mtfe barisal 1

বরিশালে এমটিএফই প্রতারণা :কোটি কোটি টাকা আত্মসাত : ছয়জনের নামে মামলা: তদন্তে পিবিআই

print news

বরিশাল অফিস : অনলাইন ভিত্তিক এমটিএফই’র এর প্রতারণার শিকার হয়েছে হাজার হাজার গ্রাহক। গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে এমটিএফই । সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বরিশাল অতিরিক্ত চীফ মেট্রােপলিটন মেজিস্ট্রেট আমলী আদালতে প্রতারণার শিকার নি:স্ব পশ্চিম কাউনিয়ার মো: জালাল খানের কন্যা মোসা: খাদিজা আক্তার বাদী হয়ে অর্থ লুটে নেওয়া ৬ সিইও’র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি বিচারিক আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার আসামীরা হলো : এমটিএফই এর সেবা অনলাইনের এমডি নোমান আহম্মেদ হাওলাদার, পিতা : মো: আলাউদ্দিন হাওলাদার, সাং : দক্ষিণ দিয়াসুর, থানা : গৌরনদী ,এ্যাড মিজানুর রহমান (নান্নু), পিতা: আব্দুর রাজ্জাক খান, সাং: বান্দ রোড, বরিশাল। সাবিনা ইয়াসমিন, স্বামী : এ্যাড. মিজানুর রহমান (নান্নু), সাং: বান্দ রোড, বরিশাল।  মো: মিলন হোসেন বাদশা, পিতা : মো: আবুল হোসেন সরদার, সাং সরদার বাড়ি, ৫ নং ওয়ার্ড, উজিরপুর , মোসা: মাহামুদা বেগম, স্বামী : মিলন হোসেন বাদশা , মো: অলি, পিতা মো: মিলন হোসেন বাদশা, সাং সরদার বাড়ি, ৫ নং ওয়ার্ড, উজিরপুর।
বাদী মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেন- আসামীরা জালিয়াতি ও প্রতারণা চক্রের সদস্য। যারা অনলাইন ভিত্তিক এ্যাপস এর মাধ্যমে বহু টাকা আত্মসাত করেছেন। লোভনীয় অফারে উক্ত এমএলএম কোম্পানীর আদলে পরিচালিত এমটিএফই এ্যাপস এর মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা ইনভেস্ট নিয়ে আসছিলেন। শুরুতে গ্রাহকদের আস্তা তৈরি করতে গ্রাহকদের এ্যাকাউন্টে নামে মাত্র টাকা প্রদান করেন। এতে গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জন করে মোটা অঙ্কের টাকা ইনভেস্ট করতে আগ্রহী করে তোলে। এরইধারাবাহিকতায় গ্রাহকদের বহু টাকা ওই এ্যাপসের মাধ্যমে তাদের নিজেদের এ্যাকাউন্টে নিয়ে নেন। উক্ত এ্যাপসটি অনলাইনে পরিচালিত হয়। যা দীঘদিন যাবত গুগল সার্ভার কর্তৃক নিখুতভাবে পরিচালিত হয়। উক্ত এ্যাপসের তথ্য ১৪ আগস্টে সম্পূর্ন বিলুপ্ত হলে গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ্যাকাউন্ট এ্যাপসের তথ্য না পেয়ে গ্রাহকরা বরিশালের সিএন্ডবি রোডস্থ সেবা অনলাইন অফিসে যোগাযোগ করতে গেলে সেখানকার দায়িত্বশীলারা গ্রাহকদের বলেন, আপনাদের টাকা বিদেশিরা নিয়ে গেছে। এরপর বার বার গ্রাহকরা ওই অফিসে যোগাযোগ করলে গ্রাহকদের টাকা দেই, দিচ্ছি বলে কালক্ষেপন করতে থাকে। পরবর্তীতে গ্রাহকদের টাকা নেওয়ার কথাও অস্বীকার করে বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি, হুমকি-ধামকি দেয়। পূণরায় টাকা চাইতে আসলে গ্রাহকদের খুন জখমের হুমকি প্রদান করে। বর্তমানে আসামীরা তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়ে আছে।
মামলার বাদী জানান, এ ঘটনায় অন্য গ্রাহকরা বাদী হয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এদিকে, বাদী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন, এ্যাড. মো: দেলোয়ার হোসেন মুন্সি, এ্যাড. মোকলেচুর রহমান বাচ্চু, এ্যাড. মো: জাহাঙ্গীর হোসেন, এ্যাড. মো: সোহেল রানা শান্ত, এ্যাড. মো: বাবুল হোসেন, এ্যাড. মো: রাকিবুল ইসলাম।

