বগুড়ায় সবজির বাজারে আগুন, বিপাকে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ


আসাদুজ্জামান আশা,বগুড়া জেলা প্রতিনিধি :
বগুড়ায় টানা সাত দিন বৃষ্টির কারণে সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। হঠাৎ সবজির দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ।
বাজার ঘুরে দেখা যায় পাইকারি বাজারের প্রচুর আমদানি থাকলেও এসব সবজি প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন বৃষ্টির কারণে বাজারে সরবরাহ কম থাকায় সবজির দাম বেড়েছে। অন্যদিকে সরবরাহ বাড়লে সবজির দাম কমে আসবে বলে জানান খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা আরো বলেন বৃষ্টির কারণে এসব সবজির সরবরাহক কমেছে বলেই দাম কিছুটা বেড়েছে। অথচ সাধারন ক্রেতরা বলছেন শেরপুরের বাজারে দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে সমাজের নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষজন।
শনিবার সকালে শেরপুর উপজেলার ফুলবাড়ী বাজার, সকাল বাজার, রেজিস্ট্রি অফিস বাজার, শেরুয়া বটতলা বাজার এবং গাড়িদহ বাজার ঘুরে দেখা যায় সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও বিক্রি হচ্ছে উচ্চ দামে। সেই সঙ্গে পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, আদা, রসুনের চড়া দাম মূল্যবৃদ্ধি সূচকে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। শীতের প্রধান সবজি ফুলকপি এবং বাঁধাকপি কৃষকেরা বাজারে তুলতে শুরু করেছে। ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা। সরকারি নির্ধারিত ৩৬ টাকা মূল্যে আলু বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও সেটি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি। দেশি আলু (পাকড়ি) বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি। কোন কোন বাজারে আলু ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। ৩০ টাকা কেজির মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকায়। বেগুনের দাম এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে ছিলো ৪৫-৫০ টাকা কেজি। করলার দাম ২০ টাকা প্রতি কেজিতে বৃদ্ধি পেয়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুখি কচু ১০ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৮০টাকা কেজি। ঢেঁড়স ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা, তরী ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা পটল ৫০ টাকা পেঁপে ৪০ টাকা লাউ প্রতি ২০/৫০ টাকা, পেপে ৪০ টাকা, লাউ প্রতিপিস ৫০ টাকা, পিয়াজ ৮০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি, আদা ২৪০টাকা, রসুন ২৪০ টাকা, কাঠ কচু ৪০/৫০টাকা, মিষ্টি লাউ ৫০ টাকা কেজি, পালং শাক ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। গত সপ্তাহ থেকে এ সপ্তাহে প্রতিটি সবজির দাম ১৫ থেকে ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সবজির এমন দাম বৃদ্ধিতে তাদের মধ্যে অস্বস্তি বিরাস করছে। বাজার করতে আসা রমজান বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার করতে এসে দেখি সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আমরা গরীব মানুষ। দাম বেশি হওয়ায় অল্প পরিমাণে সবজি কিনেছি। তাতে পুরো সপ্তাহ যাবেনা। এতেই আমার বাজারে টাকা শেষ। মাছ মাংসের দোকানের দিকে যাওয়া তো আমাদের মত গরিব মানুষের জন্য দুঃস্বপ্ন। সাধারণ মানুষ এসব সবজি কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। তারা বলছেন হাট বাজারের সঠিক মনিটরিং এর অভাবে বগুড়ার কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এসব সবজির দাম বাড়িয়ে ব্যবসা করছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, আমাদের বাজার মনিটরিং কমিটি নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছেন। লাগাতার বৃষ্টির কারণে হয়তো সবজির দাম কিছু বৃদ্ধি পেয়েছে তবে বৃষ্টি ছাড়লে ঠিক হয়ে যাবে।