এলজিইডি:বিতর্কিত কনসালটেন্ট আবু ফাত্তাহ অনিয়ম ও দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন


ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : গত বছরের ৫ আগস্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন সংগ্রামের ফলে সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের পর অন্তবর্তীনকালীন সরকার গঠন করে রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু করে। দেশের বিভিন্ন সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈষম্য দুর করতে অন্তবর্তীনকালীন সরকার নানা ধরনের মহোতি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ব্যাবস্থা ঠিক রাখতে সারাদেশে পরিচালনা করা হয়েছে “অপারেশন ডেভিল হান্ট “। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে দেশের বিভিন্ন সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ও অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনা একান্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
এর কারণ স্বরুপ স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর কনসালটেন্ট আবু ফাত্তাহ বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে এক অতি ভয়ংকর ও বিতর্কিত চরিত্রে পরিণত হয়েছেন তার বিরুদ্ধে ও অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনা করার দাবি উঠেছে ভুক্তভোগী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে ।
এলজিইডির কনসাল্টেন্ট আবু ফাত্তাহ’র জীবনযাত্রা, অবৈধ সম্পদ এবং ঘুষ বাণিজ্যের নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি’র ভয়ংকর তথ্য উঠে এসেছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে নকল সনদ ব্যবহার করে চাকরিতে প্রবেশ থেকে শুরু করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলার চাঞ্চল্যকর এক অভিযোগ উঠেছে।
প্রাপ্ত অভিযোগ অনুযায়ী জানা গেছে, ফাত্তাহ মাত্র এইচএসসি পাস। তবে নকল বি.এ. সার্টিফিকেটের মাধ্যমে তিনি প্রথমে একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রুফ রিডার হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেখান থেকে ছাঁটাই হওয়ার পর সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন কাজী খুরশিদ হাসানের সহায়তায় এলজিইডিতে “কনসালটেন্ট” পদে প্রবেশ করেন। যদিও এলজিইডির কাঠামোয় “মিডিয়া কনসালটেন্ট” নামে কোনো সরকারি পদ নেই।
ওয়াহিদুর রহমানের আমলে আদালতের নির্দেশে প্রায় ছয় হাজার কর্মচারীর চাকরি স্থায়ী করার প্রক্রিয়ায় শুরু হয় ঘুষ বাণিজ্য। অভিযোগ রয়েছে, পাঁচ থেকে আট লাখ টাকা হারে ঘুষ নিয়ে প্রায় তিনশ কোটি টাকা আদায় করা হয়, যার ভাগীদার ছিলেন আবু ফাত্তাহ। এই টাকায় তিনি সিরাজগঞ্জে জমি কিনে চারতলা বাড়ি নির্মাণ করেন এবং ঢাকার মোহাম্মদপুরে এক কোটি টাকার ফ্ল্যাট ক্রয় করেন।
পরবর্তীতে আউটসোর্সিং নিয়োগেও একই কায়দায় লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। অভিযোগ অনুযায়ী, সহকারী প্রকৌশলী পদে দেড় লাখ থেকে শুরু করে কার্যসহকারী পদে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হতো। এসব বাণিজ্য পরিচালনায় ফাত্তাহকে সহায়তা করতেন সহকারী প্রধান প্রকৌশলী মাহবুব মোর্শেদ শাহিন ও অন্য কর্মকর্তারা।
আবু ফাত্তাহ’র সাথে সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রেতাত্মা চিহ্নিত স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা ও প্রতিমন্ত্রী -মন্ত্রীর আস্থাভাজন কমিশন এজেন্টদের সাথে ছিল গভীর সক্ষতা। বর্তমানেও সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার সমার্থক আমলাদের পৃষ্ঠপোষকতায় চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন প্রকারের অনিয়ম ও দুর্নীতি।
তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ উঠেছে এলজিইডির বিভিন্ন পদবীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি’র তদন্তের ভয় দেখিয়ে অবৈধ অর্থ বানিজ্য করেন, ক্ষেত্র বিশেষ দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের অনুসন্ধান টিমের উর্ধতন কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে ব্যক্তিগত ফয়দা লোটারও খবর পাওয়া গেছে।
ফাত্তাহ তার গৃহপালিত কতিপয় চিহ্নিত সাংবাদিকদের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের চাপে রাখেন। সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ঘুষ আদায় তার নিয়মিত কৌশল। এতে একাধিক কর্মকর্তা তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।ফাত্তাহ নকল বি.এ. সার্টিফিকেট দিয়ে বর্তমানে এলজিইডির কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। তার ভাইকেও নকল সনদে আউটসোর্সিং চাকরি দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এলজিইডির অভ্যন্তরে দাবি উঠেছে, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করে নকল প্রমাণিত হলে চাকরিচ্যুত করা এবং এ পর্যন্ত প্রাপ্ত বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরত নেওয়া হোক।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।