ঢাকা প্রতিনিধি : বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি শ্রম অধিদফতরের জ্যেষ্ঠতা তালিকা অনুযায়ী ৬ জন উপপরিচালককে পদোন্নতির সুপারিশ করেছিল। কিন্তু সুপারিশ উপেক্ষা করে জ্যেষ্ঠতা তালিকা অনুযায়ী ১১ জনকে ডিঙিয়ে তালিকার ১৬ নম্বরে থাকা একজন উপপরিচালকসহ ৫ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পদোন্নতির সুপারিশ থাকার পরও বাদ পড়েছেন দুজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। শ্রম মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রীর ভাতিজি সিন্ডিকেটের প্রভাবে পদোন্নতি কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে বিধিলঙ্ঘন করে এ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শ্রম অধিদফতরে পরিচালকের মোট মঞ্জুরিকৃত ৯টি পদের মধ্যে ৬টিই দীর্ঘদিন ধরে শূন্য ছিল। শূন্য পদগুলো পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় গত বছরের ১২ জুন উপপরিচালকদের একটি জ্যেষ্ঠতা তালিকা প্রণয়ন করে। বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির সভাপতি ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব মো. এহছানে এলাহীর সভাপতিত্বে ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় শ্রম অধিদফতরের প্রস্তাব অনুসারে জ্যেষ্ঠতা তালিকার প্রথম ৬ জন উপরিচালককে পরিচালক পদে পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়। সুপারিশে বলা হয়, উপপরিচালক পদে ৫ বছরের চাকরির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় ও বিগত পাঁচ বছরের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে বিরূপ কোনো মন্তব্য না থাকায় এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা বা ফৌজদারি ও দুদকের মামলা অভিযোগ তদন্তাধীন না থাকায় তাদের পদোন্নতির সুপারিশ করা হলো। সুপারিশ করা কর্মকর্তারা হলেন- উপপরিচালক মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন, মো. আবু আশরীফ মাহমুদ, শামীমা সুলতানা, মো. বেল্লাল হোসেন, মো. মনিরুল আলম ও মিসেস আফিফা বেগম।
কিন্তু গত ১৭ সেপ্টেম্বর পদোন্নতি কমিটির সভার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সুপারিশপ্রাপ্ত দুই উপপরিচালক শামীমা সুলতানা বারী ও মো. মনিরুল আলমকে বাদ দিয়ে এবং জ্যেষ্ঠতা তালিকার ১৬ নম্বরে থাকা উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমানের নাম অন্তর্ভুক্ত করে ৫ জনের পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতি বিধিমালা-২০১১ লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন। তৎকালীন প্রতিমন্ত্রীর ভাতিজি শামীমা সুলতানা সিন্ডিকেটের সদস্যরা আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে একজনকে অবৈধভাবে পদোন্নতির ব্যবস্থা করে দেন বলে জানান মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের সঙ্গে প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহীনুর, হাকিম, প্রটোকল কর্মকর্তা সাইফুল, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা কেফায়েত ও একজন নারী সহকারী সচিব জড়িত বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পরিচালক পদোন্নতি পাওয়া মিজানুর রহমান ২০০৫ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৯ বছর খুলনায় দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় ঘুষ গ্রহণসহ অনিয়মের অভিযোগে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, এ সিন্ডিকেট জ্যেষ্ঠতার তালিকায় নিচের দিকে থাকা আরও কয়েকজন উপপরিচালকের কাছ থেকে পদোন্নতি দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিলেও পদোন্নতি হয়নি। কলকারখানা অধিদফতর ও শ্রম অধিদফতরের কোন কর্মকর্তা কোন জেলায় বদলি হবেন, কোন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হবে এবং এর জন্য কী পরিমাণ টাকা লাগবেÑএসব বিষয় চূড়ান্ত করতেন সচিবের দফতরের একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তাসহ সিন্ডিকেটের সদস্যরা। তারা শ্রম অধিদফতরের ১৩ জন সহকারী পরিচালককে উপপরিচালক পদে পদোন্নতির পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাছ সুবিধা নিয়েছেন।
বিভাগীয় পদোন্নতি ও নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশ উপেক্ষা করে এবং জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদোন্নতির বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) সাইফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে সিনিয়রদের ডিঙিয়ে জুনিয়র কর্মকর্তাকে কীভাবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে তা তার জানা নেই। এর বাইরে আর কোনো কথা বলতে চান না জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, তিনি অসুস্থ এবং ছুটিতে রয়েছেন।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত