Dr. Sharmin sultana Mam Birthday Towfiq Sultan scaled

ডাঃ শারমিন সুলতানার জন্মদিনে লেখক-পাঠক -শিক্ষার্থী ও ভক্তদের উচ্ছাস — তৌফিক সুলতান

print news

গত ৬ ডিসেম্বর ডাঃ শারমিন সুলতান চৌধুরীর ছিলো জন্মদিন ।
ডাঃ শারমিন সুলতান চৌধুরী ম্যাম শুধু ডাক্তারই নন, তিনি একজন প্রকৃত যশা সাহিত্যিকও বটে। ম্যাম কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে লেখক, পাঠক, ভক্ত, শিশু বহির্বিভাগের ডাক্তার, স্টাফ ও তাঁর কোমলমতি প্রিয় শিক্ষার্থীরা। সবাইকে সাথে নিয়ে উপভোগ করা হয় জন্মদিনের উৎসব। মূহুর্তেই দৃশ্যমান হয় ম্যামের প্রতি সাধারণ মানুষের ভালোবাসা। শিক্ষার্থীরা তাদের অত্যান্ত শ্রদ্ধাভাজ ও প্রিয় শিক্ষিকার জন্ম উৎসব পালন করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে। প্রিয় ম্যাম আপনি যে আমাদের অদেখা পথের কাঁটা উপড়ে ফেলার উপায় দেখানো এক অন্যতম গুরুজন। যার শিক্ষার আলোয় বিশুদ্ধতায় শুদ্ধতা পায় আমাদের মন। একজন মহান ও আদর্শ শিক্ষকের মধ্যে কয়েকটি বিশেষ গুণ অবশ্যই থাকা উচিত – সততা, ভালোবাসা, স্নেহ, মায়া, মমতা, করুণা, অদম্য ইচ্ছাশক্তি ,জ্ঞান ও প্রজ্ঞা যা সবই আপনার মধ্যে আমরা পাই। আপনার হাতে গড়ে উঠে হাজারো ভবিষ্যত চিকিৎসক। জন্মদিনের এই বিশেষ ক্ষণে আপনাকে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। পূর্ণ হোক আপনার জীবনের অপূর্ণ যত ইচ্ছা। নক্ষত্রের মতো জ্বলে উঠুক সফলতার যত হাতছানি। শুভ জন্মদিন। আপনি চিকিৎসক হিসেবে যেমন দক্ষ লেখিকা হিসেবেও সমাদৃত আপনার লেখনীতে রয়েছে চিন্তাশীল মানুষ কে জাগ্রত করার শক্তি, বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা, হাস্য-রস মনোমুগ্ধকর সব স্মৃতি আপনার এবং আপনার প্রিয়জনদের মঙ্গল কামনা করছি।
আপনার হাত ধরেই আমাদের ভবিষ্যত গড়ে উঠবে। ভালো থাকবেন আজীবন এ আমাদের প্রত্যাশা। জীবনের বাঁকে পূর্ণ হবে আপনার সকল আশা। আপনার প্রতি আমাদের অনেক দোয়া ও অগাধ ভালোবাসা।
ভালো মানুষগুলেকে মনে রাখে সবাই এটাই তার উল্লেখ যোগ্য প্রমাণ। ডাঃ শারমিন সুলতান চৌধুরী মানুষের সেবায় নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি লেখালেখি করেও পাঠকদের মনে স্থান নিয়েছেন।সন্ধ্যায় ডাঃ শারমিন সুলতান চৌধুরী ম্যাম এর নিজ বাড়িতে জন্মদিন উৎসব পালন করা হয়। সেখানে পরিবার পরিজন ও প্রিয় শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলো।
সবাইকে কে চমকে দিয়ে তিনি ঘোষণা করেন। তার মায়ের পুরাতন ডায়েরি থেকে খাবারের রেসিপি গুলোকে ম্যাম তাঁর কন্যা একসাথে করে একটি বই প্রকাশ করে যা শুনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ম্যামের গর্ভধারিনী মা। বইটির নাম “সেকালের স্বাদ” লেখক – সুলতানা মমতাজ বেগম যিনি রান্না নিয়ে গবেষণা করতে পছন্দ করতেন।
রান্না নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে তিনি পড়েছিলেন রান্না বিষয়ক ব্রিটিশ আমলের অনেক ইংরেজি বই। এবং সেগুলো থেকে নিজের মতো তৈরি করে নিয়েছেন অনেক রেসিপি যা একটা ডায়েরি তে লিপিবদ্ধ করে রেখেছিলেন তিনি।
সেই ডায়েরি, ১৯৬৯ সালের। যা লেখিকা সুলতানা মমতাজ বেগম কোনো একদিন তাঁর নাতনিকে দিয়েছিলেন। সেটা উনার মনেও নেই। একদিন বুকশেল্ফে বই গুছিয়ে নিতে গিয়ে লেখিকার নাতনি জয়িতা খুঁজে পেলো ডায়েরিটা। অতঃপর জয়িতা তার মা ডাঃ শারমিন সুলতানা চৌধুরীকে দেখালো।
আর তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিলেন সে ডায়েরির নানা অংশ। সুলতানা মমতাজ বেগমের হাতে লেখা সব রেসিপি। ডাঃ শারমিন সুলতান চৌধুরী জানান, অনেক কিছুর নাম আমি শুনিনি। বা এভাবে রাঁধতে হয় জানি না। তারপর ভাবলাম,এটা বই হিসেবে থাকলে স্মৃতি টুকু কত সুন্দর ভাবে ধরে রাখা যাবে!
আম্মারা রান্নাঘরে থেকে আমাদের জন্য সারাজীবন রান্না করে যান। আমরা তৃপ্তি পাই। আম্মারা আমাদের খাইয়ে পান আনন্দ।
তাই আম্মার জন্য একটু আনন্দের ক্ষণ এনে দেবার প্রয়াস সেকালের স্বাদ।
স্বাদ সেকালের হলেও,ভালোবাসা সব সময়ের।
প্রত্যেকটা গল্পের বই এর পেছনে একটা গল্প থাকে। এটা রান্নার বই। তবে এর পেছনের গল্পটাও অনেক সুন্দর। বইটির প্রি-অর্ডার চলছে। তারপর গান আড্ডা রাতের খাবারের মাধ্যমে জন্মদিন উৎসবের সমাপ্তি হয় রাত ১১ টা ৩০ মিনিটে। এখানে উপস্থিত ছিলেন ডাক্তার, ব্যাংকার, এমপি মহোদয় ও গণ্য-মাণ্য ব্যক্তিবর্গ।

