বরিশাল বেতারে আঞ্চলিক পরিচালক কে এই ড. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ


মামুনুর রশীদ নোমানী,বরিশাল :
ফ্যাসিবাদের দোসর হিসাবে চিহ্নিত ড. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এখনো বহাল তবিয়তে।আওয়ামী রাজনীতি করার ফলে একের পর এক পদোন্নতি ও প্রাইজ পোস্টিং পেতেই থাকেন। ভাগ্যে মেলে অনেক পুরুস্কার।তিনি সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। ফ্যাসিবাদের এই দোসর ড. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ তিনি ২০১৩ সালে উপ-আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রে যোগদান করেন এবং একই কেন্দ্রে ২০১৮ সালে ভারপ্রাপ্ত আঞ্চলিক পরিচালক থেকে ২০২১ সালে পূর্ণকালীন আঞ্চলিক পরিচালকের দায়িত্ব পেয়ে ২০২৪ সালের মে মাসে সিলেট বেতার কেন্দ্রে আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে বদলী করা হয় ৬ মে।অথচ সিলেটে ২০২৪ সালের ২৬ মে যোগদান করেন। ছাত্র -জনতার বিপক্ষে জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ভুমিকা রাখেন। সংস্কৃতিপ্রিয় মানুষের প্রতিবাদের মুখে বেতার কর্তৃপক্ষ বরিশালে বদলী করেন।বরিশাল বেতার যেন হয়ে ওঠে ফ্যাসিবাদের নিরাপদ ভুমিতে।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী ক্ষমতার দাপটে ড.হারুন রংপুর বেতারে একটানা ছিলেন প্রায় ১২ বছর।রংপুরে থাকাকালীন সময়ে গনহারে অনিয়মিত শিল্পী নিয়োগ দিয়ে হয়েছিলেন সমলোচিত।প্রকৃত শিল্পীরা নিয়মিত সম্মানী পেতেন না।ফরে রংপুর বেতারে প্রচারিত অনুষ্ঠানের মান নিয়ে উঠেছিল নানান প্রশ্ন।ওখানে হারিয়েছিল বেতারের সুনাম।স্রোতারা হয়েছিল বেতার থেকে বিমুখ।রংপুর বেতারের দুর্নীতি অনিয়মের ব্যাপারে দুদক তদন্ত করে। চতুর ড. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ রংপুর বেতারে আঞ্চলিক প্রকৌশলী আবু সালেহ এর ওপর সকল দুর্নীতি ,অনিয়ম ও সরকারি অর্থ আত্মসাৎ,গাছ কাটার অভিযোগ দিয়ে তিনি কৌশলে সিলেট বেতারে বদলী হয়ে যা।দুদকসহ সকল আইনী ঝামেলায় আটকে যান আঞ্চলিক প্রকৌশলী আবু সালেহ।অথচ দুজন মিলে মিশে করেছিলেন লুটপাট।
ড. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ যেখানে গেছেন সেখানেই শিল্পীদেন সম্মানী ভাতা লুটপাট, দুর্নীতি,অনিয়ম ও সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।ড.হারুন শিল্পীদের সম্মানীর টাকা পিয়ন,গাড়িচালক,গার্ড,ও কর্মীদের নামে পরিশোধ দেকিয়ে লুট করেছেন।
আরও পড়ুন:
বরিশাল বেতারে নাট্যশিল্পী তালিকাভুক্তিতে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি
বরিশালে যোগদান করার পরেই একই নিয়মে দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং অর্থ আত্মসাতে জড়িয়ে পরেছেন।বরিশাল বেতারে নাট্যশিল্পী তালিকাভুক্তি কার্য্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। আবেদন না করেও উত্তীর্ন হওয়া।বেতারের স্টাফ, কর্মকর্তার স্ত্রীকে তালিকাভুক্ত করা। এ নিয়ে সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সমালোচনার মুখে তৃতীয় দফায় নতুন তালিকা প্রকাশ করে নিজেদের দোষ ঢাকতে চাইছে বেতার কর্তৃপক্ষ।
