ভাসমান বাজারে পেয়ারা হাট,বাগানগুলো এখন মৌ মৌ গন্ধে ভরপুর


ইত্তেহাদ নিউজ,ঝালকাঠি : ভাসমান বাজারের কথা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে থাইল্যান্ডের ড্যামনোয়েন সাদুয়াক অথবা ইতালির ভেনিসের বাজার। কিন্তু আমাদের দেশেও রয়েছে এম আকর্ষণীয় এবং দৃষ্টিনন্দন বাংলার ভেনিসখ্যাত ঝালকাঠির ভিমরুলী ভাসমান পেয়ারা হাট। বর্ষা এলেই দক্ষিণ জনপদে শুরু হয় পেয়ারা মৌসুম। বাগানগুলো এখন মৌ মৌ গন্ধে ভরপুর। সঙ্গে জমে উঠেছে এ ভাসমান বাজার।
দেশ বিদেশ থেকে হাজারো পর্যটক ভিড় জমাচ্ছে প্রকৃতির এ অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে। ঝালকাঠিতে ৫৬২ হেক্টর জমিতে উৎপাদিত পেয়ারা বিক্রি হবে ন্যূনতম ১০-১২ কোটি টাকায়। যা গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা প্রকাশ করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।
ঝালকাঠিতে ৫৬২ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে পেয়ারা। জেলার সদর উপজেলার কীর্ত্তিপাশা, ভিমরুলী, শতদাসকাঠি, খাজুরা, মিরাকাঠি, ডুমুরিয়া, জগদিশপুর, হিমানন্দকাঠি, কাপড়কাঠিসহ ২০টি গ্রামে প্রায় দুই শত বছর ধরে পেয়ারা চাষ হয়ে আসছে। সূচনালগ্ন থেকেই এই অঞ্চলের চাষিরা কান্দি কেটে সর্জন পদ্ধতিতে পেয়ারা চাষ করে আসছে। এই এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকার প্রধান অবলম্বন পেয়ারা। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এ বছর সাইজে কিছুটা ছোট ও ফলন কম হয়েছে।
তবে পেয়ারা দাম বেশি হওয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। বর্তমানে প্রতিমণ পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ১১শ’ টাকায়। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেয়ারা মিলছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। ভরা মৌসুম শুরু হওয়ায় কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পরেছে কচকচে কাঁচা ও পাকা পেয়ারা বাগান থেকে তুলে বাজারজাত করার কাজে। তাই প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভীমরুলীর খালে বসে ভাসমান পেয়ারা হাট।
পাইকারদের ছোট-বড় নৌকায় সরগরম হয়ে ওঠে খালপাড়। খালজুড়ে পেয়ারাভর্তি শত শত ডিঙ্গি নৌকা যেন এক একটি ভ্রাম্যমাণ দোকান। ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে ছোট ছোট নৌকা থেকেই কিনে নিচ্ছেন টাটকা পেয়ারা।
২০০ বছরের পুরনো এই হাট এখন আর শুধুই ফল বিক্রির জায়গা নয় এটি এক ধরনের জীবনের উৎসব। এই চাষিদের পেয়ারা চাষই মূলত ভাসমান হাটের প্রাণ। এ হাটকে ঘিরে প্রতি বছর দেশ-বিদেশের হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসেন। নৌকার ওপর বসে বেচাকেনার দৃশ্য, প্রকৃতির মায়ায় ঘেরা পরিবেশ সব মিলিয়ে এই হাট হয়ে উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের এক প্রাণবন্ত পর্যটন কেন্দ্র।
আধুনিক পদ্ধতিতে উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের পরামর্শ এবং পেয়ারা থেকে জেলি, জ্যাম ইত্যাদি উৎপাদনে সহায়তা করা হচ্ছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
তা ছাড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবদুল্লা আল মামুন বলেন, ঝালকাঠির পেয়ারা চাষিদের উন্নত জাতের পেয়ারা চাষে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। উন্নত জাতের পেয়ারা চাষে তাদের সহযোগিতা করা হবে।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।