ডাঃ শারমিন সুলতানা চৌধুরী পেশায় একজন চিকিৎসক। তিন ভাই বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তাঁর বাবা ডঃ মোহাম্মদ শফি চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন, বর্তমানে অবসরে আছেন এবং মা সুলতানা মমতাজ বেগম। তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এস এস সি, এইচ এস সির গন্ডি পেরিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এম বি বি এস পাশ করেন। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত আছেন। এক কন্যা জয়িতাকে নিয়েই অবসর কাটে। নেশা লেখালিখি। ২০১৭ সালে প্রথম লেখালিখিতে হাতেখড়ি। ২০১৮ তে পেন্সিল, জানালাসহ বিভিন্ন সংকলনে লেখা প্রকাশিত হবার পর ২০১৯ এ অমর একুশে বইমেলাতে তাম্রলিপি প্রকাশনী থেকে আসে প্রথম একক উপন্যাস সমান্তরাল বৃত্ত। এরপর ২০২০ বইমেলায় প্রেম অভিন্ন সংজ্ঞা ভিন্ন সাদরে সমাদৃত হয়। ২০২১ ছিল থ্রিলার জগতে পা ফেলার সময়। ‘প্রতিবিম্ব’ প্রকাশিত হয় ২০২১ এর বইমেলাতে এবং ২০২১ এর সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত দ্বিতীয় জীবন পাঠকের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নেয়।

