চট্টগ্রাম বাংলাদেশ

চট্রগ্রাম ঐতিহ্য কর্নার স্হাপন করা হবে মতবিনিময় সভায় বক্তারা

P 12 10 17
print news

মোঃ সিরাজুল মনির ,চট্রগ্রাম :

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ভবনের প্রায় ৮ হাজার বর্গফুট ফ্লোরে ‘চট্টগ্রাম ঐতিহ্য কর্নার’ স্থাপনের জন্য গঠিত কমিটির দ্বিতীয় মতবিনিময় সভায় সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন বলেছেন, এটি একটি অনন্য উদ্যোগ। চট্টগ্রাম চিরন্তন আছে, চিরন্তন থাকবে। এর আগেও চট্টগ্রামের ইতিহাস–ঐতিহ্য নিয়ে কাজ যে হয়নি তা নয়। চট্টগ্রাম জেলার ইতিহাস অনেক প্রাচীন। এই চট্টগ্রামকে নিয়ে আমাদের গর্বের সীমা নেই। পর্বত, নদী, সমুদ্র, লেক কি নেই চট্টগ্রামে! এখানে সুফি সাধকরা এসেছেন অনেক আগেই। যেজন্য বার আউলিয়ার দেশ বলা হয় চট্টগ্রামকে। সেই হিসেবে ভালো ইতিহাস লেখা হয়নি। ‘চিরন্তন চট্টগ্রাম’ নামটি বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে এই কাজের অবকাঠামো নির্মাণ করতে গিয়ে যেন কোনো ত্রুটি না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে কাজ করতে হবে। বাইরে থেকে যারা আসবেন তারা যেন ৪০/৪৫ মিনিটে চট্টগ্রাম সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা নিয়ে যেতে পারেন সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি। কাজটি চমৎকারভাবে সম্পন্ন করার জন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

সভায় সাবেক মুখ্য সচিব আবদুল করিম বলেন, আমলারা সরকারি কাজ ব্যতীত সামাজিক কাজ করতে পারেন, এটা সাধারণ মানুষ মনে করে না। সুযোগ পেলে তারাও কাজ করেন। এই উদ্যোগে চট্টগ্রামের সাবেক আমলাদের সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেন তিনি।

একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, চট্টগ্রামের ইতিহাস–ঐতিহ্য নিয়ে যদি তথ্যচিত্র নির্মাণ করা হয় তখন এর প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে। আসল চিত্র ভালোভাবে ফুটে উঠবে। তাতে চট্টগ্রাম সম্পর্কে মানুষের বুঝতেও সহজ হবে।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, আমাদের রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য। কিন্তু এটি আমরা সুন্দরভাবে তুলে ধরতে পারিনি। চট্টগ্রামের বাইরে কিংবা দেশের বাইরে থেকে কোনো ব্যক্তি এলে তা তাদের সামনে তুলে ধরতে পারি না। অথচ তারাও জানে, আমরাও জানি, চট্টগ্রামের হাজার বছরের ইতিহাস রয়েছে। এখন আমরা তা দেশ তথা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছি। সবার সহযোগিতায় এ কাজ সুসম্পন্ন হবে। প্রথমে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ টাওয়ারে ৮ হাজার বর্গফুটের একটি ফ্লোরে চট্টগ্রাম ঐতিহ্য কর্নার স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি এই উদ্দেশ্যে জঙ্গল সলিমপুরে ৫ একর জমি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এতে সরকারের কাছ থেকে সাড়াও মিলতে শুরু করেছে।

ড. মাহবুবুল হক বলেন, এই পরিকল্পনা দেখে আমার বাঁচার সাধ আরো বেড়ে গেছে। বস্তুগত সংস্কৃতি বিপুল হারে বেড়ে গেছে। কিন্ত মানব সংস্কৃতিকে সেভাবে আমরা উৎসাহিত করতে পারিনি।

এ কে খান ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি সেক্রেটারি সালাউদ্দিন কাশেম খান বলেন, এই উদ্যোগে তিনি আন্তরিক সহযোগিতা করবেন। তার কাছে ঐতিহাসিক যেসব নিদর্শন রয়েছে তা তিনি এখানে দান করার ঘোষণা দেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, যে কাজটি শুরু করা হয়েছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলোআপ মিটিংয়ের মাধ্যমে কাজকে এগিয়ে নিতে হবে।

কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভার শুরুতে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল গঠিত বিভিন্ন উপ–কমিটির গঠন ও কার্যাবলী তুলে ধরেন। ঢাকা থেকে জুমে সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।

জেলা পরিষদের ডাক বাংলো কর্ণফুলীতে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন চুয়েট ভিসি ড. রফিকুল আলম, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক এ এফ এম আওরঙ্গজেব, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ওমর হাজ্জাজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন অধ্যাপক মো. সেকান্দর চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, ইতিহাসবিদ মুহাম্মদ শামসুল হক, বিটিভি চট্টগ্রামের জিএম নুরুল আরশাদ রঞ্জু, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের সভাপতি স্থপতি আশিক ইমরান, সাংবাদিক ডেইজি মওদূদ, পিপি অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, কবি ওমর কায়সার, কথাসাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, দৈনিক আজাদীর সহযোগী সম্পাদক রাশেদ রউফ, চিফ রিপোর্টার হাসান আকবর, সুপ্রভাত বাংলাদেশের সহযোগী সম্পাদক কামরুল হাসান বাদল, ইতিহাস গবেষক নেছার আহমদ, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দার, সাবেক অধ্যক্ষ রীতা দত্ত, নৃত্যশিল্পী প্রমা অবন্তি, সঙ্গীতশিল্পী সনজিত আচার্য্য, নাট্যকার সঞ্জীব বড়ুয়া, আলেঙ আলীম, সংস্কৃতি সংগঠক শাহরিয়ার খালেদ, হাসিনা খান, শিল্পী দীপক দত্ত, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দিদারুল আলম, প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের উপসচিব মোহাম্মদ বেলাল হোসেন, জেলা পরিষদের সদস্য এইচ এম আলী আবরাহা, সাংবাদিক মাসুদ মিলাদ, আল রাহমান, ইসমাইল জসীম, এস এম ইফতেখারুল ইসলাম, শাহ আলম ইমন, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী রুমেল, ইসমাঈল হক চৌধুরী ফয়সাল প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *