মামুনুর রশীদ নোমানী,বরিশাল : বরিশাল খাদ্য বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বদলী বানিজ্যসহ নানান দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।ময়মনসিংহে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক থেকে পদোন্নতি পেয়ে বরিশালে যোগদানের পরেই ময়মনসিংহের মত দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িয়ে পরেন।
ঘুস নিয়ে ইতিমধ্যে পটুয়াখালী থেকে আলাউদ্দিনকে বাকেরগঞ্জের হলতায় বদলী করেছে।আমতলী থেকে শান্তি রঞ্জনকে বরিশাল সদরে বদলী করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।এছাড়া বিএনপির এক শীর্ষ নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে ভোলা থেকে ইমদাদকে বরিশালে বদলী করার চেষ্টা করছেন।
আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ আব্দুল কাদের যোগদানের পরেই খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাদের জেলায় বদলীতে ২০ লাখ ও উপজেলায় বদলীতে ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ নির্ধারন করেছেন।ঘুসের মুল্য নির্ধারন করায় বরিশাল অঞ্চলের খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কর্মকর্তাদের বদলী,গুদামে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পদায়ন করে ছলেছেন লাখ লাখ টাকার ঘুসের বিনিময়ে।কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বদলীতে নেয়া হচ্ছে মোটা অংকের টাকা।
ময়মনসিংহে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দ্বায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদের দোসর ডিলারদের পুনর্বাসনের অভিযোগ ওঠে।বিএনপিসহ সাধারন মানুষের প্রতিবাদে ওএমএস ডিলার নিয়োগ লটারীর কার্য্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছিল।এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপি নেতা টুটুল ওয়াহিদ বলেন, “ফ্যাসিবাদের সময় যারা খাদ্য বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করতেন, তারাই লটারির আয়োজন করেছেন। এতে বিষয়টি স্পষ্ট যে, আওয়ামী লীগের দোসররাই সুযোগ পাবে। এটা খাদ্য বিভাগের একটি কৌশল। তাই আমরা হট্টগোল করলে লটারি কার্যক্রম স্থগিত হয়।স্থানীয় লোকজন আব্দুল কাদেরকে ফাসিবাদের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন,আব্দুল কাদের ময়মনসিংহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক পদে থাকাকালিন সময়ে বোরো,আমন ধান ক্রয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিলেন।তিনি ঘুস নিয়ে বাচিঁয়ে দিয়েছেন খাদ্য গুদামের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের। যারা গুদাম থেকে চাল লোপাট করে ধরা পরেছে তাদের থেকে ঘুস নিয়ে অভিযোগ থেকে মুক্ত করেছেন।ময়মনসিংহের একজন সাংবাদিক জানান,আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে ম্যানেজ করতো বিভিন্ন উপায়ে।তিনি জানান,আব্দুল কাদেরের সহযোগীতায় ময়মনসিংহের খাদ্য গুদাম গুলোতে ভয়ঙ্কর দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠেছিল। মিলারদের কাছ থেকে টনপ্রতি ৪০০থেকে ৫০০ টাকা ঘুস নিয়ে গুদামে ঢুকানো হতে নিম্নমানের চাল! অল্প সময়ে কোটিপতি বনে গেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এই ঘুস ওপেন সিক্রেট বিষয়।একে বলা হতো “অফিসিয়াল খরচ”! নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ময়মনসিংহের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘুষের এই রেট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের নির্ধারণ করে দিতেন। আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বলা হতো“তোমরা শুধু নিয়ম মেনে চলো, দোষ গেলো ওপরে।” তার বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ , ভালো মানের চালও ঘুষ ছাড়া গুদামে ঢুকতে পারেনি ময়মনসিংহের কোন গোডাউনে।
“ঘুষ না দিলে আমাদের ভালো চালও মন্দ বলে ফেরত দেয়া হতে মিলারদের। আবার ঘুষ দিলে মন্দ টাকেও ভালো বলে গ্রহণ করতো। মিলাররা প্রতিবাদ করেনি কারন তাদের ব্যবসা ও লাইসেন্স ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়ার হুমকিতে।” আমন ও বোরো মৌসুমে এই ঘুষ বাণিজ্য ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। বিভিন্ন গুদামে নিম্নমানের চাল জমা পড়েছিল, অথচ তদারকি করেন নি আব্দুল কাদের।
এদিকে, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা খাদ্যগুদামের ১ কোটি ৭১ লাখ ৯২ হাজার ৩৮২ টাকা মূল্যের ৩২৯ টন চাল ও খালি বস্তা আত্মসাতের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দায় সারেন তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের।
এছাড়া বরিশাল ত্রিশ গোডাউনে কর্মরত সুজিত কুমার রায়কে ২০ লাখ টাকার বিনিয়মে পটুয়াখালি সদরে বদলী করা হলেও তা জেনে কোন ব্যবস্থা নেয়নি আব্দুল কাদের।সুজিত কুমার রায় ছিলেন আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি পঙ্কজ দেবনাথের জেল পার্টনার। এ বিষয়ে বরিশাল আঞ্চলাক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের এর মোবাইল ২৪ অক্টোবর বিকেল ৪ টা ৩ মিনিটে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত