রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের পানছড়ি ঝর্ণা পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। ভ্যাপসা গরমে শীতল পানিতে গা ভিজিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠছেন ভ্রমণপিপাসুরা।প্রায় ১০০ ফুট ওপর থেকে আছড়ে পড়ছে ঝর্ণার পানি। আশপাশের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ঝর্ণার রিনরিন শব্দ কানে আসে। শুধু কি ঝর্ণার শব্দ! আশপাশে পাখির কলকাকলী আর বুনো প্রাণীর শব্দও মনকে প্রফুল্ল করে তোলে।কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের পানছড়ি মারমা পাড়ায় এই ঝর্ণার অবস্থান। ঝর্ণার ওপরে মৈদং পাহাড়ে এই ঝর্ণার উৎপত্তিস্থল।
স্থানীয় গ্রামবাসী জানান, বছরের সারা সময় ধরে এই ঝর্ণায় পানি থাকে। ঝর্ণার আশপাশে ছোট ছোট বেশ কয়েকটি ঝর্ণার দেখা মেলে মূল ঝর্ণার আগে। রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণাকেন্দ্র অতিক্রম করে পায়ে হেঁটে ঘণ্টাখানেক পথ পাড়ি দিয়ে এই ঝর্ণায় পৌঁছানো যায়। নারানগিরি পাড়া, জগনাছড়ি পাহাড়, পানছড়ি মারমা পাড়া, ফলের বাগান ও পাহাড়ের নান্দনিক সৌন্দর্য অবলোকন করে পানছড়ি ঝর্ণার দেখা মিলবে। পর্যটকদের কাছে এখনো সুপরিচিত না হলেও মাঝে মাঝে অনেকেই আসেন এই ঝর্ণার সৌন্দর্য উপভোগ করতে।পানছড়ি পাড়ার কারবারী মাইনু মারমা ও মারমা পাড়ার অংক্যজাই মারমা বলেন, ঝর্ণাটি দেখতে বেশ সুন্দর হলেও আসার পথটুকু বেশ নাজুক। অবকাঠামোগত সুবিধা বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই।ঝর্ণা পরিদর্শনে আসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান, উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা রুহুল আমিন, সমাজসেবা কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন ও উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা নিপু চন্দ্র দাশ জানান, রাইখালী এলাকার দুর্গম এই জায়গায় এত সুন্দর ঝর্ণা আছে না এলে বুঝতেই পারতেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, প্রায় দুই-তিন কিলোমিটার পাহাড়ি ও ঝিরিপথ ট্র্যাকিং করে এসেছি। এত দুর্গম জায়গায় এত সুন্দর একটি ঝর্ণা না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। আসার সময় বড় বড় পাথরের গাঁ বেয়ে পানি পড়ছে, পাহাড়ি অরণ্যে ঢাকা পথ সবকিছুই অসাধারণ। অনিন্দ্যসুন্দর এ ঝর্র্ণার রূপদর্শনে আমি সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। পর্যটকদের আগমন বাড়াতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের বিষয়ে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।