বাংলাদেশ বেতারে ফ্যাসিবাদী সিন্ডিকেট: ডিজির ছত্রছায়ায় ১০ বছর একই জায়গায় বহাল ডিডি মনির


মামুনুর রশীদ নোমানী : ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর বাংলাদেশের সকল সরকারি দপ্তরে কমবেশি পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশ বেতারেও রদ-বদল করা হয়েছে। কিন্তু বহাল তবিয়তে থাকা আওয়ামী দোসর বর্ণচোরা মনির হোসেন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ বেতারের সবআমলে প্রতাপশালী উপ-পরিচালক মো. মনির হোসেন বহাল তবিয়তে রয়েছে। তার মূল শক্তির জায়গা হচ্ছে বেতার মহাপরিচালক এস এম জাহিদ।
অন্যদিকে বর্তমান ডিজি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত প্রেস উইং এ (২০০৯-২০১৩) সাল অবধি কর্মরত ছিলেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনার ঘনিষ্ঠ হওয়ায় অধিকাংশ সময়ই বিদেশে তার সফরসঙ্গী হতেন বর্তমান বাংলাদেশ বেতারের ডিজি জাহিদ। এমনকি বেতারে পদোন্নতির চরম জট বিরাজমান থাকলেও তিনি শেখ হাসিনার আত্মীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীকে ব্যবহার করে সময় মতো সকল পদোন্নতি (৫টি) নিশ্চিত করেছেন। বেতারের ডিজি ফরিদপুরের সন্তান এস এম জাহিদ বিসিএস (তথ্য) ক্যাডারের ১৩ তম ব্যাচ এবং তথ্য ও সম্প্রচার সচিব বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১৩ তম ব্যাচের সদস্য হওয়ায় তাদের মধ্যে খুবই সুসম্পর্ক বিদ্যমান। সেজন্য তথ্য সচিব মাহবুবা ফারজানা তৎকালীন তরুণ উপদেষ্টাকে ভুল বুঝিয়ে তারই ব্যাচম্যাট শেখ হাসিনার প্রেস উইং এর সাবেক কর্মকর্তা এস এম জাহিদকে মহাপরিচালকের দৈনন্দিন দায়িত্ব প্রদান করেন।
বাংলাদেশ বেতারের উপপরিচালক মো. মনির হোসেন ৫ আগস্টের পর থেকেই মহাপরিচালকের ছত্রছায়ায় নিয়োগ ও বদলী বাণিজ্য, অবৈধভাবে বেতার থেকে পট পরিবর্তনের পর সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাকে করে গুরুত্বপূর্ণ মালামাল বের করা (গেটের ফুটেজ তলব করলে পাওয়া যাবে), শিল্পীদের নামে-বেনামে চুক্তিপত্র প্রদান, আত্মীয় স্বজনকে অনিয়মিত শিল্পী হিসেবে চুক্তিবদ্ধ করা, শেখ মুজিবের ম্যুরালের ধাতব অংশ পাচারসহ (যদিও এই অপকর্ম ধামাচাপা দিয়ে কমিটি করা হয়েছে) অনেক অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বিগত ১০ বছরের অধিক সময় বাংলাদেশ বেতার, ঢাকার উপ-পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) এবং বিভিন্ন প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বেতারের সকল অনুষ্ঠানে শেখ পরিবারের বন্ধনায় নিজেকে অন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন (প্রমাণক ভিডিও ফুটেজ রয়েছে)! সরকারি চাকরিরত অবস্থায় মনির হোসেন “শেখ রাসেল মেমোরিয়াল সমাজ কল্যাণ সংস্থা”র উপদেষ্টা পদে এখনও দায়িত্ব পালন করেছেন (ছবি সংযুক্ত)। বর্তমানে তিনি সবচেয়ে বড় ফ্যাসিস্ট বিরোধী। ইতোমধ্যে তিনি মহাপরিচালকের সহযোগিতায় একাধিক দেশে সরকারি সফর করেছেন।
ডিজি এস এম জাহিদ, ডিজির স্টাফ অফিসার মাহমুদুন্নবী এবং উপ-পরিচালক মনির হোসেনসহ ভয়ংকর সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ বেতারে। স্টাফ অফিসার মাহমুদুন্নবী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ৬ বছরের অধিক সময় থেকে ডিজির স্টাফ অফিসার পদে ক্রমাগত দায়িত্বপ্রাপ্ত। ডিজি পরিবর্তন হলেও ছলে-বলে তিনি থেকে যাচ্ছেন একই পদে। এদিকে ফ্যাসিবাদের আরেক দোসর কিরোর রঞ্জন মল্লিককে বরিশাল থেকে রাজশাহী বেতারে বদলী করা হয়েছে।বেতার জুড়ে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসরদের দাপটে ২৪ এর স্বাধীনতাকামী ছাত্র জনতা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন । ডিজি এসএম জাহিদ, ডিজির স্টাফ অফিসার মাহমুদুন্নবী এবং উপ-পরিচালক মনিরসহ এই তিনজনের সিন্ডিকেট বহাল থাকলে বাংলাদেশ বেতারের (জিম্মিদশা) অবস্থান আরও নাজুক হওয়ার আশংকা রয়েছে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।