গাজায় যুদ্ধোত্তর শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষ গঠনের পরিকল্পনা,


ইত্তেহাদ নিউজ,অনলাইন : গাজার যুদ্ধোত্তর শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারকে অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে আনার বিষয়ে আলোচনা চলছে। এ পরিকল্পনায় হোয়াইট হাউজের সমর্থন রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রস্তাব অনুযায়ী, জাতিসংঘ ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সহায়তায় গাজা ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজিশনাল অথরিটি’র (গিটা) নেতৃত্ব দেবেন ব্লেয়ার। পাঁচ বছর মেয়াদি এ সংস্থার হাতে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক ও আইনি ক্ষমতা থাকবে। পরে নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দেওয়া হবে ফিলিস্তিনিদের হাতে।
ব্লেয়ারের কার্যালয় বলেছে, গাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত করার কোনও পরিকল্পনায় তিনি অংশ নেবেন না। আগস্টে তিনি হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও অংশ নেন। বৈঠক শেষে মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ এ পরিকল্পনাকে ‘অত্যন্ত বিস্তৃত’ বলে আখ্যায়িত করেন।
ইকোনমিস্ট ও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এ অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম প্রথমে মিসরের সীমান্তে সদর দফতর স্থাপন করে শুরু হবে। পরে গাজায় স্থিতিশীলতা আসার পর মূল ভূখণ্ডে স্থানান্তরিত হবে। একটি বহুজাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনীও এতে যুক্ত হতে পারে। মডেলটি নেওয়া হচ্ছে পূর্ব তিমুর ও কসোভোর অভিজ্ঞতা থেকে।
টনি ব্লেয়ার ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধে ব্রিটিশ সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। পরে তদন্তে দেখা গেছে, অস্ত্র সম্পর্কিত তথ্য ছিল বিভ্রান্তিকর। ২০০৭ সালে পদত্যাগের পর তিনি মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া ও জাতিসংঘের দূত হিসেবে কাজ করেন।
গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন প্রস্তাব উঠে এসেছে। মার্চে আরব দেশগুলো গাজা পুনর্গঠনের একটি পরিকল্পনা হাজির করে। ওই পরিকল্পনায় ২১ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাদের ভূমিতেই থাকতে দেওয়ার কথা বলা হয়। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও হামাস প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল তা প্রত্যাখ্যান করে। জুলাইয়ে নিউইয়র্কে ফরাসি-সৌদি উদ্যোগে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গাজায় অন্তর্বর্তী প্রশাসনিক কমিটি গঠনের প্রস্তাব পাস হয়, যা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদও সমর্থন করে।
এমন সময়ে বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি ট্রাম্পসহ বিশ্বনেতাদের সঙ্গে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক শান্তি পরিকল্পনায় কাজ করতে প্রস্তুত। তবে হামাসের কোনও ভূমিকা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং সংগঠনটির নিরস্ত্রীকরণের দাবি জানান।
এরই মধ্যে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে। তারা পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে পশ্চিম তীর ও গাজা নিয়ে স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এ সিদ্ধান্তকে ‘হামাসকে পুরস্কৃত করা’ হিসেবে সমালোচনা করেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হওয়ার পর গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এই অভিযানে এ পর্যন্ত অন্তত ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন এ অভিযানে গণহত্যার অভিযোগ তুললেও ইসরায়েল তা অস্বীকার করছে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।