উপ-আঞ্চলিক পরিচালক শফিকুল ইসলাম ও সহকারী পরিচালক হাসনাইন ইমতিয়াজ সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল নাট্যশিল্পী তালিকাভুক্তির অডিশনের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করেন। আবেদনের শেষ তারিখ নির্ধারিত হয় ১০ মে। নির্ধারিত তারিখ পর্যন্ত ১৩১ জনের আবেদন পায় বরিশাল বেতার। আবেদনপত্রগুলো যাচাই-বাছাই শেষে ১২ মে বিকেলে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে। একইসঙ্গে উল্লেখ করা হয়, তালিকাক্রমের ১ থেকে ৮০ নম্বর পর্যন্ত আবেদনকারীর অডিশন ২৬ মে এবং ৮১ থেকে ১৩১ পর্যন্ত আবেদনকারীর অডিশন ২৭ মে অনুষ্ঠিত হয়।
দুই দিনের অডিশন শেষে ২৭ তারিখ সন্ধ্যায় উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ করলে দেখা যায়, আবেদনের তালিকায় নাম না থাকলেও রীণা পারভীন ও অমিতা রায় নামে দুজন রয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা আগে থেকেই বেতারে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে নিযুক্ত।
শুধু তারাই নন উত্তীর্ণ ৫৪ জনের মধ্যে ২৬ জনই বেতারে ঘোষক-ঘোষিকা ও কণ্ঠশিল্পী বিভাগে যুক্ত আছেন। এ ছাড়া তৎকালীন উপআঞ্চলিক পরিচালক রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ফারহানা ইসলাম লিনা, বেতারের কর্মচারী জাহানারা ইয়াসমিন উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এ সংক্রান্ত সংবাদ পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হলে বাংলাদেশ বেতার কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের ২৫ জুন দুই সদস্যের একটি টিম বরিশালে বেতারে তদন্ত করার জন্য প্রেরন করে।
জুলাই গনঅভ্যুল্থানের এক বছর হতে চললেও এখনো ফ্যাসিস্ট ও ফ্যাসিবাদের দোসররা বরিশাল বেতারে বহাল তবিয়তে।বরিশালে এসেই সিলেট থেকে আরেক ফ্যাসিবাদের দোসরের সাথে মিলেমিশে বাংলাদেশ বেতার বরিশালে নাট্যশিল্পী তালিকাভুক্তি কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হন। ড. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ রংপুর ও সিলেটে থাকাকালীন সময়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম করেছেন।
এদিকে বরিশাল বেতারের দীর্ঘদিনের প্রথা ভেঙ্গেরাতের অধিবেশনে ৬টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত নারী ঘোষিকার ডিউটি দিয়ে সমালোচিত হন আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ ।
রাতে তিনি নিজের অফিসেই রাত্রি যাপন করেন। বিগত দিনের ডিউটি চার্টে কোন নারী ঘোষিকার নাম ছিলনা। অথচ ড. হারুন এসেই ডিউটি চার্টে নারী ঘোষিকার ডিউটি দেন রাতের অধিবেশনে।ফ্যাসিস্ট আমলে বরিশাল বেতারের সুযোগ সুবিধা যারা পেয়েছেন তাদের তিনি আরো সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে দিয়েছেন।বেতারের সমসাময়িক নানা অনুষ্ঠানে যারা যোগ্য তাদের বাদ দিয়ে তার পছন্দের নারীদের সুযোগ দিয়ে যাচ্ছেন।তার সংগে একান্ত সান্নিধ্যে থাকাই প্রোগ্রাম পাবার একমাত্র যোগ্যতা বলে বিবেচিত বলে বেতারে এ নিয়ে তোলপাড় চলছে।তিনি হরহামেশাই স্টুডিওতে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকেন।ফলে নারী ঘোষিকাদের কেউ কেউ বিব্রতবোধ হন। এছাড়া তিনি এক নারী শিল্পীকে তার গাড়িতে করে বাসায় দিয়ে আসার খবরে সকলে বিস্মিত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে বরিশাল বেতারে আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন,আমি রংপুর বেতারে ২০১৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ছিলাম এটা সত্য। তবে অন্যান্য অভিযোগ অসত্য।
উল্লেখ্য,ড.মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ ২০২৫ সালের ২ মার্চ বরিশাল বেতারে আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।