দশমিনা ইউএনও ইরতিজা হাসানের অপসারণ দাবিতে ফের আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা


ইত্তেহাদ নিউজ,পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরতিজা হাসানের অপসারণ দাবিতে ফের আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ এলাকার ইউএনওর সরকারি বাসভবনের সামনের সড়ক দখল করে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা।রাজনৈতিক দলের ছাত্রনেতাদের ডাকে সাড়া দিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বেগম আরেফাতুন্নেছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ইউএনও ইরতিজা হাসানের বিরুদ্ধে শিক্ষক দম্পতি লাঞ্ছিতসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
জানা গেছে, দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এহছানুল হকের উপজেলা পরিষদের সামনের নির্মাণাধীন ভবন ও অফিসার্স ক্লাবের ভবন পাশাপাশি। ঘটনার দিন ১২ আগস্ট দুপুরে ইউএনও ইরতিজা হাসান ওই শিক্ষককে তার অফিস কক্ষে ডেকে পাঠান। পরে অফিসার্স ক্লাবে তার ভবনের পাইপসহ বিভিন্ন কারণে অসুবিধা হওয়ার কথা বলে ইউএনও ইরতিজা হাসান শিক্ষক এহছানুল হককে তার বাসার পেছনের পানি নিষ্কাশনের পাইপ সরিয়ে নিতে বলেন এবং তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এ সময় তার সঙ্গে তার সহধর্মিণী শিক্ষিকা মাজেদা বেগমকেও লাঞ্ছিত করা হয় বলে দাবি করা হচ্ছে।এ ঘটনার পর ইউএনওর অপসারণ দাবিতে সড়ক অবরোধ করে ১৩ ও ১৪ আগস্ট আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
তীব্র আন্দোলনের মুখে ইউএনও নিজ বাসভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়লে ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় পুলিশ পাহারায় দশমিনা ছাড়েন ইউএনও ইরতিজা হাসান।দশমিনা ছাড়ার পর রাতে ইউএনও ইরতিজা হাসানকে অসুস্থ দেখিয়ে ৭ দিনের ছুটি দেয় জেলা প্রশাসন। ভারপ্রাপ্ত ইউএনওর দায়িত্ব দেওয়া হয় অ্যাসিল্যান্ড মাইনুল ইসলাম খানকে।শিক্ষার্থীদের দাবি, ইউএনওকে রক্ষা করতে তাকে অপসারণ না করে ছুটি দিয়ে কৌশলে বাঁচিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ইরতিজা হাসান বৃহস্পতিবার দশমিনায় অফিস করবেন- এমন খবরে ফের আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের নেতারাও অংশ নিয়েছেন।
অন্যদিকে ইউএনও অপসারণের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্রনেতা ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গাজী সালাউদ্দিনকে মুখপাত্র করে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়।শিক্ষার্থীদের দাবি, ইউএনও ইরতিজা হাসান দশমিনায় যোগদানের পর নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন কাজে তাকে দিতে হয় ঘুস।
ছুটিতে থাকলেও সরকারি নাম্বার ইউএনও ইরতিজা হাসানের কাছেই রয়েছে। তাই তার অপসারণের দাবিতে আন্দোলন প্রসঙ্গ ও অভিযোগের বিষয় বক্তব্য নেওয়ার জন্য ইউএনও ইরতিজা হাসানকে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, শিক্ষকের বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। যে শিক্ষকের সঙ্গে ঘটনা তার কোনো অভিযোগ নেই। এ নিয়ে ওই শিক্ষক ফেসবুকে একটি পোস্টও দিয়েছেন। এখন আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই। যারা আন্দোলন করছেন তাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য আছে।
সেখানে দেখা যায়- ভুক্তভোগী শিক্ষক এহছানুল হকের সহধর্মিণী শিক্ষিকা মাজেদা বেগম তার ফেসবুকে লিখেছেন- ‘আসসালামু আলাইকুম, আমার সকল শুভাকাঙ্ক্ষীগণ। আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই অবগত আছেন যে, গতকাল (সোমবার) সম্মানিত ডিসি স্যার তার অফিসকক্ষে আমাদের ডেকেছিলেন। ডিসি স্যার সেখানে আমাদের ওপরে কোনোভাবেই চাপ প্রয়োগ করেননি। সেখানে খুব শান্ত পরিবেশে ডিসি স্যার মনোযোগ দিয়ে আমাদের কাছ থেকে ওই দিনের ঘটনা শুনেছেন। একপর্যায়ে ডিসি স্যার, আমাদের দশমিনা উপজেলার নির্বাহী অফিসারের ওই অনাকাঙ্ক্ষিত অসদাচরণের জন্য খুবই দুঃখপ্রকাশ করেছেন। যেহেতু ডিসি স্যারের মতো একজন সম্মানিত লোক আমাদের কাছে সেদিনের ঘটনার জন্য বারবার দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তাই আমাদের আর ওই বিষয়ে কোনো ক্ষোভ নেই।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।