ছি। আমার মনে হচ্ছে অনেক অশুভ যাত্রার খেলা চলছে। কেন জানি মনে হচ্ছে সব কিছু কন্ট্রোলের চেষ্টা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে একটা অঘটন ঘটবেই বলে মনে হচ্ছে।
এখন সবারই প্রয়োজন ঐক্য। এতগুলো মানুষ মারা যাওয়ার পরও পুরানো জিনিসগুলো সামনে আসছে। একটা সমাবেশ নিরাপদ হলো না এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে কথা থাকতেই পারে মনে করেন তিনি। সরকারকে আরও কঠিন হওয়া প্রয়োজন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী বলেন, জুলাইয়ে এতগুলো মানুষ মারার পর আবারও এভাবে সেই অস্ত্র প্রদর্শন ওই দলটির। আমরা এই দৃশ্য দেখে এতটাই মর্মাহত এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারছি না। বাংলাদেশের কপালে যা আছে তাই ঘটতে যাচ্ছে মনে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখনো প্রতিটি ক্যাম্পাসে-ওয়ার্ডে রয়েছে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের অবৈধ অস্ত্র। ৩৬ জুলাইয়ে যেখানেই শিক্ষার্থীরা ন্যায্য দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছে, সেখানেই ছাত্রলীগ-যুবলীগ অবৈধ অস্ত্র উঁচিয়ে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়েছে। তাদের গুলিতে নারী শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন। হাসিনা বাহিনীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে এখনো হাজার হাজার ছাত্র-জনতা হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। স্বৈরাচারের পতনের পর নতুন উপদেষ্টার সরকার গঠনের এক বছর পার হচ্ছে এখনো চিহ্নিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রকাশিত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের অস্ত্র প্রদর্শন নিয়ে কথা হয় জুলাইয়ে আহত যোদ্ধা রাহাত ভূঁইয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, গত ৪ আগস্ট দুপুর ১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ফেনীর মহিপালে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ। ঘটনাস্থলেই তাদের গুলিতে ৯ জন মারা যান। পরে আরও দুজন নিহত হন। মোট ১১ জন ওই দিনের ঘটনায় শহীদ হন। এ ছাড়া শতাধিক মানুষ আহত হন। তিনি বলেন, ওইদিন ছাত্রলীগ-যুবলীগের অস্ত্রধারীদের গুলি জঙ্গিদেরও হার মানিয়েছে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।