তিনি গত ৬ ডিসেম্বর তার জন্মদিন অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলেন,
এবার আমার জন্মদিন উদযাপনের অনুষ্ঠানের একটা থিম ছিল।
আমি সেটা লাইভে এসেও বলেছি সেদিন।
আমার জীবনের খারাপ সময়গুলোতে যে মানুষ গুলো আমার পাশে ছিল,আমি তাঁদের সেদিন ডেকেছিলাম। সে আমার পরিবার হোক,বা বন্ধুরা।
পাশে থাকা মানে অনেকদিন হাত আঁকড়ে ধরে থাকা নয়। আমার ভেঙে পড়া মোমেন্টে কেউ যদি একটা লাইন ও বলে থাকে,যেটা ঠিক সে মুহূর্তে আমাকে আবার সাহস দিয়েছে,আমি সে মানুষটার কাছেও কৃতজ্ঞ।
একারণেই কেক শাহরুখের। কারণ,এই মানুষ আমার জন্যে অনুপ্রেরণা। আমি জানি সবাই ই হাসবেন। কিন্তু যাকে ভালোবাসি,তাঁকে আড়ালে রেখে অসম্মান আমি করি না।
আমাকে অনেকেই জিজ্ঞেস করে,আমাকে সবাই এত কেন ভালোবাসে?
আল্লাহর রহমত এটা।
আরেকটা কারণ,কারণ,আমি মানুষকে ভালোবাসি।
মন থেকে ভালোবাসি। বিনিময়ে সে আমাকে কী দেবে,সেটা ভেবে না। সেটা সে মানুষকে জানাবে কী না,সেটা লক্ষ্য করেও না। এটা আমার মন থেকে আসে। রিফ্লেক্স action…
তারপরেও আমি মানি,আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ। আল্লাহর অনেক রহমত আমার উপরে। আমি জানি মানুষ আমাকে কতটা ভালোবাসে।
এবার আরেকটা বড় কাজ ছিল। আম্মাকে সেই মুহূর্ত গুলো উপহার দেওয়া।
উনি কখনোই ভাবেননি,তার ডায়েরিটা বই হয়ে যাবে!
কিছু কিছু ক্ষণ জীবনের সবচেয়ে বেশি মনে রাখার মতো হয়ে যায়। আমি নিজেও ভাবিনি আম্মা খুশিতে কাঁদবেন। আমি ভেবেছি,তিনি বকা দিয়ে বলবেন,ফনা সুল! তুই মানুষরে ধরি ধরি হাডস,আর ইন গরদ্দে না?
আমি এরকম ই।
বয়স ৪৪। জয়ি মিয়া বলে আরো বেশি হবে।
সে আমাকে খুব ই ভালোবাসে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠলে,রাতে ঘুমের মাঝে,মাঝে মাঝে হুটহাট করেই আদর দেয়। আমি ভাবি,আবদার আসছে। সে বলে,তোমার একমাত্র কিউট মেয়ের তুমি আম্মা! বয়স হচ্ছে,বুড়া হচ্ছো,সামনে লাঠি লাগবে। এজন্য আদর।
ইয়ে,এখানে আদর টা দেখব নাকি খোঁচা,বুঝতে পারি না।
যারা মানুষের এরকম স্বার্থহীন ভালোবাসা পায় না,আমার তাদের জন্য মায়া হয়। জীবনটা জুড়ে এরা আমাকে কে দিলো টাই,খুঁজে যায়। আমি কী করেছি সেটা ভাবে না।
প্রত্যেকটা উইশ ই কাল আমার জন্য করা দোয়া ছিল।
ভালোবাসা কুড়িয়ে নেওয়া যায় না,ভালোবাসা পেতে হলে শুধু ভালোবাসতে হয়।
অসীম কৃতজ্ঞতা সবার প্রতি। দোয়া থাকবে।
আমার আর আমার পরিবারের জন্যে দোয়া করবেন।
আলহামদুলিল্লাহ সব কিছুর জন্যে।
একজন ভেঙে যাওয়া মানুষকে আপনাদের দোয়া আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসছে। সবাই এমন পায় না।
মানুষের নিস্বার্থ ভালোবাসা দূর্লভতম নিরাকার বস্তু।যেটা আমি পাই।
আলহামদুলিল্লাহ।

তৌফিক সুলতান, শিক্ষার্থী – ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
[email protected]
01746501454

 

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়
সংবাদটি শেয়ার করুন....

Check Also

valentines day 20240214011614

আজ ভালোবাসার দিন

ঢাকা প্রতিনিধি : বাতাসে যেন মিষ্টি এক আনন্দের আমেজ। শীতের রুক্ষতাকে বিদায় জানিয়ে ফুলে ফুলে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *