অনলাইন ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য ও উৎপাদন বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা পিটার নাভারো বলেছেন, ভারতকে রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল আমদানি বন্ধ করতে হবে। তিনি সতর্ক করেছেন যে, এই আমদানি মস্কোর ইউক্রেন যুদ্ধকে অর্থায়ন করছে।
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস-এ প্রকাশিত একটি মতামত প্রবন্ধে নাভারো দাবি করেন, নয়াদিল্লি ‘এখন রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে।’
তিনি যোগ করেন, ‘যদি ভারতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে থাকতে হয়, তবে তাকে সে অনুযায়ী আচরণ করতে হবে।’
ওই প্রবন্ধে নাভারো বলেন, ‘ভারত রাশিয়ান তেলের জন্য একটি বৈশ্বিক ক্লিয়ারিং হাউস হিসেবে কাজ করছে, যেখানে নিষিদ্ধ অপরিশোধিত তেলকে উচ্চমূল্যের রপ্তানিতে রূপান্তরিত করে মস্কোকে প্রয়োজনীয় ডলার সরবরাহ করছে ভারত।’
তিনি আরও সতর্ক করেন যে, নয়াদিল্লি এখন রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে, তাই ভারতের কাছে উন্নত মার্কিন সামরিক প্রযুক্তি হস্তান্তর করা ঝুঁকিপূর্ণ।
কঠোর ভাষায় লেখা ওই কলামে নাভারো ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে ভারতের রাশিয়ান তেল কেনা নাটকীয় বৃদ্ধির বিষয়টিকে ভারতের ‘সুযোগসন্ধানী’ আচরণ উল্লেখ করে বলেন, এর ফলে ক্রেমলিনকে বিচ্ছিন্ন করার ও ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধযন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণের বৈশ্বিক প্রচেষ্টা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমেরিকান ভোক্তারা ভারতীয় পণ্য কেনে। ভারত সেই ডলার ব্যবহার করে ছাড়কৃত মূল্যে রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল কিনে।’
এর আগে ভারত এ ধরনের সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, দেশটিকে অন্যায়ভাবে আলাদা করে দোষারোপ করা হচ্ছে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনও রাশিয়া থেকে অন্যান্য পণ্য আমদানি চালিয়ে যাচ্ছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক আরোপ করেন, বিশেষভাবে ভারতের অব্যাহত রাশিয়ান তেল আমদানিতে উল্লেখ করে। এর ফলে বিদ্যমান শুল্ক দ্বিগুণ হয়ে মোট ৫০%-এ দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, ঐতিহাসিকভাবে ভারত রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের বড় আমদানিকারক ছিল না; বরং মধ্যপ্রাচ্যের উপর নির্ভর করত। কিন্তু ২০২২ সালে পরিস্থিতি বদলায়। ডেটা অ্যানালিটিক্স প্রতিষ্ঠান কেপলার-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ভারতের মোট আমদানির নগণ্য অংশ ছিল রাশিয়ার তেল; কিন্তু এখন তা প্রায় ৩৭ শতাংশে পৌঁছেছে।
ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ভারত নীতির ফলে বেইজিং ও নয়াদিল্লির সম্পর্ক উন্নয়ন ঘটছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মাসের শেষে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন। এছাড়া, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বর্তমানে ভারত সফর করছেন দুই দেশের দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ নিয়ে আলোচনার জন্য।
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কে আরও চাপ সৃষ্টি করতে আগামী আগস্ট ২৫ থেকে ২৯ পর্যন্ত বাণিজ্য আলোচকদের একটি পূর্ব নির্ধারিত ভারত সফর বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সিদ্ধান্ত প্রস্তাবিত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার অগ্রগতি বিলম্বিত করবে এবং এর ফলে আগস্ট ২৭ থেকে কার্যকর হতে যাওয়া অতিরিক্ত মার্কিন শুল্ক থেকে রেহাই পাওয়ার ভারতীয় আশা ভেস্তে গেছে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত