কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই পরিশোধ করার অভিযোগ গণপূর্তের প্রকৌশলী ফয়জুল ইসলামের বিরুদ্ধে


ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : মহাখালী গণপূর্ত বিভাগ, ঢাকা এর নির্বাহী প্রকৌশলী এ. এইচ. এম. ফয়জুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসুচী (ই পি আই), জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান, জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম), জাতীয় স্বাস্থ্য গ্রন্থাগার ও দলিল সংরক্ষণ কেন্দ্র, যানবাহন ও যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থা (টেমো), জাতীয় কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রন ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, আইইডিসিআর/নিপসম কোয়াটার, মহাখালীস্থ সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্টাফ কোয়াটার, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল মেরামতের জন্য বরাদ্দকৃত ৪ কোটি ৯২ লাখ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই পরিশোধ করার অভিযোগ উঠেছে। ফয়জুল ইসলাম ঠিকাদারকে বিশেষ সুবিধা দিতেই এই কাজ করেছেন বলে জানা যায়।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অর্থ বছরের শেষ দিকে কোন প্রাক্কলন অনুমোদন হওয়ার পর দরপত্র আহবান করে সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন করা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সম্ভব নয়। তার পরও অর্থ বছর শেষ হওয়ায় কাজ শেষ দেখাতে হয়েছে জুনের মধ্যে। তা না করলে বরাদ্দ অর্থ সরকারের কোষাগারে ফেরত যাবে। এ কারণে বেশির ভাগ নির্বাহী প্রকৌশলীই গোঁজামিল দিয়ে বা কাজ না করেই কাগজে কলমে কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে ঠিকাদারকে বিল দিয়ে দিয়েছেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের মার্চ মাসে প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে অর্থ ছাড়করণের জন্য প্রেরিত এক স্মারকে দেখা যায়, এ. এইচ. এম. ফয়জুল ইসলাম ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ পেয়েছেন ৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এই বরাদ্দে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট মেরামতের জন্য ৪১ লাখ টাকার কাজ, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসুচী (ই পি আই) মেরামতের জন্য ১৪ লাখ টাকার কাজ, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান মেরামতের জন্য ১৫ লাখ টাকার কাজ, জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) মেরামতের জন্য ৪১ লাখ টাকার কাজ, জাতীয় স্বাস্থ্য গ্রন্থাগার ও দলিল সংরক্ষণ কেন্দ্র মেরামতের জন্য ৮ লাখ টাকার কাজ, যানবাহন ও যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থা (টেমো) মেরামতের জন্য ১০ লাখ টাকার কাজ, জাতীয় কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রন ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল মেরামতের জন্য ২৪ লাখ টাকার কাজ, ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল মেরামতের জন্য ৩০ লাখ টাকার কাজ, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল মেরামতের জন্য ৪২ লাখ টাকার কাজ, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল মেরামতের জন্য ৬৫ লাখ টাকার কাজ, আইইডিসিআর/নিপসম কোয়াটার মেরামতের জন্য ৩০ লাখ টাকার কাজ, মহাখালীস্থ সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল মেরামতের জন্য ৫০ লাখ টাকার কাজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্টাফ কোয়াটার মেরামতের জন্য ১৫ লাখ টাকার কাজ, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতাল মেরামতের জন্য ৫২ লাখ টাকার কাজ, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল মেরামতের জন্য ৫৫ লাখ টাকার কাজ রয়েছে।
চিঠিতে দেখা যায়, এই বরাদ্দের কাজ শেষ করে বিল পরিশোধ করার জন্য গত ২৬ জুন পর্যন্ত সময় বেধে দেওয়া ছিল। এই সময়ের মধ্যে কাজ সম্পাদন করে বিল পরিশোধ না করলে বরাদ্দকৃত অর্থ সরকারের কোষাগারে ফেরত যাবে। এই বরাদ্দকৃত অর্থ যাতে সরকারের কোষাগারে ফেরত না যায় সেইজন্যই কাজ সম্পাদন না করে ২৬ জুনের মধ্যে ঠিকাদারকে সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ করে দিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী এ. এইচ. এম. ফয়জুল ইসলাম। অসম্পন্ন কাজের বিল পরিশোধ করে পরে সেই কাজ সম্পূর্ন সম্পাদন করার সুযোগ করে দিয়েছেন তিনি। এতে তিনি ঠিকাদারদের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ আছে।
পিপিআর (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস) অনুযায়ী কাজ সম্পাদন না করে সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ করার ফলে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা ও ঠিকাদার উভয়ের বিরুদ্ধেই বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এবং আর্থিক ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এর মধ্যে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা সাময়িক বরখাস্ত, আর্থিক জরিমানা, এবং সরকারের রাজস্ব ক্ষতিপূরণ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
এবিষয়ে মহাখালী গণপূর্ত বিভাগ, ঢাকা এর নির্বাহী প্রকৌশলী এ. এইচ. এম. ফয়জুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।