mt7

এদিকে,নোমান,মামুন,রিয়াজসহ এ গ্রুপটি প্রায় ১৫ কোটি টাকা নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে।এর মধ্য নোমান ও রিয়াজ দুবাই চলে গেছে। বাকিরা দেশের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সুত্র জানায়, এক কোটি টাকা ইনভেস্ট করলে সিইও হতো এমটিএফইতে।বরিশালে ১২ জন সিইও হয়েছিল। এরা সবাই দিয়েছে গাঢাকা।সম্প্রতি নোমানের সেবা অনলাইন নামক প্রতিষ্ঠানে পুলিশ তল্লাশী করে।

mt6

হাফেজ মাসুম বিল্লা , রুবেল , ইলিয়াস, রেজিউল ইসলাম রিপন     গ্রুপ পরিচালনা করেছেন। ঐ গ্রুপে  মেম্বার ছিলো। এমটিএফই সম্পর্কে বিভিন্ন মেসেজ  বিনিয়োগে  লাভ  অনেক  ইত্যাদি  ইত্যাদি  বলে  মানুষকে বিনিয়োগ করাতেন। অনেক মানুষ  প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন।

mt 2

অনলাইন অ্যাপ এমটিএফই-এর মাধ্যমে বরিশালের অসংখ্য মানুষের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রতারিত হয়েছেন শত শত মানুষ। তবে সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার আশঙ্কায় আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কিংবা এ নিয়ে তথ্য দিতে চাচ্ছেন না অনেকেই।

সম্প্রতি এমটিএফই-তে বিনিয়োগকারী একজন তার ফেসবুকে এ নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। যেখানে তিনি ৩ জন সিইওর কথা উল্লেখ করে বলেন । এই সেই এমটিএফই এর বরিশালের প্রতারক সিইও শরিফ বিল্লাহ এবং আরিফ বিল্লাহ, আরো আছে রিয়াজ যাদের মাধ্যমে বরিশাল শহরের বিভিন্ন ফ্যামিলির বিভিন্ন লোকজন সর্বস্বান্ত হয়েছে এবং অনেক লোকজন লোক লজ্জার ভয়ে কথা বলতে পারতেছেনা।

তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো:-

20230825 091101

এই সেই এমটিএফইএর বরিশালের প্রতারক সিইও শরিফ বিল্লাহ এবং আরিফ বিল্লাহ, আরো আছে রিয়াজ যাদের মাধ্যমে বরিশাল শহরের বিভিন্ন ফ্যামিলির বিভিন্ন লোকজন সর্বস্বান্ত হয়েছে এবং অনেক লোকজন লোক লজ্জার ভয়ে কথা বলতে পারতেছে না এবং শরিফ বিল্লাহ আরিফ বিল্লাহ তারা বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে তাদেরকে বিভিন্ন ভয় বিধি দেখাইতেছে এবং অনেকেরে বিভিন্ন প্রলোভোন দেখাইতেছে যে আপনারা কোন আইনের আশ্রয় নিবেন না আমরা আপনাদের টাকা দিয়ে দেবো এবং শরিফ বিল্লাহ আরিফ বিল্লাহএর রুপাতলি হাউজিং এর ভিতরে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল আছে বরিশাল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল সেই স্কুলের বিভিন্ন অভিভাবকদেরকে তারা এই এমটি এফ ই এর ভিতরে ঢুকাইয়া তাদেরকে সর্বস্বান্ত করেছে তারা কিছু বললে তাদেরকে বিভিন্ন প্রলোভোন দেখায় ওই জায়গার কিছু শিক্ষক তারা বলে যে তারা ঢাকাতে ট্রিটমেন্টেরজন্য গেছে আসবে কিন্তু সবকিছু মিথ্যা তাদের শীঘ্রই আইনের আওতায় আনা হোক এবং এই ভিডিওটি লাইক শেয়ার দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হইল।

হিজলা উপজেলার তিন শতাধিক মানুষকে বোকা বানিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এমটিএফই নামক হায়হায় কোম্পানিটি। এমনকি অনলাইন ট্রেডিংয়ের নামে বাংলাদেশিদের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে টাকা তোলার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পরই আত্মগোপনে চলে যান তৌফিকুর রহমান ওরফে তৌফিক চেয়ারম্যান।
বর্তমানে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি খোলা থাকলেও তিনি কল রিসিভ করছেন না। হিজলার হরিনাথপুর বাজার সংলগ্ন বাড়িতে তার ভাই-বোন এবং বাবা-মা থাকলেও স্ত্রী-সন্তানরা থাকেন ঢাকার সাভারে।

