বরিশাল পোর্ট রোড মাছের মোকাম দখলে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি ভাই ভাই


বরিশাল অফিস: বরিশাল জেলা মৎস্য পাইকারি অবতরণ কেন্দ্র দখলে নিয়েছেন বরিশাল মহানগর মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক কামাল সিকদার, ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিব আনিচুর রহমান মিলন, ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক খান মো. কামাল ও সদর উপজেলা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জহির সিকদার। নয়া দখলকারী খান কামাল হলেন- আ.লীগ সরকার শাসণামলে পোর্ট রোড নিয়ন্ত্রণে নেয়া মৎস্যজীবী লীগের নেতা খান হাবিবের এর আপন ভাই।
খান কামাল বলেন, তিনি পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র দখল না করলেও নাম বদল করেছেন, কিন্তু তা অফিসিয়ালি হয়নি। তাছাড়া এ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি পূর্বে চার দলীয় জোট সরকারের সময় জিয়ার নামেই ছিল। আ.লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর নাম পরিবর্তন করেছিল। এখন আগের নাম ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক জানিয়েছেন, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের নাম শহীদ জিয়ার নামে রাখার বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না। বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের সহকারী পরিচালক রিয়াদ হোসেন বলেন, পোর্ট রোড মৎস্য মোকামের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি তাদের জানা নেই। সরকারিভাবে নাম পরিবর্তনের কোনো অনুমোদনও দেয়া হয়নি।
পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, আ.লীগ সরকারের সময় ২০১০ সালের দিকে এর নিয়ন্ত্রণ নেন মৎস্যজীবী লীগের নেতা খান হাবিব। তিনি তার লোকজন দিয়ে মোকামের পাশাপাশি রাস্তার ওপর বাজার বসিয়ে চাঁদা তুলতেন। এরপরে ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করেছেন মহানগর আ.লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল। তিনি মহানগর আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ‘প্রধান খলিফা’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০২৩ সালে সাদিক নগরে একক আধিপত্য হারালে মোকাম আবারও খান হাবিবের নিয়ন্ত্রণে যায়। তিনি চলতি অর্থবছরে তার স্ত্রীর নামে এটি ইজারা নেন।
গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর খান হাবিব আত্মগোপন করেন। পর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকজন বিএনপির নেতা মৎস্য আড়তটিতে হানা দেন। ওই ওয়ার্ডেই ব্যবসাকেন্দ্রটি অবস্থিত। ফলে ৭ ও ৮ আগস্ট সেখানে খাজনা আদায় বন্ধ ছিল। এ খবর জানাজানি হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা গিয়ে প্রকৃত ইজারাদারের প্রতিনিধির খাজনা আদায় নিশ্চিত করেন। তবে খান হাবিবসহ তার অনুসারীরা আত্মগোপনে থাকায় মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর শীর্ষ পদ বাগিয়ে নেন বিএনপি পন্থীরা। এখন তাদের নিয়ন্ত্রণেই চলছে মোকাম।
জহির সিকদার আওয়ামীলীগের গত ১৫ বছর লুটেপুটে খেয়ে এখন আবার মহানগর যুবদলের সহ সভাপতি এবং কামাল মৎসজীবি দলের পরিচয় দিয়ে আবার লুটপাট ও দখল বানিজ্য করার কারনে তাদের দল থেকে বহিস্কারের দাবী জানিয়েছে যুবদল ও মৎস্যজীবী দলের একাধিক নেতারা।
উল্লেখ্য,পোর্ট রোড মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনে জহির শিকদার বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের সময় নিরব হোসেন টুটুলের কমিটির যুগ্ন সম্পাদক ও খান হাবিবের কমিটিতে সম্পাদক এবং ৫ আগষ্টের পর হয়ে যান সভাপতি । এ দিকে জহির ও কামালের নেতৃত্বে দখল নিয়েই নাছিরেরর আড়ৎ দখলসহ ব্যাপক চাঁদাবাজীর অভিযোগ উঠেছে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়