চার বিয়েতেও স্বাদ মেটেনি বিতর্কিত সাবেক সহ সমন্বয়ক মারজুকের


মামুনুর রশীদ নোমানী,বরিশাল :
বহুল বিতর্কিত প্রতারক,নারী পিপাসু,লম্পট,স্ত্রী নির্যাতনকারী,ভুয়া ছাত্রনেতা, ভুয়া সমন্বয়ক, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ নানান পরিচয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা, ডাকাতির প্রস্তুতি,ভুয়া মামলায় আসামী করার হুমকি,ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চাঁদাবাজীর মাধ্যমে অর্থ আদায়ের ভয়ঙ্কর অভিযোগ বিলুপ্ত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলা কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব বহিষ্কৃত সহ সমন্বয়ক সেই মারজুক আব্দুল্লাহ।
বিতর্ক পিছু ছাড়েনি মারজুকের।দু সন্তানের এক জননীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া,স্ত্রী মেহরুন্নেছাকে নির্যাতনের কারনে স্ত্রী কর্তৃক ডিভোর্স দেয়া।এছাড়া প্রলোভন দিয়ে আরো দুজনকে বিয়ে করে ভোগ বিলাস করে ছেড়ে দেয়াসহ অসংখ্য নারীদের ব্লাকমেইলিং করে ভোগ করাই মারজুক আব্দুল্লাহর কাজ।বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গত মঙ্গলবার বরিশাল নগরীর জিলা স্কুল মোড়ে গন ধোলাই দেয় এই দুর্ধর্ষ ভয়ংকর প্রতারক মামলাবাজ মারজুক আব্দুল্লাহকে।বর্তমানে গনধোলাই খেয়ে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বিয়ে ও নারী সমাচার :
আলেকান্দা কলেজে পড়াকালীন সময়ে মারজুক আব্দুল্লাহ ছিলো নারী লোভী এক নর পিচাশ।সুন্দর চেহারা ও স্মার্টনেসের কারনে নারীরা এই প্রতারক মারজুক আব্দুল্লাহর মিষ্টি কথায় পটে যায়।আলেকান্দা কলেজের অসংখ্য ছাত্রীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে সর্বনাশ করেছে এই প্রতারক মারজুক।
২০২৩ সালের ২৭ এপ্রিল বিয়ে করে বাকেরগঞ্জ উপজেলার কাজলাকাঠী গ্রামের মিলন হোসেনের মেয়ে মেহেরুন্নেছাকে।এখানে একটি সন্তানও রয়েছে।নারী লোভী ও নারী আসক্ত মারজুকের পরকিয়া প্রেমের ঘটনা মেহেরুন্নেছা জানতে পারে। এই ঘটনা মারজুককে জিজ্ঞাসা করলেই মেহেরুন্নেছার ওপর নির্যাতনের স্ট্রিম রোলার চালাতে থাকে মারজুক।নির্যাতন সইতে না পেরে মেহেরুন্নেছা পিতার বাড়িতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।চলতি বছরের ১৮ আগষ্ট মেহেরুন্নেছা ডিভোর্স দেয় মারজুককে।
ডিভোর্স দেয়ার পরে মেহেরুন্নেছা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে পুলিশ দিয়ে হয়রানী করে একাধিকবার।মারজুকের এই অবৈধ কাজে সহযোগীতা করছেন কোতয়ালী থানার এস আই মোস্তাফিজ।
এদিকে আলেকান্দা কলেজের মারজুকের এক ক্লাশ জুনিয়র, কাউনিয়া এলাকার এক টিকটকার নারীকে মারজুক বিয়ের প্রলোভন দিয়ে কুয়াকাটা নিয়ে রাখে তিনদিন।জানা গেছে তাকেও ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে বিয়ে করে। ঐ নারীকে ভোগ করার পর তার সাথে সম্পর্ক রাখেনি।কুয়াকাটায় হোটেল সানফ্লাওয়ারের ৫০৪ নম্বর রুমে ছিল মারজুক ও ঐ নারী।এই নারীর নামের শুরুতে “হ’ রয়েছে।
দুই সন্তানের জননীকে নিয়ে পলায়ন:
