বারকি নৌকা ব্যবহার করে পাথর লুট


ইত্তেহাদ নিউজ,সিলেট : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রের সাদাপাথর প্রায় নিঃশেষ হয়ে গেছে। গেল বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে পাথর লুটপাট শুরু হয়েছিল, তা অবিরাম চলছে। লাগামহীন লুটপাটে প্রায় পাথরশূন্য হয়ে পড়েছে এলাকা। পর্যটকের সংখ্যাও কমে গেছে। যারা সাদাপাথর দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন তারা বিধ্বস্ত এলাকা দেখে হতাশ হয়েছেন।
জুলাই ও চলতি মাসে পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে ধলাই নদীর উৎসমুখ বিপুল পরিমাণ পাথর আসে। প্রকাশ্যেই সেই সব পাথর নৌকা দিয়ে লুট করে নিয়ে যায় কুচক্রী মহল। প্রতিদিন শত শত নৌকা দিয়ে লুটের পাথর পরিবহন করা হয়। নদী তীরের বালি ও মাটি খুঁড়েও চলে লুটপাট। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী একটি চক্র দিনে ও গভীর রাতে শত শত নৌকায় এই সাদাপাথর অবৈধভাবে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এ চক্রের ক্ষমতা এতটাই প্রবল যে সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে ভয় পায়। কয়েক মাস ধরে অব্যাহত এ লুটপাটে পাথরের স্তূপ শেষ হয়ে গেছে।
এছাড়া, ব্যাপক লুটপাটের কারণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পর্যটন কেন্দ্র সাদা পাথর একেবারে বিরাণভূমিতে পরিণত হয়েছে। প্রশাসনের সামনেই দিনদুপুরে চলছে লুটপাট।
গত দুই সপ্তাহে সাদা পাথর এলাকায় কয়েক দফা পাহাড়ি ঢল নামে। প্রতিবারই ঢলের তোড়ে স্তরে স্তরে পাথর ও বালু নামে। এবার দফায় দফায় ঢলের পর শুধু বালু দেখা গেছে। বালুর স্তর সরিয়ে পাথর লুটপাট হয়েছে।স্থানীয় লোকজন বলছেন, দুই সপ্তাহে অন্তত শতকোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে।
প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথরে ২০১৭ সালে পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদীর উৎসমুখে পাঁচ একর জায়গাজুড়ে জমা হয় পাথর। জমা হওয়ায় উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পাহারায় সংরক্ষিত হয়। ওই বছর থেকে পুরো এলাকাটি প্রাকৃতিক পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পায়।
সাদা পাথর এলাকার ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চল লুংলংপুঞ্জি ও শিলংয়ের চেরাপুঞ্জি। সেখানকার ঝরনা থেকে সারা বছর নদের পানি প্রবহমান থাকে। বৃষ্টিবহুল চেরাপুঞ্জির পাদদেশ থেকে বর্ষায় ঢলের পানির সঙ্গে পাহাড় থেকে পাথরখণ্ড এপারে নেমে আসে। ভেসে আসা এই পাথর উত্তোলিত বা আমদানি করা পাথরের চেয়ে দামি।সাদা পাথর যাওয়ার ঘাট হিসেবে পরিচিত ধলাই নদতীরের ভোলাগঞ্জের ১০ নম্বর এলাকা। পাহাড়ি ঢল নেমে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটকরা সাদা পাথরে যাচ্ছেন না। এ সুযোগে চলছে লুটপাট। গত এক সপ্তাহে দিন ও রাতে হাজারখানেক বারকি নৌকা ব্যবহার করে পাথর লুট হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজায়ের মাহমুদ আদনান বলেন, সার্বিক পরিস্থিতিতে সমন্বিত পদক্ষেপ ছাড়া পুলিশের পক্ষে একা কিছু করা সম্ভব নয়। ১৭টি মামলা এবং ৭০ জন পাথর লুটকারীকে আটক করে সমস্যার সমাধান করা যায়নি।
তিনি বলেন, ‘সাদা পাথর লুটের ঘটনার খবর পেলেই ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে স্পেশাল টাস্কফোর্সের টিম অভিযান চালায়। আমরা পুলিশ দিয়ে সহযোগিতা করছি। এর বাইরে কী আর করার আছে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।