তৌফিকুর রহমানের ভাই বাদল সিকদারের দাবি, সবশেষ গত রোববার গ্রামের বাড়িতে দেখা হয়েছে চেয়ারম্যান তৌফিকুরের সাথে। এরপর থেকেই তিনি নিরুদ্দেশ।

‘হিজলা উপজেলায় সর্বপ্রথম হরিনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান তৌফিকুর রহমান এমটিএফই একাউন্ট চালু করেন। তিনি উপজেলার লোকেদেরকে নিজেদের ডলার আয়ের বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করেন। একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যান হওয়ায় এলাকার মানুষ খুব সহজেই তাকে বিশ্বাস করে তার মাধ্যমে একাউন্ট খুলতে শুরু করে। তার মাধ্যমে তিনশ’র বেশি একাউন্ট খোলা হয়েছে। সবমিলে ৪-৫ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছেন উপজেলাবাসী।

তৌফিকুর রহমান একটি হোয়ার্সঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে এমটিএফই’র প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতো। ওই গ্রুপের এডমিন ছিলেন তিনি। তবে তার এই কাজে সহযোগিতা করতেন তারই ভাই বাদল সিকদার ও ভাগিনা সাইফুল ইসলাম। তৌফিক বিনিয়োগকারীদের সাথে কথা বলে তাদের দুজনকে পাঠানো হতো একাউন্ড খোলার জন্য।

কেউ জমানো টাকা, কেউবা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আবার কেউ জমি বন্ধক রেখে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন এই অনলাইন মাধ্যমে। বর্তমানে এরা সবাই নিঃস্ব।

এমটিএফই প্রতারণায় ভুক্তভোগীদের তথ্য চায় সিআইডি :

অনলাইন বা ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ডলার, শেয়ার বা ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনাবেচার কানাডা ও দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ গ্রুপ ইনকরপোরেটেডে (এমটিএফই) প্রতারিত হওয়া গ্রাহকদের কাছ থেকে তথ্য সহায়তা চেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান।

সিআইডি কর্মকর্তা জানান, এমটিএফই অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রাহকদের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানানো হয় এবং লেনদেন পরিচালনা করা হয়। নিজেদের ছায়া প্ল্যাটফর্মে ট্রেড করার সুযোগ দিয়ে এই অ্যাপ সম্প্রতি আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

বাংলাদেশে কোনো অফিস না থাকলেও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এর কার্যক্রম শুরু হয়। ঘরে বসে সহজে আয়ের পথ বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ইউটিউবে ব্যাপক-প্রচারণা চালায়। বিভিন্ন ভিডিও ও বিজ্ঞাপন দেখে ভুক্তভোগীরা আগ্রহী হন। সবচেয়ে বেশি আগ্রহী হন একজন আরেকজনকে দেখে, এক্ষেত্রে রেফারেল বা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কাজ করে। এমটিএফইও এমএলএম পদ্ধতিতে কাজ করেছে। বেশি লাভের আশায় লাখ লাখ মানুষ অ্যাপসটিতে বিনিয়োগ করেন।

সিআইডি জানায়, কিছু মানুষ অবশ্য লাভের অংশ পেয়েছে। তবে চূড়ান্ত বিচারে বিনিয়োগের সব অর্থই খোয়াতে হয় গ্রাহকদের। ঢাকাসহ বরিশাল, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজশাহী, কুমিল্লা এবং সাতক্ষীরাতে প্রতারণা সবচেয়ে বেশি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে সারাদেশে চার থেকে পাঁচ লাখ গ্রাহক এমটিএফইর মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা খুইয়েছেন।

সিআইডি সাইবার ইন্টেলিজেন্স টিম এ ব্যাপারে গভীর নজরদারি চালাচ্ছে। ভুক্তভোগী ও প্রতারিত গ্রাহকদের এ প্রতারক চক্র সম্পর্কে তথ্য দিয়ে বা অভিযোগ জানাতে সিআইডি সাইবার সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

যোগাযোগের ঠিকানা:

ফেসবুক পেজ: https://www.facebook.com/cpccidbdpolice/

ইমেইল: [email protected]

24/7 কন্টাক্ট নম্বর: +8801320010148 অথবা জরুরি জাতীয় সেবা 999.

সংবাদটি শেয়ার করুন....

Check Also

Collage

মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড’র ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন দুই ডিজিএম

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক : মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড আন্তর্জাতিক মানের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। স্বাস্থ্য সেবামূলক যন্ত্রপাতি সরবরাহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *