আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে বহুল প্রত্যাশিত ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচন সামনে রেখে দ্রুত দেশ ফিরবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। তারেক রহমান জাতীয় নির্বাচন, দলের মনোনয়নসহ রাজনৈতিক ও জাতীয় নানা বিষয়ে কথা বলেন।
ইত্তেহাদ নিউজ,অনলাইন : সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রসঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, যিনি এলাকার সমস্যা সম্পর্কে সচেতন, যার সাথে এলাকার মানুষের সম্পৃক্ততা আছে, উঠাবসা আছে- এমন ব্যক্তিকেই মনোনয়ন দেবে বিএনপি।
সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হয়, আগামী নির্বাচন এককভাবে নাকি দলগতভাবে করা হবে, কেমন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হবে- এসব বিষয়।
তারেক রহমান বলেন, “বিএনপি প্রথম থেকেই বলে আসছিল যে যত দ্রুত নির্বাচনটি হবে, তত দ্রুত দেশের মধ্যে একটি স্থিতিশীলতা আসবে। বাংলাদেশের মানুষ গত ১৭ বছর ধরে তাদের রাজনৈতিক অধিকার যেমন তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, তাদেরকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছিল। যার ফলে আমরা সমাজে অনেকগুলো পর্যায়ক্রমিকভাবে স্পিলওভার ইফেক্ট বলতে যা বুঝায় অনেকগুলো খারাপ লক্ষণ দেখেছি। বেকার সমস্যা বেড়েছে, দরিদ্রতা বেড়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কৃষি ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়েছে। আমরা সেজন্যই বলেছিলাম যে, যত দ্রুত নির্বাচন হবে যত দ্রুত দেশের মালিক যারা অর্থাৎ জনগণ তাদের কাছে যখন সেই অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে, তারা যখন সিদ্ধান্ত নেবে, অর্থাৎ দেশের মালিক যখন সিদ্ধান্ত নিবে দেশ কারা কিভাবে পরিচালিত করবে, তত দ্রুত দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।”
“প্রকৃতভাবে নির্বাচিত একটি সরকার অবশ্যই জনগণের যে চাওয়া অর্থাৎ জনগণ যেভাবে চায় সেই বিষয়গুলোকে তারা এড্রেস করবে” উল্লেখ করে তিনি বলেন, “একটি নির্বাচন হলেই যে সব রাতারাতি সব ঠিক হয়ে যাবে তা না। সমস্যাগুলোকে যখন আপনি এড্রেস করবেন খুব স্বাভাবিকভাবেই ধীরে ধীরে সমস্যা কমতে শুরু করবে।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা আনন্দিত যে দেরিতে হলেও সরকার জিনিসটি উপলব্ধি করতে পেরেছেন। আমরা ডিসেম্বরের ভিতরে চেয়েছিলাম। তারা ফেব্রুয়ারির ভিতরে এখন নির্বাচনটি করতে চাইছেন। আমরা আস্থা রাখতে চাই যে সরকার সে ব্যাপারে সব রকম উদ্যোগ পর্যায়ক্রমিকভাবে গ্রহণ করবেন।”
তারেক রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বিএনপি এককভাবে মানে দলগতভাবে নাকি জোটবদ্ধভাবে আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে নির্বাচন করবে?
জবাবে তিনি বলেন, “খুব ট্রিকি কোশ্চেন একটু। দেখুন আমরা প্রায় ৬৪টি রাজনৈতিক দল বিগত স্বৈরাচারের সময় যার যার অবস্থান থেকে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম কমবেশি একসাথে কাজ করার জন্য। এমনকি আমরা যে ৩১ দফা দিয়েছি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের, এটি প্রথমে ২০১৬ সালে আমরা দিয়েছিলাম শুধু বিএনপির পক্ষ থেকে। পরবর্তীতে ভিশন টুয়েন্টি ছিল। যেটা পরবর্তীতে আরেকটু ডেভেলপ করে আমরা ২৭ দফা দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে আমরা আমাদের সাথে যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে তাদের সাথে পরামর্শ করে সকলের মতামত নিয়ে ৩১ দফা দিয়েছি। কারণটি হচ্ছে যে দলগুলোকে আমরা পেয়েছি আমাদের সাথে রাজপথের আন্দোলনে, আমরা চাই সবাইকে সাথে নিয়ে রাষ্ট্র পুনর্গঠন করতে। সকলের মতামতকে সাথে নিয়ে আমরা রাষ্ট্র পুনর্গঠন করতে চাই।”
এসময় কিছু দলকে নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর বিএনপিবিরোধী জোট করার ইঙ্গিত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তারেক রহমান বলেন, “কোনো দল বা সমষ্টিগতভাবে কোনো দল যদি বাংলাদেশের যে আইন আছে, বৈধ আইন আছে। বাংলাদেশের যে সংবিধান এখনো যেটি আছে এই সবকিছুর ভেতরে থেকে অর্থাৎ মানুষের সমর্থন-গ্রহণযোগ্যতা সবকিছুর ভেতরে থেকে যারা রাজনীতি করবে তারা করতেই পারে। এটাতে তো কোনো সমস্যা বা উদ্বেগের কোনো কারণ আমি দেখি না।”
তারা একটি আলাদা জোট করলে চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে কিনা- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “ইলেকশনে প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। এতে উদ্বেগের কি আছে? বিএনপি তো আগেও নির্বাচন করেছে। বিভিন্ন সময় বিএনপি নির্বাচন করেছে। কম্পিটিশন করেই বিএনপি নির্বাচন করেছে। প্রতিযোগিতা করেছে। উদ্বেগের কিছু নেই।”
মনোনয়নের প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, “আমাদের নমিনেশনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত সবসময় কমবেশি যা ছিল বা ভবিষ্যতে আমরা যেটিকে মূল্যায়ন করব- সেটি হচ্ছে অবশ্যই কোনো একটি পার্টিকুলার এলাকা থেকে আমরা আমাদের দলের এমন একজন ব্যক্তিকেই নমিনেশন দিতে চাইব, যে ওই এলাকার সমস্যা সম্পর্কে সচেতন আছে, যার সাথে ওই এলাকার মানুষের সম্পৃক্ততা আছে, উঠাবসা আছে, যে ওই এলাকার মানুষের সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম। যে ওই এলাকার বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ, তরুণ, নারী, মুরুব্বিসহ ছাত্র-ছাত্রী সবার সাথে যার একটা কমিউনিকেশন আছে। এই ধরনের মানুষকেই আমরা প্রায়োরিটি দিব, খুবই স্বাভাবিক। অর্থাৎ যার প্রতি জনসমর্থন আছে। যে জনসমর্থনকে তার সাথে রাখতে পারে। জনগণের যার প্রতি সমর্থন আছে সেরকম মানুষকে দেখেই আমরা নমিনেশন দেব।”
সেখানে তৃণমূলের মতামত কতটা প্রাধান্য পাবে- জানতে চাইলে বলেন, “যেখানেই গণতন্ত্র আছে, সেখানে মতামত থাকতেই পারে। বিভিন্ন রকম মতামত অভিযোগ। হয়তো এক জায়গায় ৫০ জন আছে। ৫০ জনের মধ্যে ৩০ জন একটি কথা বলছে, ১৫ জন একটি কথা বলছে। বাকিরা আরেকটি কথা বলছে। তাহলে আপনি কি বলবেন যে মতামত নেয়া হচ্ছে না? ভাবিকভাবেই যেখানে আমরা মেজরিটির যেটা মতামত পাবো, এলাকার মানুষের কম বেশি। আমরা তো আমাদের মতন করে খোঁজ করছি। সেটি তৃণমূলই হোক বা সেটি সাধারণ মানুষের হোক।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা এরকম একজন মানুষকে বের করে আনতে চাইছি। এরকম একজন মানুষকে আমাদের দলের মনোনয়ন দিতে চাইছি। শুধু দল দিয়ে তো নির্বাচন হবে না। নির্বাচনে তো সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ থাকে। বিভিন্ন মানুষের অংশগ্রহণ থাকে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত