সংবাদ মধ্যপ্রাচ্য

গাজায় ৫৭ হাজার শিশু এতিম , যুদ্ধে সবচেয়ে ভারি বোঝা বহন করছে নারীরা

image 1760984749
print news

ইত্তেহাদ নিউজ,অনলাইন : ইসরাইলি আগ্রাসনের আগুনে জ্বলছে গাজা। কাগজে কলমে যুদ্ধবিরতি হলেও হামলা বন্ধের নাম নেই। একের পর এক গণহত্যা, অবরোধ ও বোমাবর্ষণের মধ্যে নতুন করে জন্ম নিচ্ছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা-বেড়ে উঠছে এতিম শিশুদের এক প্রজন্ম।

শনিবার গাজার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহকারী উপসচিব ড. রিয়াদ আল-বিতার জানান, বর্তমানে গাজার অনাথ শিশুর সংখ্যা বেড়ে আনুমানিক ৫৭ হাজারে দাঁড়িয়েছে। গণহত্যার আগে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ১৭,০০০। যুদ্ধের কারণে এই সংখ্যা তিনগুণ হয়েছে। আলজাজিরা।

রিয়াদ বলেন, ইসরাইলের দুই বছরের গণহত্যার ফলে প্রায় ৪০ হাজার শিশু তাদের বাবা ও মা দু’জনের মধ্যে অন্তত একজনকে হারিয়েছে। অনেকে আবার উভয়কে হারিয়ে একাই বেঁচে আছে এই ধ্বংসস্তূপের শহরে। গাজার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এখন এই বিপুল সংখ্যক অনাথ শিশুর জন্য একটি সমন্বিত পুনর্বাসন কৌশল গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই পরিকল্পনায় থাকবে শিশুদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মানসিক পুনর্গঠন। একই সঙ্গে ‘পূর্ণাঙ্গ যত্ম’ নিশ্চিত করতে বিশেষ অনাথ আশ্রম ও সহায়তা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।

রিয়াদ আল জাজিরাকে বলেন, গাজা উপত্যকায় বর্তমানে অন্তত পাঁচটি নতুন অনাথ আশ্রম জরুরিভাবে প্রয়োজন। একই সঙ্গে যেসব পরিবার অনাথ শিশুদের আশ্রয় দিচ্ছে, তাদের জন্যও তাৎক্ষণিক আর্থিক সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি আরও জানান, মন্ত্রণালয় এখন মানবিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় রেখে একটি সমন্বিত ডিজিটাল সিস্টেম গড়ে তুলছে। যা নাগরিক নিবন্ধন ও সরকারি তথ্যসূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের মাধ্যমে একটি ঐক্যবদ্ধ ডাটাবেস তৈরি করবে। এর লক্ষ্য, সহায়তা কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনা, পুনরাবৃত্তি রোধ করা এবং সেবাপ্রদানকে আরও দ্রুত ও কার্যকর করা। তবে গাজার রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অনেক স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বতন্ত্রভাবে কাজ করার প্রবণতা মন্ত্রণালয়ের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে রিয়াদ বলেন, ‘সব পক্ষের মধ্যে এখন সমন্বয়ের ভালো অগ্রগতি হয়েছে। সবাই মিলে কাজের একটি অভিন্ন ধারা তৈরি করতে পেরেছি।’

ইসরাইলি আগ্রাসন শুধু জীবনই কেড়ে নেয়নি, এটি পুরো গাজাকে চরম দারিদ্র্যের কবলেও ফেলে দিয়েছে। ড. রিয়াদ জানান, যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফিলিস্তিনিরা মারাÍকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। তার ভাষায়, গাজায় দারিদ্র্য এখন সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে, যেখানে কে সবচেয়ে দরিদ্র, তা নির্ধারণ করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। রিয়াদের মতে, বর্তমানে গাজায় দারিদ্র্যের হার ৯৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এর কারণ হিসাবে তিনি উল্লেখ করেন, ইসরাইলি আগ্রাসনে আয়-উৎস হারানো, অনাহার এবং দখলদার বাহিনীর পরিকল্পিত দারিদ্র্যনীতিকে। গাজায় এখন সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো শিশুদের ভবিষ্যৎ। যুদ্ধ তাদের শিক্ষা, পরিবার, নিরাপত্তা ও স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে। যার ফলে ভয়, সহিংসতা ও শিশুশ্রম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই যুদ্ধে সবচেয়ে ভারী বোঝা বহন করছে গাজার নারীরা। তারা এমন পরিবেশে বাস করছে যেখানে তাদের কোনো নিরাপত্তা নেই।

 

সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায় ।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.