১৭ বছর কোথায় ছিলো বিএনপির নেতা অহিদুজ্জামান দিপু: প্রশ্ন বাগেরহাটবাসীর

ইত্তেহাদ নিউজ,অনলাইন : বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ওয়াহিদুজ্জামান দিপু একাধিক অনৈতিক ও দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে জর্জরিত। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলা অবৈধ সম্পর্ক, দলীয় সম্পদ হস্তক্ষেপ, শ্রমিকদের টাকা আত্মসাৎ এবং ছেলে ফাইজালের রহস্যজনক আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অনৈতিক সম্পর্ক ও ক্ষমতার অপব্যবহার:
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দিপু মোল্লাহাট উপজেলার সরশপুর স্কুলের এক শিক্ষিকার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি বাগেরহাট জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং সেই সময়েই এই সম্পর্কের প্রমাণ মেলে। তখন এই কেলেঙ্কারি নিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার পর্যায়ে তীব্র উত্তাপ তৈরি হয়েছিল।
দলীয় সম্পদ ও শ্রমিকদের টাকা আত্মসাৎ:
দিপু বিএনপির নামে স্থানীয় কর্মীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করলেও গত ১৭ বছর ধরে তাদের কোনো আইনি বা রাজনৈতিক সহায়তা দেননি। এমনকি দলীয় কার্যক্রমেও তার অনুপস্থিতি ছিল গত ১৭ বছর। তবে এখন তিনি আসন্ন নির্বাচনে নেতৃত্ব দখলের জন্য ছেলে ফাইজালের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় বিএনপির একজন প্রভাবশালী সম্পাদককে গাড়ি উপহার দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একজন কর্মী ক্ষোভ করে বলেন- বাবা ছেলে মুচলেকা দিয়ে দল ছেড়েছিলেন। ৫ আগষ্টের পরে তাদের চেয়ে বড় বিএনপি নেতা আর নেই! আসলে খোঁজ নিয়ে দেখেন এদের চেয়ো বড় ধোঁকাবাজ একজনও নেই!
ছেলে ফাইজালের রহস্যজনক আয়ের উৎস:
দিপুর ছেলে ফাইজালের কোনো বৈধ ব্যবসা নেই, অথচ তার ব্যয়ভার ও সম্পদ অর্জনের উৎস অস্পষ্ট। স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলছেন, যদি ফাইজালের কোনো আয়ের উৎস না থাকে, তাহলে তিনি কীভাবে উচ্চবিত্ত জীবনযাপন করছেন এবং দলীয় নেতাদের উপহার দিচ্ছেন অনেক দামী কিছু? গোপন সূত্রে জানা গেছে, দিপু ও তার ছেলে দলীয় পদ ও প্রভাব ব্যবহার করে অবৈধ অর্থ উপার্জন করছেন। জেড,সি,এফ নামে একটি ভূঁইফোড় সংগঠনের নাম ব্যবহার করে পদ বানিজ্য ও বিদেশী অর্থ কালেকশন বানিজ্যের অভিযোগ রয়েছে দিপুর ছেলে ফাইজালের বিরুদ্ধে।
বাগেরহাট-১ আসন হুমকির মুখে:
দিপুর এই সব কর্মকাণ্ডে বিএনপির স্থানীয় সমর্থকরা ক্ষুব্ধ। তার বিরুদ্ধে বেশ আগের শ্রমিকদের ঘেরের মাটি খননের টাকা আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে, যা আজও পরিশোধ করা হয়নি। একজন স্থানীয় নেতা বলেন, দিপু দলকে তার ব্যবসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন, যার মাধ্যমে তিনি সাধারণ মানুষকে ঠকাচ্ছেন।
তদন্ত ও জবাবদিহিতার দাবি:
বিএনপির অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, দিপুর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জোরালো হচ্ছে। দলীয় নেতাকর্মীরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে বাগেরহাট-১ আসনে বিএনপির পরাজয় নিশ্চিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। দিপু ও ছেলে ফাইজাল ৫ আগষ্টের পরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
ওয়াহিদুজ্জামান দিপুর নেতিবাচক কর্মকাণ্ড বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। তার অনৈতিক সম্পর্ক, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা দলের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে। এখন সময় এসেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার। নতুবা বাগেরহাটে দলীয় অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। দিপু ও তার ছেলে ফাইজালের অতিত ও বর্তমান কর্মকান্তে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে বলে স্থানীয় বিএনপি নেতা, কর্মীরা মনে করেন।অহিদুজ্জামান দিপু জাসদ ছাত্রলীগ, বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন ও পরে জাতীয় পার্টি করে ১৯৯৬ সালে বিএনপিতে যোগদান করেন।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।