দুই সন্তানের এক জননীকে নিয়ে পালিয়ে যায় রাতের আধাঁরে মারজুক আব্দুল্লাহ।তাকে ভুয়া কাগজের মাধ্যমে বিয়ে করে ভোগ বিলাস করে ছেড়ে দেয়।এই দুই সন্তানের জননী মারজুকের সাথে পালিয়ে যাওয়ার পরে তার স্বামী ‘আ ‘ অদ্যাক্ষরের এই নারীকে তালাক প্রদান করেন স্বামী।সেখানে সেই স্বামী উল্লেখ করেন,বিগত ১৪-৬-২০২৫ তারিখ রাত অনুমান ৮ ঘটিকার সময় আমার দু সন্তানকে আমার মায়ের বাসায় রেখে আমার স্ত্রী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বরিশাল জেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ন সদস্য সচিব মারজুক আব্দুল্লাহ এর সহিত তাহার হাত ধরে পালিয়ে যায়।এবং পরে বরিশাল বিএম কলেজ মসজিদ গেট এলাকায় হাজি মঞ্জিল এর তৃতীয় তলায় একখানা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে।এবং প্রতিদিন তাহার সাথে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঘোরাফেরা করেন ও তাহার সাথে বিভিন্ন জায়গায় রাত্রি যাপন করে।যাহার সকল প্রমানাদি আমার নিকট রয়েছে।
ঐ স্বামী আরো উল্লেখ করেন ,বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বরিশাল জেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ন সদস্য সচিব মারজুক আব্দুল্লাহ আমার অফিসে এসে আমাকে না পেয়ে মোবাইল ফোনে আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে যে,আমি যদি আমার স্ত্রীর সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ করি তাহলে আমাকে হাত-পা ভেঙ্গে দিবে এবং নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা দিবে মর্মে হুমকি প্রদান করেন। এই নারীকে ভোগ করার পরে ছেড়ে দেয়ার পরে দু বাচ্চা নিয়ে বিপাকে রয়েছেন এই “আ” অদ্যাক্ষরের নারী।দু কুল হারিয়ে এখন দিশেহারা।
মারজুক আব্দুল্লাহর প্রতারনার শিকার এক নারী বলেন,মারজুক আসলে মানুষ নাকি অন্য কিছু ।ওর মত কুলাঙ্গার ছেলে দুনিয়াতে থাকা বিস্ময়কর ব্যাপার। কত মানুষের সংসার নষ্ট করছে, কত মেয়ের জীবন ধ্বংস করছে আল্লাহ ভালো জানে।
আরো এক টিকটকারকে বিয়ে:
“স ” অদ্যাক্ষরের এক নারীকে প্রলোভন দিয়ে ভুয়া কাগজের মাধ্যমে বিয়ে করে ভোগ বিলাস করে ছেড়ে দেয় মারজুক।এই টিকটকার নারী মারজুকের প্রতারনা বুঝতে পেরে নিজেকে সরিয়ে নেন। এভাবে অসংখ্য নারীদের প্রলোভন ও ব্লাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে ভোগ করে ছেড়ে দেয়াই মারজুক আব্দুল্লাহর কাজ।
আরও পড়ুন:
আরও পড়ুন:
বরিশালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা মারজুকের বিরুদ্ধে এবার স্ত্রীকে নির্যাতন ও প্রাননাশের হুমকি,ভয়ে ডিভোর্সের নোটিশ স্ত্রীর
বরিশালে সাবেক সহ সমন্বয়ক মারজুক আব্দুল্লাহকে গনধোলাই
এ ব্যাপারে মারজুকের সাবেক স্ত্রী মেহেরুন্নেছা বলেন,আমি একজন সাধারণ নারী। মারজুক আব্দুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে আমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে। তার বাসায় থাকাকালীন সময়ে তিনি আমাকে মারধর করেন, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন, এবং বহুবার গলা চেপে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন।
তিনি একাধিক নারীর সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, এবং যখন আমি এর প্রতিবাদ করেছি, তখন তিনি আমাকে মারধর করে চুপ করিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। তিনি আমার প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন এবং একাধিকবার বাস্তবে সে চেষ্টা করেছেনও।
আমি বহুবার নিজের জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বাঁচি। কিন্তু আমার স্বামী প্রভাবশালী হওয়ায় এবং পুলিশ দিয়ে বারবার আমাকে তার কাছে জোর করে ফিরিয়ে দিয়েছে। এতে আমার জীবনের নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।
আমি তার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে বাবার বাড়ি যেয়ে ডিভোর্স দিয়েছি মারজুককে।তিনি মারজুকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপরকামনা করেছেন।তিনি বলেন ও একটা নারী লোভী। ভবিষ্যতে আর কোনো নারী যেন এমন মারজুকের ফাঁদে না পড়ে নিঃস্ব না হয়।
ছাত্র-জনতার গনধোলাই খেয়ে হাসপাতালে:
বিক্ষুব্ধ ছাত্র -জনতার গণপিটুনির শিকার হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বহিষ্কৃত সহ সমন্বয়ক মারজুক আবদুল্লাহ বর্তমানে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে নগরীর জিলা স্কুল মোড়ে বিতর্কিত ও বহুল সমালোচিত মারজুক আবদুল্লাহকে গনধোলাই দেয়া হয়।
পটুয়াখালীতে ডাকাতিসহ দুটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এই মারজুক। একটি মামলায় তিনি দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। কদিন আগেই সেই মামলায় জামিনে বের হয়ে বরিশালে আসেন তিনি। মঙ্গলবার নগরীর জিলাস্কুল গেটে মারজুক আবদুল্লাহকে ২০-২৫ জন ছাত্র -জনতা গনধোলাই দেয়। তারা মারজুককে বেদম মারধর করে।
খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। তবে তাকে উদ্ধারে বাধাঁ দেয় বিক্ষুব্ধরা। অবশ্য পরে হামলাকারীরাই তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
মারজুকের ওপর হামলাকারীদের অভিযোগ, নারীদের প্রলোভন দিয়ে সর্বনাশ করা,চাঁদাবাজি,মিথ্যা মামলা দিয়ে বানিজ্য, ভুয়া মামলায় সাধারণ কৃষক, দিনমজুর এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করার কারনে রোষানলে পরে চিটার ও টাউট মারজুব। মামলা নিয়ে বানিজ্য করার কারনে বহিষ্কার করা হয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পদ থেকে। এদিকে মামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগীরাই মারজুকের ওপর হামলা করেছে বলে দাবি মারজুকের।
একই মামলার চার এজাহার:
মারজুক আব্দুল্লাহ এক চিটারের নাম। দেশে যখন আন্দোলন তুঙ্গে তখন মারজুক কুয়াকাটায় হোটেলে নারী নিয়ে আনন্দ ফুর্তীতে মেতেছিলেন।ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের মত ভুয়া আন্দোলনকারী হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ সম্বন্নয়ক পদ বাগিয়ে নেন।আহত কিংবা ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই মামলায় বর্নিত জায়গায় কোন ঘটনাই ঘটেনি।অথচ মামলায় কল্পকাহিনী রটিয়ে একটি ভুয়া মামলা বরিশালের বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে সাবমিট করেন ২০২৫ সালের ২ এপ্রিল।মানে ঘটনার ৮ মাস পরে।আদালত মামলাটি নিয়ে সন্দিহান হওয়ায় আমলে নেয়নি। চিটার মারজুক একটি দালাল গ্রুপের মাধ্যমে এক এক করে চার বার এজাহার দায়ের করেন কোতয়ালী মডেল থানায়।আদালতে মারজুক যে মামলাটি সাবমিট করেছিল সেই মামলায় আসামী ছিলো ২৯০ জন। টাকার বিনিময়ে আসামী তালিকায় নাম বাদ ও যোগের মাধ্যমে কোটি টাকার বানিজ্য করে মারজুক আব্দুল্লাহ।চারটি লিখিত এজাহারে একটির সাথে অপরটির আসামীদের তালিকা ঠিক নাই।চারটি কপিই প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।দুদক বা সিআইডি বা পিবিআই তদন্ত করলেও বেড়িয়ে আসবে মারজুক আব্দুল্লাহর মামলা বানিজ্য।
এ ব্যাপারে ভুক্তভুগী নারীরা ও সাধারন ছাত্র-জনতা চিটার ও টাউট, বাটপার মারজুক আব্দুল্লাহর গ্রেপ্তার দাবী করেছেন।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।