চট্টগ্রাম বাংলাদেশ

পেকুয়ায় জাকের হত্যা মামলায় বাঁশখালীর জেলে আসামী

design
print news

পেকুয়া প্রতিনিধি : কক্সবাজারের পেকুয়ায় নলকূপরে টাকা নিয়ে মারামারিতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হবার ২ দিন পর জাকের হোসেন মিয়া (৪০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। জানাযায়, গত শুক্রবার সকাল ৮ টার দিকে চমেক হাসাপাতালে মারা যান তিনি। প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকার লোকজন জানান, বুধবার রাত ১২ টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের হরিনাফাঁড়ি জয়নালের বাড়ীর সামনে একদল দুুবৃৃত্ত একই এলাকার জাকের হোসেনের উপর হামলা চালায়। এতে সে রক্তাক্ত জখম হলে প্রথমে তাকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। নিহত জাকের হোসেন মিয়া হরিনাফাঁড়ি এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে। এদিকে জাকের হোসেন মিয়া জখম হওয়ার পরদিনই তার স্ত্রী নাহারু বেগম বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে চট্টগ্রাম বাঁশখালী উপজেলার চনুয়া এলাকার জেলে আবুল বশর প্রকাশ বশির মিস্ত্রিকে ১০নং সহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়। জেলে জেঠাতো ভাই শফিউল আলম বলেন, আবুল বশর প্রকাশ বশির মিস্ত্রি দীর্ঘদিন ধরে আমার ট্রলারে স্টাফ হিসাবে কর্মরত আছে। গত ০২ তারিখ,শুক্রবার সকালে রাজাখালী আরবশাহ্ বাজার থেকে ট্রলারের জন্য মফিছ সওদাগরে দোকান থেকে মেশিনারি পার্টস,বাবুল সওদাগরের দোকান থেকে ডিজেল, মোজাম্মেল সওদাগরের দোকান থেকে মুদির বাজার, এনাম সওদাগরের দোকান থেকে চাউলের বস্তা,এবং নুর কাদের সওদাগরে দোকান থেকে সমস্ত স্টাফ চা নাস্তা খেয়ে বাজারগুলি নিয়ে মাছ ধরার জন্য সাগরের উদ্দেশ্যে ট্রলার রওনা হয়। বর্তমান সাগরে মাছ ধরার অবস্থায় আছে আমার ট্রলারটি। তিনি আরো জানান, উনি প্রতিনিয়ত আমার ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। এইরকম একটা দিনমজুর অসহায় লোককে এক থানা হইতে অন্য থানায় কিভাবে হত্যা মামলার আসামি করা হয়।
আমরা চনুয়াবাসী জানতে চাই। উক্ত ষড়যন্ত্র মূলক মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে আমি ও চনুয়াবাসী তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বশিরের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন, ওখানে আয় ইনকাম না হওয়া খালী হতে দেশী ফেরেন। এখন পেটের দায়ে ও পরিবার খরচ মেটাতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সাগরে মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে সাগরে রয়েছে। এমন্ত অবস্থায় কিভাবে আমার স্বামী বাঁশখালীর বাসিন্দার হয়েও ভিন্ন জেলার পেকুয়া উপজেলার একটা হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে । আমি উক্ত ষড়যন্ত্র মূলক মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে আমি তীব্র নিন্দা ও সমস্ত পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন সুস্থ তদন্ত মাধ্যমে আমার স্বামীকে উক্ত মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়া হোক। এদিকে মামলার বাদী নাহারু বেগম গতকাল শুক্রবার রাতে তার ঘরেই সাংবাদিকদের জানান, তার কাছ থেকে শাহাদাত নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি একটি এজহারে স্বাক্ষর নিয়ে সেখানে বাঁশখালী উপজেলার চনুয়া এলাকার আবুল বশর, পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাজ্জাদ হোসেন, সিকদার পাড়ার সাঈদী ও হৃদয় সহ ৯ জন নিরীহ ব্যক্তিকে আসামি করেছে বলে শুনেছি। তারা আমার মামলার আসামি নয়। আমি অশিক্ষিত মানুষ পড়তে জানিনা। এ সুবাদে তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য মামলাটি করেছে। আমার আসামি কেবল ৫ জন। তৎমধ্যে ১ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার আসামি হলো একই এলাকার শকির আলমের ছেলে আবদুল জলিল।
নিহতের স্ত্রী নাহারু বেগম আরো জানান, গত মাসখানেক আগে চট্টগ্রামের পটিয়ায় নলকুপ স্থাপন কাজে যায় হরিনাফাঁড়ি এলাকার জনৈক মনির উদ্দিন সহ ৫জন ব্যক্তি। তাঁরা সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা বাজার পাড়া এলাকার টিপু সোলতানের টিউবওয়েল স্থাপন কাজে শ্রমিকের কাজ করতেন। বকেয়া বেতনের টাকার লেনদেন নিয়ে তাদের সাথে টিপুর বাকবিতন্ডা হয়। এর জেরে টিপুর টিউবওয়েল স্থাপনের কিছু যন্ত্রপাতি জব্দ করে রাখে মনির, সরফরাজ, পুতু, তারেক, মানিক ও মিরাজ। নিহত জাকের টিপুর পক্ষ হয়ে মনির গংদের সাথে বিরোধে জড়ান। এর জেরে তাকে কুপিয়ে আহত করা হয় বলে দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওমর হায়দার মামলা রেকর্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “নিরীহ ব্যক্তিদের আসামি করার বিষয়ে স্বয়ং বাদী অভিযোগ আমিও শুনেছি। মূলত বাদীর লিখিত এজাহারের ভিত্তিতে পুলিশ মামলা রেকর্ড করেছে। এটা পুলিশ বাদী হলে একটা কথা ছিল। এখন বাদীই বলছেন মাঝখানে একটি চক্র তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য নিরীহ ব্যক্তিদের আসামি করেছেন। আমরা তদন্তপূর্বক নিরপরাধ ব্যক্তিদের অবশ্যই মামলা থেকে অব্যহতি দেব।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়
সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *