বাংলাদেশ রাজশাহী

 রাজশাহীতে ১০ বছর ধরে মিথ্যা মামলার ঘানি টানছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মনজুর রহমান

1708165259.mazur
print news

রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীর একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা টানা ১০ বছর ধরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের এক মামলার ঘানি টানছেন। মামলার হাজিরা দিতে দিতে তিনি এখন ক্লান্ত।এই বীর মুক্তিযোদ্ধার দাবি, মামলাটি মিথ্যা। জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় শত্রুতার জের ধরে একই গ্রামের এক মাদককারবারি তাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন। তিনি এই মামলা থেকে পরিত্রাণ চান। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। এই বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম মো. মনজুর রহমান (৭০)। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাসুদেবপুরে। তিনি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের গোদাগাড়ী উপজেলা শাখার সাবেক সহকারী কমান্ডার (ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক)।মামলা থেকে মুক্তির আকুতি জানিয়ে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মনজুর রহমান।লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার জন্য ২০১৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি বাসে চড়ে ঢাকা যাচ্ছিলেন। বাসে তার পেছন দিকে বসেছিলেন একই গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। তার কাছে একটি বড় ট্রাভেল ব্যাগ ছিল। বাসটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে সাদা পোশাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পাঁচজন সদস্য গাড়িটির গতিরোধ করেন। এরপর একজন লুঙ্গি পরিহিত ব্যক্তি গাড়ির ভেতরে ঢোকেন।ওই ব্যক্তি ছিলেন দালাল। তিনি সরাসরি মনজুর রহমানের সামনে এগিয়ে এসে ট্রাভেল ব্যাগ খুলে তন্ন তন্ন করে খোঁজেন। কিন্তু ব্যাগে কাগজপত্র ছাড়া কিছুই পাননি। এরপর বাসের পেছন দিকে বসে থাকা রবিউলের ব্যাগ তল্লাশি করলে ফেনসিডিল পাওয়া যায়। এ সময় রবিউলকে গাড়ির ভেতর থেকে নিচে নামানো হয়। পরে ওই দালাল বীর মুক্তিযোদ্ধা মনজুর রহমানকেও বাস থেকে নামিয়ে আনেন।বীর মুক্তিযোদ্ধা মনজুর রহমান বলেন, ‘এই ফেনসিডিলের ব্যাপারে আমি কিছুই জানতাম না। কিন্তু রবিউলের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ থাকার কারণে সে আমাকেও ফাঁসিয়ে দেয়। সে বলে, ওই ফেনসিডিলের সঙ্গে নাকি আমারও মালিকানা আছে।

মনজুর রহমান আরও জানান, সেদিন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিদর্শক পদের একজন কর্মকর্তা তার প্যান্টের পকেট থেকে ১ লাখ ২৪ হাজার ৭০০ টাকা ছিনিয়ে নেন। তাকে মামলায় না জড়ানোর অনুরোধ করলে তারা তার কাছে ৪ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিতে পারার কারণে তাকে মামলায় জড়ানো হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া টাকাও ফেরত পাননি। ২০২০ সালে আসামি রবিউল ইসলাম মারা গেছেন। তবে তার বিরুদ্ধে থাকা মামলাটি এখনও চলমান রয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে এই দশ বছরে হাজিরা দিতে দিতে তিনি এখন নিস্ব হয়ে পড়েছেন। মামলার কারণে বৃদ্ধ বয়সে তিনি সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হন। তিনি এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চান।

মনজুর রহমান বলেন, ‘একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য অস্ত্র তুলে নিয়ে আমি ৭ নম্বর সেক্টর কমান্ডার কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান ও ৪ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করি জীবন বাজি রেখে। সেই দেশে ১০ বছর ধরে আমাকেই মিথ্যা মামলার ঘানি টানতে হচ্ছে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েও এই মিথ্যা মামলা থাকার কারণে লজ্জায় আমার আত্মহত্যা করার ইচ্ছে করে। কিন্তু পরিবারের কথা ভেবে তা পারি না।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়
সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *