কবরস্থানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণেও অনিয়ম আর দুর্নীতি


অনলাইন ডেস্ক : মানুষের শেষ ঠিকানা কবরস্থান, সেই কবরস্থানেও অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের কাজীপাড়া এলাকায় একটি কবরস্থানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে অনিয়ম করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) ও আল আকসা নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঢালাই করা গ্রেডবিমগুলোর পলেস্তারায় হাত দিলেই খসে পড়ছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয়রা তা গুড়িয়ে দেন।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) কবরস্থানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে অনিয়মের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। নেটিজেনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, কবরস্থানের মতো পবিত্র জায়গাতেও দুর্নীতি বরদাস্ত করা যায় না।শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে নির্মিত গ্রেডবিমগুলো ভাঙছেন। কিন্তু হাত দিলেই পলেস্তারা খসে পড়ছিল। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার উপসহকারী প্রকৌশলী প্রমোদ চন্দ্র রায় ও সার্ভেয়ার মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষের তোপের মুখে পড়ে তারা কাজ বন্ধ করে দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলজিইডির আওতায় ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজীপাড়া কবরস্থানের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে প্রাচীর নির্মাণের কাজ পান আল আকসা নামের প্রতিষ্ঠানটি। গত বৃহস্পতিবার ঢালাই করা হয়। কিন্তু পরদিনই ঢালাই খসে পড়তে শুরু করলে স্থানীয়রা প্রতিবাদে নেমে আসেন। ক্ষুব্ধ জনতা গ্রেডবিম ও পিলার ভেঙে ফেলে কাজ বন্ধ করে দেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এখানেও এলজিইডি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ঠিকাদার অনিয়ম করেছে। তাদের দাবি, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
রফিকুল ইসলাম ও সাজ্জাত নামে দুই যুবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কবরস্থানেও যদি ঠিকাদার আর এলজিইডির লোকজন অনিয়ম করে, তবে এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কিছু নেই। এখানে আমাদের মা-বাবা-আত্মীয়স্বজনরা চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন। অথচ প্রাচীর নির্মাণের নামে লুটপাট চলছে। এরা কি মানুষ, না অমানুষ? অবশ্যই ঠিকাদারের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে, আর জড়িত কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল আকসার প্রতিনিধি পশিরুল ইসলাম জানান, আগের ঢালাই করা গ্রেডবিমগুলো ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।
উপসহকারী প্রকৌশলী প্রমোদ চন্দ্র রায় বলেন, ‘এটা তদারকির অভাবে হয়েছে। ঢালাইয়ে সিমেন্ট কম, বালুর পরিমাণ বেশি ছিল। ঠিকাদার কাজ করার সময় আমাদের না জানিয়ে ঢালাই করেছে। তাই অনিয়ম করেছে। তাকে আবারও ভেঙে নতুন করে ঢালাই করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. মাবুদ হোসেন বলেন, ‘এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। নিয়ম হলো ঢালাই করার অন্তত দুই সপ্তাহ পর সাটারিং খোলা হয়। কিন্তু ঠিকাদার একদিন পরই খুলে ফেলেছে। আমরা তাকে নতুন করে কাজ করতে বলেছি।তবে এলজিইডি কর্তৃপক্ষের অবহেলা আছে কিনা—এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, এর আগে এলজিইডি ও কিছু ঠিকাদারের বিরুদ্ধে রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নিয়ে বরং ঠিকাদারদের পক্ষেই থেকেছে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।