অনুসন্ধানী সংবাদ

স্বাস্থ্যের ক্লার্ক কোটিপতি : ফেঁসে গেছেন দুদকের জালে

clark
print news

ঢাকা প্রতিনিধি : সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে বদলি কিংবা পদোন্নতিতে লাখ লাখ টাকার ঘুষ লেনদেন হয়— এমন ধারণা অধিকাংশ মানুষের। তবে, ঘুষ লেনদেনের দালিলিক প্রমাণ পাওয়া কঠিন। কিন্তু যেসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী এমন অপকর্মে জড়িত থাকেন তাদের কেউ কেউ নিজের অজান্তেই অনিয়মের নানা প্রমাণ রেখে যান। এমনই এক সরকারি কর্মচারীর দুর্নীতির শ্বেতপত্র দুদকের হাতে এসেছে। ব্যাংকের মাধ্যমে ঘুষের টাকা লেনদেন করে দুদকের জালে ফেঁসে গেছেন তিনি।অভিযুক্তের নাম মো. জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখার প্রধান সহকারী। জাহাঙ্গীর হোসেনের আরও একটি পরিচয় আছে। তিনি স্বাস্থ্য কর্মচারী ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম সারির নেতা। সাত বছরে শুধুমাত্র বদলি ও পদোন্নতি বাবদ নিজের ব্যক্তিগত হিসাবে (ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট) ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা লেনদেন করেছেন। যদিও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছাড়া তার অবৈধ অর্থ লেনদেনের অন্যান্য মাধ্যম ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। ঘুষের টাকা ব্যক্তিগত ঋণ হিসেবে দেখানোর ব্যর্থ চেষ্টাও করেন জাহাঙ্গীর হোসেন। শেষ পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় আসামি হয়েছেন তিনি। গত ৫ সেপ্টেম্বর দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিলকিস আক্তার বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। তার এমন অপকর্মের সঙ্গী কারা, তাদের খোঁজে এবার মাঠে নেমেছে সংস্থাটি। জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর পর্যন্ত উচ্চমান সহকারী, এরপর পদোন্নতি পেয়ে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে প্রধান সহকারী হিসেবে প্রশাসন শাখায় নিযুক্ত হন। এ সময়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি  সারা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সহকারী ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের (ইপিআই) বদলি ও পদোন্নতির নথি দেখভালের দায়িত্ব পালন করেন। এ সুযোগে তিনি রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের মহাখালী শাখায় স্যালারি ও সঞ্চয়ী হিসাবে ১৯ জন স্বাস্থ্য সহকারী ও একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্টের (ইপিআই) কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে বদলি ও পদোন্নতি বাবদ মোট ২২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা গ্রহণ এবং উত্তোলন করেন ঘুষ লেনদেন ও মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মো. জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার  বলেন, এ বিষয়ে আগে আমি দুদকে বক্তব্য জমা দিয়েছি। তবে, মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্যও নেই। অন্যদিকে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন  বলেন, দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা আইন ও বিধি অনুসরণ করেই মামলা দায়ের করেছেন। তদন্ত কাজও আইন অনুসারে চলবে।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও দুদকের নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর পর্যন্ত উচ্চমান সহকারী, এরপর পদোন্নতি পেয়ে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে প্রধান সহকারী হিসেবে প্রশাসন শাখায় নিযুক্ত হন। এ সময়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি সারা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সহকারী ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের (ইপিআই) বদলি ও পদোন্নতির নথি দেখভালের দায়িত্ব পালন করেন। এ সুযোগে তিনি রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের মহাখালী শাখায় স্যালারি ও সঞ্চয়ী হিসাবে ১৯ জন স্বাস্থ্য সহকারী ও একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্টের (ইপিআই) কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে বদলি ও পদোন্নতি বাবদ মোট ২২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা গ্রহণ এবং উত্তোলন করেন।
দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে বাড়ি মেরামত ও ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য এসব কর্মীদের কাছ থেকে ধার হিসেবে ওই টাকা গ্রহণ করেছেন বলে দাবি করেন জাহাঙ্গীর হোসেন। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে তার দাপ্তরিক সম্পর্ক ছাড়া আর কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি তিনি নগদে ওই টাকা পরিশোধ করেছেন বলে দাবি করলেও সে সংক্রান্ত কোনো রেকর্ডপত্র দেখাতে পারেননি। জাহাঙ্গীর ওই টাকা দিয়ে মিরপুরে ১৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে জমি ক্রয় করেন বলে নিশ্চিত হয়েছে দুদক। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে স্বাস্থ্য সহকারী, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও জেলা ইপিআই সুপারিনটেনডেন্টদের বদলি ও পদোন্নতি করিয়ে দেবেন বলে ঘুষ বাবদ ২০১১ সালের বিভিন্ন সময়ে আরও ১২ লাখ ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। তার ব্যাংক হিসাব ও বিকাশ অ্যাকাউন্ট যাচাই-বাছাই করে দুদক ২০১২ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৮২ লাখ ও ৪২ লাখ টাকাসহ মোট এক কোটি ২৪ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পায়। যে কারণে আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়
সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *