ময়মনসিংহে সরকারি বই বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে


ইত্তেহাদ নিউজ,অনলাইন : ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় শিক্ষার্থীরা বছরের শুরুতে বই না পেলেও স্টকে থাকা প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের সরকারি পর্যাপ্ত নতুন বই কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
প্রাথমিক শিক্ষা ও গণশিক্ষা মন্ত্রাণালয়ের নির্দেশে মাত্র ১৫ টাকা কেজি ধরে ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ব্যবহার অযোগ্য পুরাতন বই কর্ণফুলী পেপার মিলস লিমিটেডের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। যেসব বই শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করেনি, সেসব বই বিতরণ না করে স্টকে রেখে কেজি দরে বই বিক্রির বিষয়টি সুশীল সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
অথচ সরকারিসহ নিবন্ধনকৃত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষার্থীরাও বছরের শুরুতে কোনো বই পায়নি। বই সংকট দেখিয়ে এভাবেই স্টককৃত বই কেজি দরে বিক্রি করায় সরকারি অর্থ অপচয় করা হচ্ছে।
জানা গেছে, নান্দাইল উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ১৩টি ইউনিয়নে মোট ১৭৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। পাশাপাশি নিবন্ধনকৃত প্রায় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। প্রাথমিকের একটি বই তৈরি করতে সরকারের খরচ হয় ৫০ থেকে ৫২ টাকা। অথচ ১৫ টাকা কেজি দরে গুনতে হয় ৫ থেকে ৬টি বই। যেখানে ওই বইগুলো তৈরি করতে সরকারের খরচ হয় ২৫০ টাকা।
সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে নান্দাইল উপজেলা পরিষদ পুরাতন হল রুমের সামনে দাড়িঁয়ে রয়েছে কার্গো ট্রাক। শ্রমিকরা পুরাতন হল রুম থেকে বই মাথা করে নিয়ে এসে গাড়িতে উঠাচ্ছেন। পাশে বসেই বইয়ের হিসাব নিচ্ছেন সহ-শিক্ষা অফিসার (এটিও) হাফিজুর রহমান। তবে কোনো ধরনের মিটার স্কেল ছাড়াই বা পরিমাপক যন্ত্র ছাড়াই প্রতি বান্ডেল বই ১২ কেজি হিসেবে গাড়িতে উঠানো হচ্ছে। এদিন ৯ হাজার ৭২ কেজি বই বিক্রি করা হয় এবং আরও অর্ধেক বই হল রুমে রয়ে গেছে, যা পরবর্তীতে গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। প্রথম দিনে ১ লাখ ৩৬ হাজার টাকার বই বিক্রি করা হয়েছে। ওই সমস্ত বই নিয়ে যাচ্ছে পরিবহণ ঠিকাদারের প্রতিনিধি ঢাকার ছোটকাটরার মেসার্স সৌরভ পেপার স্টোরের মালিক সেলিম শেখ।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন আদর্শ শিশু বিদ্যানিকেতনের পরিচালক হাসান মাহমুদ তারিক জানান, প্রতি বছর আমরা বইয়ের জন্য ঘোরাঘুরি করেও বই পাই না। ৪র্থ শ্রেণির ১০ সেট বইয়ের জন্য শিক্ষা অফিসে অনেকবার গিয়েছি কিন্তু বই পাইনি। তবে এখনো প্রচুর বই কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। প্রাথমিক শিক্ষা অফিস প্রতি বছর ৫% বেশি বই চাহিদা দিয়ে বই আনলেও তা যথাযথ বিতরণ করা হয় না। ফলে স্টকে বই থেকে যায়।
নান্দাইল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. ফজিলাতুন্নেছা বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী টেন্ডারের মাধ্যমে ২০২৩-২০২৪ শিক্ষা বর্ষের বইগুলো বিক্রি হচ্ছে। তবে ২০২৫ সালের বই বিক্রি হচ্ছে না। এ বছর থেকে সঠিকভাবে চাহিদা দেওয়া হবে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।