গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হুমায়েরা বিনতে রেজার বিরুদ্ধে টেন্ডার বাণিজ্য’র অভিযোগ


ইত্তেহাদ নিউজ,অনলাইন : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অবক্ষয়ের কারণে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে আসক্তি ও মানসিক চাপ তৈরীর অভিযোগ গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হুমায়েরা বিনতে রেজার বিরুদ্ধে। তিনি যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থিতির সহজ লভ্যতার কারণে ব্যাপক বিষয়বস্তুর বিস্তার ঘটেছে যা সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয় আরো বাড়িয়ে তুলছে। যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর টিকটকের ফলে ধর্মীয় অনুভূতির উপর আঘাত করার মত অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। অতিরিক্ত উপস্থিতির কারণে সমাজ ,শারীরিক ,মানসিক ,ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে যা সাধারণের মূল্যবোধের অবক্ষয়। তবে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ গণপূর্ত অধিদপ্তরের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে এবং মান ক্ষুন্ন হচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। অতীত জীবন ও কর্মজীবন নিয়েও নানাভাবে সমালোচিত হচ্ছেন এ প্রকৌশলী।
জানা গেছে জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পরে গণপূর্ত অধিদপ্তরে দীর্ঘ দিন ঢাকায় অবস্থান করা প্রকৌশলীদের বেশির ভাগই ঢাকার বাইরে বদলি হয়েছেন। কিন্তু এখনো কিছু প্রকৌশলী নিয়ম-নীতির ফাঁক-ফোকর দিয়ে ঢাকাতেই অবস্থান করছেন। সরকারী প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তিন বছর পর অন্য জেলায় বদলি হওয়ার নিয়ম থাকলেও তাদের পদায়ন ঢাকাতেই হচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হুমায়েরা বিনতে রেজা তেমনই একজন কর্মকর্তা। তিনি বর্তমানে ই/এম সার্কেল-১ ঢাকা এর দায়িত্বে আছেন। এর আগে তিনি গণপূর্ত এমআইএস সার্কেল, ই/এম সার্কেল-৪, পিএন্ডডি সার্কেল-এর দায়িত্বে ছিলেন। সবগুলো পদায়নই ঢাকাতেই ছিল। অভিযোগ রয়েছে এসব পদায়নের জন্য তিনি বিপুল টাকা উৎকোচ দিয়েছেন। আর এই উৎকোচের টাকাসহ বিপুল পরিমাণ টাকা তিনি কামিয়েছেন টেন্ডার বাণিজ্য ও আউট সোর্সিং জনবল নিয়োগ-বাণিজ্য করে।
জানা যায়, হুমায়েরা বিনতে রেজা ঢাকা ই/এম সার্কেল-১, ঢাকা থেকে গণপূর্ত ই/এম বিভাগ-১, ঢাকা এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মো. আশরাফুল ইসলাম-এর মাধ্যমে প্রধান প্রকৌশলীর জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অমান্য করে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে এপিপি বরাদ্দের কাজ এলটিএম পদ্ধতির পরিবর্তে ওটিএম পদ্ধতিতে দরপত্র আহবান করার নির্দেশনা দেন। তার নির্দেশনা মোতাবেক ঢাকা ই/এম বিভাগ-১ থেকে শতকরা ৯০ ভাগ দরপত্র ওটিএম পদ্ধতিতে আহবান করা হয়। আর এই অনুমোদনের জন্য হুমায়েরা বিনতে রেজা ৫ শতাংশ হারে কমিশন নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা যায় তার অধীনে ঢাকা গণপূর্ত ইএম বিভাগ-২ ও ৩ এরও একই অবস্থা।
গণপুর্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ দেওয়া জন্যই হুমায়েরা বিনতে রেজা এই নির্দেশনা দিয়েছেন। এতে তিনি মোটা অংকের কমিশন পেয়েছেন। এখনও ঢাকা ই/এম সার্কেল-১ এর অধীন ডিভিশনগুলোতে ৪০টি এপিপি বরাদ্দের কাজের ওটিএম পদ্ধতিতে আহবানকৃত
২৪তম বিসিএস এর এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি চাকরির কোড অব কন্ডাক্ট ভাঙ্গার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তিনি টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মে একটি একাউন্ট পরিচালনা করেন বলে জানা যায়। সেখানে তিনি নানান রকম ভিডিও আপলোড করে সমাজে বিরুপ পরিস্থিতি তৈরি করেছেন।
এছাড়া হুমায়েরা বিনতে রেজা ব্যাক্তিগত জীবন নিয়েও রয়েছে নানা বিতর্ক। কথিত আছে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে পাশ করে ২৪ তম বিসিএস-এ গণপূর্ত ক্যাডারে যোগদান করেন হুমায়েরা বিনতে রেজা। বুয়েটে থাকাকালেই নানা কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। ওই সময় এক সহপাঠীর সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসে অল্পদিনের সংসার ও করে তা স্থায়ী হয়নি। সে বিয়ে ভাঙার পরে ইমতিয়াজ আহমেদের সঙ্গে প্রেম করে দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। ইমতিয়াজ আহমেদ বেসরকারি একটি টেলিকম কোম্পানিতে চাকরি করেন। ইমতিয়াজ আহমেদের সঙ্গে সংসারে তাঁর দুটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু এই সংসারও টিকেনি। গণপূর্ত অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী সূত্রের পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে গণপূর্ত ইএম বিভাগ-১১ এর সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুম অবৈধ সম্পর্কের জন্য হুমায়েরা ইমতিয়াজের সংসার ত্যাগ করেছেন।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।