বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ


ববি প্রতিনিধি : মিথ্যা সংবাদ প্রচার ও ভয়ভীতি দেখিয়ে এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সাবেক শিক্ষার্থী শফিকুর রহমান ওরফে শফিক মুন্সির বিরুদ্ধে ৷ ২৩ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক নারী শিক্ষার্থী প্রক্টর বরাবর এমন অভিযোগ করেন৷অভিযোগপত্রের কপি ও সফিক মুন্সির সাথে ওই নারী শিক্ষার্থীর হোয়াটসঅ্যাপে ও ক্ষুদে বার্তার স্ক্রিনশট রয়েছে।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, পড়াশোনা দুই বছর আগে শেষ হলেও শফিকুর রহমান (শফিক মুন্সি) দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে হলে অবস্থান করছেন। তিনি বিভিন্নভাবে অস্ত্র দেখিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হুমকি দেন, অবৈধভাবে বিভিন্ন কাজ করতে বলেন, তার কথা না শুনলে তিনি মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে সম্মানহানি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্বারা হেনস্তা করার হুমকি দেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের। তিনি সকলের কাছে দাবি করেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার কথায় চলে এবং তার কারণেই সকলে এই অবস্থানে আছেন।
আরও উল্লেখ করা হয়, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করার কারণে ইতিমধ্যে ২ বার তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করে ওই আপু। ২ বারই তিনি মুচলেকা প্রদান করেন। আর কিছুদিন যাবত তিনি আমাকেও মিথ্যা সংবাদ প্রচার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর ভয় দেখিয়ে তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন এর জন্য চাপ দিচ্ছেন। আমি আমার নিজ নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
শফিকুর রহমান ওরফে শফিক মুন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি আঞ্চলিক একটি পত্রিকার বিশেষ প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পড়াশোনা শেষ হলেও শফিক মুন্সি শেরে বাংলা হলের ৪০২১ নং রুম দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের একাংশের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে এমন কর্মকাণ্ডে চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে তার সাথে শলাপরামর্শ করতেও দেখা যায়।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী জানান, অভিযোগ দেওয়ার পর থেকেই অভিযোগ প্রত্যাহারে শফিক মুন্সি, বিভিন্ন শিক্ষক, রাজনীতিবীদসহ বিভিন্ন মহল থেকে চাপ প্রয়োগ করে আসছে৷ আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে,আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি৷ আমি এর বিচার চাই ৷
এরপরই ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আবদুল কাইউম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) একাডেমিক কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ব্যাতীত বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থী কিংবা বহিরাগতদের মাদক সেবন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা, র্যাগিং ও ইভটিজিংসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ বলে গণ্য হবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তটিতে ।
অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আবদুল কাইউম বলেন, বিষয়টি আমি জানি। তবে এটা ছোটখাটো বিষয়৷ এটা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের পথে। বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত শফিক মুন্সি বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। প্রথম বিষয়টি হল অভিযোগে বলা হয়েছে আমি জোর করে সিট দখল করে থাকি। আমার বক্তব্য হলো যার সিট দখল করে থাকি সে অভিযোগ করবে কিন্তু এ অভিযোগ করার এখতিয়ার তার নাই। দ্বিতীয় সংবাদ প্রচারের ভয়ভীতি দেখাই। এখানে যদি কাউকে ভয়ভীতি দেখাই সে অভিযোগ দিতে পারে। অন্যকারও অভিযোগ দেওয়ার এখতিয়ার আছে কি?
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news